reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৮ মার্চ, ২০২৪

তথ্য প্রাপ্তির আবেদন করতে গিয়ে সাংবাদিক কারাগারে

তদন্তের নির্দেশ তথ্য কমিশনের

ছবি : সংগৃহীত

শেরপুরের নকলা উপজেলার সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানা তথ্য প্রাপ্তির আবেদন করতে গিয়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে গেছেন। অসদাচরণের অভিযোগ তুলে এসিল্যান্ড মো. শিহাবুল আরিফের ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।

ঘটনার ব্যাপারে ওই সাংবাদিকের স্ত্রী বন্যা আক্তার বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) শেরপুর কারাগারে স্বামীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে জানান, জাইকার কয়েকটি প্রকল্পের ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ের তথ্য চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে সম্প্রতি ইউএনও কার্যালয়ে আবেদন করেছিলেন রানা। এসব প্রকল্পের তথ্য চাওয়ায় রানার ওপর ক্ষুব্ধ হয় উপজেলা প্রশাসন।

গত মঙ্গলবার রানা তার ছেলে শাহরিয়ার জাহান মাহিনকে (১৫) সঙ্গে নিয়ে এডিপি প্রকল্পের কম্পিউটার ও ল্যাপটপ ক্রয়সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে ইউএনও কার্যালয়ে আরেকটি আবেদন জমা দিতে যান। আবেদনটি অফিসের সিএ শীলা ইএনওর লিখিত সম্মতি ছাড়া গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। শীলা রানাকে ইউএনও না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন। কিন্তু অনেক্ষণ অপেক্ষা করার পর রানা বিষয়টি জেলা প্রশাসককে মোবাইল ফোনে জানান। এতে ইউএনও রানার প্রতি ক্ষিপ্ত হন। এরই জের ধরে রানার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে সাজা দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে নকলা ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে ওই সাংবাদিক তথ্য চাওয়ার নামে সব সরকারি-বেসরকারি অফিসের ক্যাম্পাসে ঢুকে অসদাচরণ করেন। নারী কর্মচারীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। বাধ্য হয়েই প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়েছে।

এ ঘটনায় বাংলাদেশ মফস্‌সল সাংবাদিক ফোরামের (বিএমএসএফ) কেন্দ্রীয় সভাপতি আহমেদ আবু জাফর তীব্র নিন্দা জানিয়ে শফিউজ্জামানের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান। সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে বৃহস্পতিবার সংগঠনটির উপপ্রচার সম্পাদক মো. রইছ উদ্দিন স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, এ ঘটনার মাধ্যমে অবাধ তথ্যপ্রবাহ ও সরকারের স্বচ্ছ এবং জবাবদিহি প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। সরকারের আইন অনুযায়ী, তথ্য চাওয়াকে তারা (প্রশাসন) অপরাধ হিসেবে গণ্য করে আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও তথ্যের প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করার শামিল।

তথ্য চাওয়াকে কেন্দ্র করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে একজন সাংবাদিককে সাজা দেওয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই কাম্য নয় বলে জানিয়েছেন শেরপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আদিল মাহমুদ। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) শেরপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. শওকত আলী বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাংবাদিক শফিউজ্জামানকে ছয় মাসের সাজা দেওয়ার ঘটনা সাংবাদিকদের জন্য অশনিসংকেত এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপরও হুমকিস্বরূপ।

তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করার পরও সাংবাদিককে তথ্য না দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়ার বিষয়টি অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছে তথ্য কমিশন। গতকাল সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তথ্য কমিশনার শহীদুল আলমকে আইন অনুযায়ী অনুসন্ধান কার্যক্রম সম্পন্ন করে প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close