হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি

  ২৪ জানুয়ারি, ২০২৪

হাতিয়ায় প্রণোদনায় নিম্নমানের বীজবাদাম, অভিযোগ

ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

নোয়াখালীর হাতিয়ায় কৃষি প্রণোদনার আওতায় নিম্নমানের ভেজাল বীজবাদাম দেওয়া হয়েছে অভিযোগ চাষিদের। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা বীজবাদাম রোপনের ১৭ দিন পরও অঙ্কুর গজায়নি। এ ছাড়া আবাদ মৌসুমের শেষ মুহূর্তে বীজ বিতরণ করায় অনেকক্ষেত্রে তা চাষির কাজেও আসছে না। এ সব নিয়ে চাষিরা সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তাদের দায়ি করেছেন।

সরেজমিনে কয়েকটি কৃষি জমি পর্যবেক্ষণ করে চাষিদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। চাষিরা জানায়, এ সব বীজবাদাম খুব নি¤œমানের এবং বিকৃত রংয়ের। সরকারি বিপুল অর্থ ব্যয় করে এমন নিম্নমানের বীজ কিনে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। এতে সরকারি অর্থের যেমন ক্ষতিসাধন হচ্ছে তেমনি কৃষকেরাও ক্ষতির কবলে পড়ছেন।

হাতিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়। প্রতি হেক্টরে ফলনের লক্ষ্যমাত্রা এক দশমিক ৩ মেট্রিকটন হারে বাদাম উৎপাদন ধরা হয় ১৬ হাজার ৯০০ মেট্রিকটন। যার বাজার মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ১৭ কোটি টাকা।

অভিযোগ পত্র সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২০২৪ মৌসুমে প্রণোদনার আওতায় এ উপজেলাতে ১৫ মেট্রিকটন চিনাবাদাম এসেছে। এরমধ্যে রং খারাপ ও নিম্নমানের হওয়ায় চরঈশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ ১ দশমিক ৫ মেট্রিকটন বাদাম ফেরত দেয়। যার সুরাহার জন্য হাতিয়া উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিএডিসি নোয়াখালী জেলার উপপরিচালক বরাবর পত্র পাঠানো হয়। যদিও বাকি ১০ ইউপি চেয়ারম্যান তা গ্রহন করে তালিকাভুক্তদের মাঝে উক্ত বাদামগুলো বন্টন করে দেয়।

বিএডিসির নোয়াখালী উপপরিচালক নুরুল আলম জানান, শীতের কারণে বীজ গজাতে বিলম্ব হতে পারে। আর চরঈশ্বর ইউনিয়নে মান ঘোষিত বীজ পরিবর্তন করে এখন ভিত্তবীজ (মূল বীজ) দেওয়া হয়েছে।


  • সরকারি বীজবাদাম কিনে রোপন করেও একটা বীজও উঠেনি, অথচ বাজার থেকে কেনা চারায় গজিয়েছে অভিযোগ চাষির।
  • এ সব বীজবাদাম খুব নিম্নমানের এবং বিকৃত রংয়ের।

উপজেলার শুন্যেরচর গ্রামের কৃষক মফিজ উদ্দিন বলেন, সরকারি বীজ বাদাম ৬ জানুয়ারীতে পেয়ে ৮ জানুয়ারী রোপন করছি। ১৭ দিন পেরিয়ে গেলেও একটা বীজও উঠেনি। আর ঘরের বাদাম দিয়ে যে ১০ কড়া (২০ শতক) জমি রোপণ করেছি সেগুলোর বীজ উঠে গেছে।একই গ্রামের কৃষক রাশেদ জানান, কৃষি তালিকাভুক্ত পাশের বাড়ির শাহজাহান থেকে সরকারি বীজবাদাম কিনে রোপন করেছিলাম। অথচ একটা বীজও উঠেনি। অথচ বাজার থেকে কেনা সেগুলোর চারা গজিয়েছে। রোপন করা বাদামের সারিগুলো খুড়িয়ে দেখি বাদাম পঁচে গেছে।

নলচিরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনছুর উল্লা শিবলী বলেন, ‘বাদাম গুলো নি¤œমানের ছিল। তাই কৃষি কর্মকর্তাসহ আমরা কৃষকদের বলে দিয়েছি আপনারা এগুলো বিক্রি করে দিয়ে ভাল বীজ কিনে নিবেন।’

হাতিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল বাছেদ সবুজ নানান, বীজগুলো বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) আমাদেরকে সরবরাহ করে। বীজবাদামগুলো পর্যবেক্ষণ করতে আরও একসপ্তাহ সময় লাগবে।

পিডিএস/এস

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নোয়াখালীর হাতিয়া,প্রণোদনায় নিম্নমানের বীজবাদাম
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close