reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে শেখ হাসিনার অংশগ্রহণ

বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানসহ ৬ শতাধিক নীতি-নির্ধারক, চিন্তাবিদ, ব্যবসায়ীসহ সমাজের অগ্রগামী শ্রেণির প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে শুরু হয়েছে ৫৫তম মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন; যেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অংশ নিয়েছেন।

শুক্রবার দুপুরে মিউনিখের হোটেল বাইরিশার হফে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন নিরাপত্তা সম্মেলনের চেয়ারম্যান ভুলফগ্যাং ইশিংগার। এছাড়া শুক্রবার মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে ‘সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ’ এবং ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) আয়োজিত ‘হেলথ ইন ক্রাইসিস-ডব্লিউএইচও কেয়ার্স’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে গত বৃহস্পতিবার জার্মানির মিউনিখে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক ‘নাগরিক সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।

নিরাপত্তা সম্মেলনের চেয়ারম্যান ভুলফগ্যাং ইশিংগারের উদ্বোধনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের শুরু হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রীও বক্তব্য দেন। এবার নিরাপত্তা সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নিরাপত্তা হুমকি ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিয়ে দুটি সেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আলোচনার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন।

স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য অর্থায়নের নিশ্চয়তা জরুরি : ‘সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ’ এবং ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) আয়োজিত ‘হেলথ ইন ক্রাইসিস-ডব্লিউএইচও কেয়ার্স’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, ইবোলা, কলেরা, যক্ষ্মার মতো সংক্রামক রোগের মহামারি থেকে বিশ্ব এখনো মুক্ত হতে পারেনি। এটাই প্রমাণ করে যে বিশ্বের বর্তমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আরো আধুনিকায়ন ও রূপান্তর প্রয়োজন।

বিভিন্ন সময়ে দেখা গেছে, সংকটের ভয়াবহতা এবং সম্পদ ও সামর্থ্যরে অপ্রতুলতার কারণে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা সঠিক পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে। সুতরাং স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য অর্থায়নের নিশ্চয়তা খুবই জরুরি।

নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মতো কঙ্গো, নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদান, ইয়েমেনসহ বিভিন্ন দেশে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকা মানুষের পাশে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা যেভাবে দাঁড়িয়েছে, তার প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা।

এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনসহ বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্নভাবে সহযোগিতার জন্য তিনি ডব্লিউএইচও’র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও শেখ হাসিনা আলোচনায় তুলে ধরেন। শেখ হাসিনা বলেন, স্বাস্থ্যসেবায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার করে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। যক্ষ্মা ও কুষ্ঠরোগ নির্মূলে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় সফলতা অর্জন করেছে।

তিনি বলেন, গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে সাড়ে ১৮ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক করে দেওয়া হয়েছে। ইউনিয়ন হেলথকেয়ার ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে গ্রামীণ ও কমিউনিটি পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এসব ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে ৩০ ধরনের ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে।

সম্মেলনে অংশগ্রহণের মাঝে ২০১৭ সালের নোবেলবিজয়ী সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ নিউক্লিয়ার উইপনস-আইসিএএনের নির্বাহী পরিচালক বিয়াট্রিস ফিন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রসিকিউটর ফাতোও বেনসুদা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।

এছাড়া সিমেন্স এজির প্রেসিডেন্ট ও সিইও জোয়ে কাইজার এবং ভেরিডোস জিএমবিএইচের প্রধান নির্বাহী হ্যান্স উল্ফগাং কুনজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। ভেরিডোস জিএমবিএইচ বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট বাস্তবায়ন করছে।

এই সফরে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ খাতে বড় বিনিয়োগের প্রস্তাবকারী সিমেন্সের সঙ্গে জয়েন্ট ডেভেলপমেন্ট চুক্তি হতে পারে বলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রেসিডেন্ট বোর্জ ব্রেন্ডি এবং জিগসর সিইও জারেড কোহেনের দেওয়া যৌথ নৈশভোজেও প্রধানমন্ত্রীর অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। শনিবার ‘ক্লাইমেট চেইঞ্জ অ্যাজ এ সিকিউরিটি থ্রেট’ শীর্ষক একটি প্যানেল আলোচনায় যোগ দেবেন শেখ হাসিনা।

৬ দিনের এই সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে একটি প্রতিরক্ষা প্রদর্শনীতেও যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। সফর শেষে ২০ ফেব্রুয়ারি তার ঢাকা ফেরার কথা রয়েছে। টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর এটাই শেখ হাসিনার প্রথম বিদেশ সফর।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মিউনিখ,শেখ হাসিনা,মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন,প্রধানমন্ত্রী
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close