বেনাপোল প্রতিনিধি :

  ২৩ নভেম্বর, ২০২২

সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

যশোরের বেনাপোল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে আগামী ২০২৩ সালে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে সময়মতো নতুন বই পৌঁছাবে কিনা?

অধিকাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণ বিদ্যালয়ে যেসব পুরানো বই আছে সেগুলো সংরক্ষণের চেষ্টা করছেন। অথচ ব্যতিক্রম ঐতিহ্যবাহী বেনাপোল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেখ সিরাজুল ইসলাম।

তিনি বই সংরক্ষণ না করে স্কুল গোডাউনে রাখা লক্ষাধিক টাকার সরকারি বই রাতের আধারে স্কুলের দুইজন অস্থায়ী শিক্ষক ও দুইজন কর্মচারীকে সঙ্গে নিয়ে বিক্রি করে দিয়েছেন। এর আগেও তিনি এ রকম ঘটনা ঘটিয়েছেন। এ ছাড়াও ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষক-কর্মচারীসহ অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে।

সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা যায়, গত ৬ নভেম্বর বিদ্যালয় ছুটির কিছুক্ষণ পরে প্রধান শিক্ষক পুনরায় স্কুলে ফিরে আসেন। এ সময় তার সঙ্গে স্কুলের দুইজন অস্থায়ী শিক্ষক এবং দুইজন কর্মচারী ছিল। কিছুক্ষণ পরে একটি বড় পিকআপসহ আরও কিছু লোক স্কুলে প্রবেশ করেন। প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে কর্মচারীগণ বিদ্যালয় আঙিনার সকল বিদ্যুৎ লাইট অফ করে দিয়ে গোডাউনে ঢুকে সেখানে রাখা সব বই পিকআপে তুলে দেয়। যার আনুমানিক মূল্য লক্ষাধিক টাকা।

বিষয়টি এতদিন গোপন থাকলেও বুধবার (২৩ নভেম্বর) স্কুলের জনৈক শিক্ষক ওই গোডাউনের চাবি চাইলে প্রধান শিক্ষক টালবাহানা শুরু করেন। এক পর্যায়ে উক্ত শিক্ষককে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করাসহ মারতে উদ্যোত হন। পরে অন্যান্য শিক্ষকগণ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে চাবি নিয়ে গোডাউন খুলে দেখে, সেখানে কোনো বই নেই। বিষয়টি কানাকানি হতে হতে কর্মচারীগণ চাপে পড়ে বই বিক্রির ঘটনাটি অন্যান্য শিক্ষকদের কাছে স্বীকার করে।

বিদ্যালয়ের জনৈক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ওই গোডাউনে ২০২২ সালের নতুন বই, সংযুক্ত ভোকেশনাল শাখার অনেক বই সংরক্ষিত ছিল। গত বছরও প্রধান শিক্ষক একইভাবে বই বিক্রি করে দেন। পরে শিক্ষকদের কাছে তিনি ক্ষমা চাইলে, শিক্ষকেরা এ ব্যাপারটি চেপে গিয়েছিলেন।

তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর প্রধান শিক্ষক প্রয়োজনের চেয়ে বেশি বইয়ের চাহিদা দিয়ে গোপনে বই বিক্রি করেন। এ ছাড়াও প্রধান শিক্ষক প্রতিনিয়ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং ভাষায় প্রকাশের অযোগ্য গালাগালি করেন।

বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আহসানুল কবির তুহিন বলেন, তিনি ঘটনার দিন অফিসিয়াল কাজে খুলনা ডিডি অফিসে গিয়েছিলেন। সে কারণে তিনি কিছু জানেন না। প্রধান শিক্ষকও তাকে এ বিষয়ে কিছু জানাননি।

বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আলহাজ এনামুল হক মুকুল জানান, তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না। সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। তদন্ত করে এ ব্যাপারে সত্যতা পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, বিদ্যালয়ের সরকারি বই বিক্রির কোনো আইন নেই। অভিযোগ পেলে তিনি ব্যবস্থা নেবেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নারায়ন চন্দ্র পাল জানান, একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক এভাবে বই বিক্রি করতে পারেন না। তদন্ত সাপেক্ষে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সরকারি,বই বিক্রি,প্রধান শিক্ষক
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close