গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুরে ২ হাসপাতালকে ১১ লাখ টাকা জরিমানা
গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সেবা জেনারেল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালায় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানকালে আদালত সিটি মেডিকেল হাসপাতালকে সাড়ে ৭ লাখ এবং সেবা জেনারেল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন।
সোমবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়র আলমের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযান দলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালের যুগ্মসচিব (হাসপাতাল) উম্মে সালমা তানজিয়া ও গাজীপুর র্যাব-১ কোনাবাড়ী ক্যাম্পের কমান্ডার আবদুল্লাহ আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।
দুপুরে ভ্রমামান আদালত এলাকার সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরে পার্শ্বর্তী সেবা জেনারেল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করেন। এসম অভিযান দলের সদস্যরা হাসপাতালে প্যাথলজিকাল ল্যাব, অপারেশন থিয়েটার, ফার্মেসী প্রভৃতি পরিদর্শন করেন।
এসময় নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ ইত্যাদি অভিযোগে সিটি মেডিকেল হাসপাতালকে সাড়ে ৭ লাখ এবং সেবা জেনারেল হসপিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে সাড়ে ৩ লাখ টাকার জরিমানা করেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক সারোয়ার আলম।
সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অভিযান শেষে সারোয়র আলম বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণনালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও র্যাব-১ এর সহযোগিতায় এ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এ হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারে যে সকল সার্জিক্যাল আইটেম ও ওষুধ পাওয়া গেছে যেগুলো আজ থেকে ৫-৬ বছর আগে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এটা কোনভাবেই কাঙ্খিত নয়। যে ল্যাব রয়েছে তাতে কোন রকম অনুমতি ছাড়া ব্লাড ট্রান্সমিশন করা হচ্ছে। রক্ত পরিসঞ্চালন করার লাইসেন্স নিতে হয়। লাইসেন্স তারা নেয় নি। লাইসেন্স ছাড়াই তারা কাজ শুরু করেছেন। রক্ত যখন এক জনের শরীর থেকে আরেক জনের শরীরে ট্রান্সফার করা হবে তথন অবশই ৫টি টেস্টে করতে হয়। সে টেন্টের একটি টেস্ট (বিডিআরএম) না করে রক্ত পরিসঞ্চালন করা হয়। তাছাড়া এ হাসপাতালের লাইসেন্স নেই।
যেহেতু মন্ত্রণনালয় ২৩ আগষ্ট পর্যন্ত সময় দিয়েছেন, সে কারণে হাসপাতালটিকে সিলগালা করছি না। যদি এই তারিখের মধ্যে লাইসেনেন্স পেতে বা নিতে ব্যর্থ হন, তাহলে ওই তারিখের পর এটা বন্ধ করে দেয়া হবে। আমরা চাই আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো ভাল চলুক, আমাদের রোগীরা সেবা পাক। স্বাস্থ্য সেবার নামে কেউ প্রতারণা করুক, ছিনিমিনি খেলুক এটা কোনভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।
এ সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালের যুগ্মসচিব (হাসপাতাল) উম্মে সালমা তানজিয়া বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি ট্রাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। ট্রাস্কফোর্সের কার্যক্রমের মধ্যে একটি হচ্ছে বিভিন্ন বেসরকারী স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর আছে, তাদের লাইসেন্স আছে কিনা, সেবা ঠিকমত দেয়া হচ্ছে কিনা এটা মনিটরিং করা। সে প্রেক্ষিতেই আমাদের এই অভিযান। এটা এনসিউর করার জন্য যে, আমাদের যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান চলছে সেখানে লাইনেন্স আছে কিনা, ঠিক মতো সেবা প্রদান করা হচ্ছে কিনা। সেই উদ্দেশ্যই আজকে আমরা এসেছিলাম। আমাদের উদ্দেশ্য এটা নয় কোন প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা, সিলগালা করে দেয়া। আমরা চাচ্ছি আমাদের সেবা প্রতিষ্ঠান গুলো সুষ্ঠু নিয়মে চলুক। নিয়মের মধ্যে থাকুক। সেবা নিশ্চিত করুক। যে সেবা জনগণের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে নিশ্চিত করবে।
পিডিএসও/এসএম শামীম