সিলেট প্রতিনিধি

  ১৭ মে, ২০২৪

বিভাগে ৩৩ নেতা-কর্মী বহিষ্কার, জেলায়  বহিষ্কার ১৩

সিলেটে বহিষ্কারের হুমকি মাথায় নিয়েই ভোটে বিএনপির তৃণমূল নেতারা

সতর্কতা, শোকজ কিংবা বহিষ্কারাদেশ। কোনো নির্দেশনাই কাজে আসছে না। বহিষ্কারের হুমকি মাথায় নিয়েই উপজেলা নির্বাচনের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন সিলেট বিএনপির তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তারা নির্বাচনী প্রচারের মাঠ দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন। দলীয় সিদ্ধান্ত না মানায় অস্বস্তিতে আছে সিলেট বিএনপি।

সিলেট বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণে এর প্রভাব বিএনপিতে পড়বে না। যারাই দলীয় সিদ্ধান্তকে অমান্য করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন তারা কেউই মনে-প্রাণে বিএনপিকে ধারণ করেন না।

জেলা বিএনপি সূত্রে জানা যায়, দলের কেন্দ্রীয় নিষেধাজ্ঞা উপক্ষো করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় এই পর্যন্ত সিলেট বিভাগে বিএনপির ৩৩ নেতানেত্রীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর সিলেট জেলাতে বহিষ্কার করা হয়েছে ১৩ জন নেতা-কর্মীকে। উপজেলা নির্বাচন কেন্দ্র করে বেশ হার্ডলাইনে রয়েছে সিলেট বিএনপি। এমনকি বহিষ্কার হওয়া নেতানেত্রীদের পক্ষে বিএনপির কোনো সদস্য নির্বাচনী মাঠে থাকলেও তার বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থার নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।

সিলেটে সর্বশেষ গত বুধবার বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শেবু আক্তার মনিকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পদ পদবী থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে বালাগঞ্জে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন।

মনি ছাড়া বহিষ্কৃতরা হলেনÑ জৈন্তাপুর সাবেক ছাত্রদল নেতা ছাদ উদ্দিন ছাদ্দাম, জেলা মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক পলিনা রহমান, জেলা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ শাহ আলম স্বপন, বিশ^নাথ উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী গৌছ খান, যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সেবুল মিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী বিশ^নাথ উপজেলার খাজাঞ্চি ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রব, বিশ^নাথ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মোহাম্মদ কাওছার খান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী বিশ^নাথ উপজেলার বিএনপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক স্বপ্না বেগম।

বহিষ্কার হওয়া নেতারা বলছেন, দলের সিদ্ধান্তকে তারা সম্মান জানান। দল নির্বাচনে যাচ্ছে না। এইক্ষেত্রে দলের কোনো সদস্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে বহিষ্কার হওয়াটাই স্বাভাবিক। সেটি জেনেই সদস্যরা নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। তবে তারা বিএনপি ছাড়বেন না। সদ্য দল থেকে বহিষ্কার হওয়া সিলেট জেলা মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক পলিনা রহমান বলেন, গত মেয়াদেও তিনি এই পদে জনগণের ভালোবাসায় নির্বাচিত হয়েছেন। এবারও উপজেলাবাসীর আবদারের পরিপ্রেক্ষিতে একই পদে নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছেন। বিএনপির আদর্শিক রাজনীতির সঙ্গে তিনি মনেপ্রাণে জড়িত।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী আজ শুক্রবার (১৭ মে) বিকেলে প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, দলের নির্দেশার বিষয় নিয়ে আমরা বিভিন্ন উপজেলায় যাচ্ছি। নির্বাচন কেনো বয়কট করা হয়েছে এই বিষয়ে প্রত্যেক উপজেলায় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সভা করা হচ্ছে। জনগণের কাছে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। যারা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন তাদের ব্যাপারে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। তারা এখন আর দলের কোনো অংশ না।

তিনি বলেন, বহিষ্কার হওয়া প্রার্থীদের সঙ্গে সিলেট বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্তদের কোনো ধরণের ক্যাম্পেইন না করার জন্য সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। তারপরেও দু-তিনজনের ব্যাপারে অভিযোগ এসেছে। অভিযোগ গুরুতর ও প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এরই মধ্যে গোয়াইনঘাট, বিয়ানীবাজার ও বালাগঞ্জ উপজেলা থেকে অভিযোগ এসেছে। আমরা এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখবো। সঠিক ও গুরুতর হলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সিলেটে উপজেলা নির্বাচনে তৃণমূল বিএনপি
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close