মো. ফরিদ উদ্দিন, লামা (বান্দরবান)

  ২৫ মার্চ, ২০২৪

লামায় অনুমোদন ছাড়াই গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি, দুর্ঘটনার শঙ্কা

ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

বান্দরবান লামায় অগ্নি নিরাপত্তা ছাড়াই অবাধে চলছে গ্যাসের (এলপিজি) সিলিন্ডার বিক্রি। এসব সিলিন্ডার গ্রামীণ জনপদের মানুষ ব্যবহার করছে। কোনো ধরনের অনুমোদন না থাকলেও লামা পৌরসভাসহ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের হাট-বাজার ও রাস্তার পাশের দোকানে বিক্রি হচ্ছে এসব গ্যাস সিলিন্ডার। রোদে এসব গ্যাস সিলিন্ডার রাস্তার পাশে অরক্ষিত অবস্থায় ফেলে রাখায় যেকোনো সময় বিস্ফোরণ ও প্রাণহানির শঙ্কা করছে উপজেলা ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, বিস্ফোরক অধিদপ্তরের নীতিমালা বাস্তবায়নের জন্য তদারকি সেল আছে। দেশের বেশ কয়েকটি গ্রুপ অব কোম্পানি আবাসিক খাতে ব্যবহারের জন্য গ্যাস সিলিন্ডার তৈরি এবং বাজারজাত করছে। আর এ নীতিমালা ভঙ্গ করে এসব সিলিন্ডার এখন যেখানে-সেখানে বিক্রি হচ্ছে। বিস্ফোরক অধিদপ্তর গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির জন্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে বিক্রি ও বিপণন লাইসেন্স প্রদান করলেও সাব-ডিলারের নামে এসব প্রতিষ্ঠান নিত্যপণ্যের মতো গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, লামা উপজেলার অধিকাংশ এলপিজি সিলিন্ডারের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে, স্থানীয় বাসিন্দা খগেশ চন্দ্র, মো. ইউচুপ, আরমান, তপন কুমার বলেন, মেয়াদ শেষ হযেছে বলায় গালমন্দ শুনতে হচ্ছে। কারণ এসব ব্যবসায়ী ক্ষমতাসীন দলের লোকজন বলে জানান তিনি।

গত পাঁচ বছরে এ উপজেলায় এলপিজি সিলিন্ডারের ব্যবহার বেড়েছে কয়েকগুণ। এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নেই অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র এবং অগ্নিনিরোধক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে প্রতিকারের কোনো ব্যবস্থা নেই বলেও জানা যায়।


  • গত পাঁচ বছরে লামায় এলপিজি সিলিন্ডারের ব্যবহার বেড়েছে কয়েকগুণ
  • সড়কের পাশে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করা বিপজ্জনক

সরেজমিনে আরো দেখা যায়, চায়ের দোকান, মুদি, ক্রোকারিজ ও কসমেটিকস দোকান মালিকরা পর্যন্ত খোলামেলা অবস্থায় গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি ও ব্যবহার করে আসছেন। বিশেষ করে বসুন্ধরা, যমুনা, নাভানা, পেট্রোম্যাক্স, ওমেরা, বিএম গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি করছেন তারা। এছাড়া ওইসব দোকানে ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডার রাখার নিয়ম থাকলেও অধিকাংশ দোকানেরই তা নেই।

লামা বাজারের স্থানীয় খুচরা ব্যবসায়ী অপু বলেন, লামা ডিলাররা বিভিন্ন কোম্পানির বসুন্ধরা, যমুনা, নাভানা, পেট্রোম্যাক্স, সেনা, ওমারা, বিএম গ্যাসের (এলপিজি) সিলিন্ডার তাদের কাছে বিক্রি করে। তাদের থেকে কিনে কাস্টমারদের কাছে বিক্রি করেন তারা।

লামা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্মকর্তা সাফায়েত হোসেন জানান, সড়কের পাশে সাজিয়ে রেখে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করা খুব বিপজ্জনক। এছাড়া যত্রতত্র দাহ্য পদার্থ বিক্রির কারণে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডসহ প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। তারা প্রত্যেক দোকানিকে নিয়মনীতি মেনে ফায়ার লাইসেন্স করে দোকান পরিচালনার তাগিদ দেওয়াসহ নিয়মিত তদারকি করছেন।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, বান্দরবানের সহকারী পরিচালক পূর্ণচন্দ্র মুৎসুদ্দী বলেন, দ্রুত অবৈধ দোকানিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিস্ফোরক পরিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিস্ফোরক পরিদর্শক দিনমনি শর্মা বলেন, জনবল সংকটের কারণে উপজেলা পর্যায়ে অনিয়ন্ত্রিত গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি তদারকি করা যাচ্ছে না।

পিডিএস/জেডকে

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বান্দরবান,লামা,গ্যাস সিলিন্ডার,বিস্ফোরণ,শঙ্কা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close