সম্পাদকীয়

  ০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

চারপাশে প্রতারক, আপনি সাবধান তো!

রাজধানীতে যন্ত্রণার যেন শেষ নেই। রাস্তায় যন্ত্রণা, বাজারে বিড়ম্বনা, শব্দ ও পরিবেশ দূষণের অত্যাচার—এ নিয়েই বেঁচে আছে একসময়ের প্রাচ্যের ভেনাস হিসেবে পরিচিত আমাদের ঢাকা। এতসব যন্ত্রণার বৃত্তে আবার প্রতারকদের প্রতারণা যুক্ত হয়ে পেয়েছে নতুন মাত্রা।

পত্রিকার ভাষ্য মতে, প্রতারণার মাত্রা যেন আগের যেকোনো সময়কে অতিক্রম করে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে। অন্যান্য ক্ষেত্রে দায় সরকারের ওপর চাপিয়ে দিয়ে পার পাওয়া গেলেও এ ক্ষেত্রে তার কোনো সুযোগ নেই। এখানে দুটি পক্ষ দ্বিপক্ষীয়ভাবে কাজটি সমাধা করে। প্রতারক পক্ষ কাজ শেষে চলে যাওয়ার পর প্রতারিত ব্যক্তি বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। তখন তার যেন আর কিছুই করার থাকে না।

প্রকৃত অর্থে লোভ মানুষকে এই পথে অনেকটা টেনে নামায়। প্রতারক নানামুখী টোপ গেঁথে মানুষকে পথভ্রষ্ট করে তাদের পাতা ফাঁদে পড়তে বাধ্য করে। যারা ফাঁদে পড়েন, তাদের অসচেতনতাই তাদের এই পথে ধাবিত করে। সুতরাং এ ক্ষেত্রে লোভ সংকবরণ ও সচেতনতা বৃদ্ধিই পারে প্রতারকের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে।

প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, সরকারি চাকরি দেওয়া, কম দামে নিলামের পণ্য কিনতে সহায়তা, কম খরচে বিদেশে পাঠানোসহ নানা প্রলোভনের ফাঁদ পেতে নগরীর সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্র। বেকারের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রতারকের সংখ্যাও। এমনকি পুলিশ-র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাম ব্যবহার করেও চলছে প্রতারণা। বিশেষ করে চাকরিপ্রত্যাশীরা কর্মসংস্থানের আশায় প্রতারকদের নানা টোপ সহজেই গিলছেন।

র‌্যাবের তথ্য মতে, প্রতারকরা মোবাইল ব্যাংকিংসেবা বিকাশের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ ও সরকারি কর্মচারীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে তারা কখনো বিকাশ হেড অফিসের, কখনো সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে থাকে। গত বৃহস্পতিবার রাতে র‌্যাব-৪-এর একটি দল কাফরুল থানার সেনপাড়ার পর্বতা আদর্শ রোডের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করে এবং তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত আটটি মোবাইল সেট ও ২৪টি সিম জব্দ করে।

চক্রটি দেশের বিভিন্ন স্থানের সাধারণ বিকাশ এজেন্টদের কাছ থেকে লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করে। পরে ভুয়া নাম-ঠিকানা দিয়ে নিবন্ধিত সিমকার্ড ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সহজ-সরল সাধারণ মানুষের কাছে নিজেদের বিকাশ হেড অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ফোন করে কৌশলে তাদের বিকাশ পিন কোড জেনে নেয়। স্মার্টফোনে বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়।

তথ্য মতে, এ ধরনের প্রতারণা এখন ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। এর হাত থেকে রক্ষা পেতে সর্বাগ্রে প্রয়োজন নিজেকে সংযত রাখা এবং কোনো ধরনের প্রলোভনে না পড়া। পাশাপাশি সরকারেরও দায়িত্ব রয়েছে। এ ক্ষেত্রে জনগণকে সচেতন করাই তাদের প্রধান কাজ। আর এজন্য প্রয়োজন ব্যাপক প্রচার। জনগণের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে একটি স্লোগান আপনার চারপাশে প্রতারক, আপনি সাবধান তো!

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সাবধান,প্রতারক,সম্পাদকীয়
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close