মোংলায় সরকারি কালভার্ট বন্ধ করে শতাধিক পরিবারকে পানিবন্দি করার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় গ্রামবাসী। বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে মোংলা প্রেস ক্লাবের সামনে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধনে গ্রামের শত শত মানুষ অংশ নেন।

মানববন্ধনে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, মোংলা পৌরসভাধীন ১ নং ওয়ার্ড এর মাছমারা একটি ছোট গ্রাম। গ্রামটি এবং এর পাশ্র্ববর্তী এলাকা লবণাক্ততার হাত থেকে নিরাপদ রাখতে মোংলা নদীর সঙ্গে বিলের সংযোগ খালের মুখে সরকারিভাবে স্থাপিত হয়েছে স্লুইসগেট। এছাড়া মোংলাপোর্ট পৌরসভায় মিঠা পানি সরবরাহের পুকুর রক্ষা করাও স্লুইসগেট স্থাপনের বিশেষ উদ্দেশ্য, যা এই গ্রামের জমির উপরেই গড়ে উঠেছে। আর মাছমারা গ্রামের উপর দিয়ে নদীর পাড় বরাবর এলজিইডি নির্মিত রাস্তায় আছে সরকারি কালভার্ট। বর্তমানে চিংড়িঘের মালিকদের সঙ্গে যোগসাজশে অমাবস্যা-পূর্ণিমার জোয়ারে স্লুইসগেট দিয়ে নোনাপানি ঢুকানো হচ্ছে খাল ও বিলে। গ্রামের মাঝ বরাবর জমির পানি অপসারণের জন্য স্থাপিত কালভার্ট বন্ধ করে আবাসিক এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ ডকইয়ার্ড। আবার কেউ কেউ নির্মাণ করেছেন বাড়ি। ফলে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।

গ্রামের চারপাশের বিলে এখন থৈ থৈ করছে লোনা পানি! বাড়িঘর এখনই ডুবুডুবু। হুমকিতে পড়েছে পৌরসভার মিঠা পানি সরবরাহের একমাত্র পুকুরটি। কর্তৃপক্ষ দেখেও যেন দেখছে না। পানি অপসারণের নাই কোনো ব্যবস্থা। লবণাক্ততা ও জলাবদ্ধতার কারণে আবারও অনাবাদী পড়ে থাকার শঙ্কায় রয়েছে ধানচাষের জমি।

তাছাড়া বর্ষা মৌসুমে বিলের পানির উচ্চতা আরও বৃদ্ধি পায় বিধায় হুমকির মুখে পড়েছে রাস্তার ভেতরের অংশে অবস্থিত গ্রামের একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়, গীর্জা এবং পাশ্র্ববর্তী বসতবাড়ি!

লবণ পানির ভয়াবহতা রোধে মাছমারা এবং নারিকেলতলা খালের উপর স্থাপিত স্লুইসগেট দুটির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করাসহ গ্রামের রাস্তার উপর নির্মিত কালভার্টগুলো অবমুক্ত হওয়া প্রয়োজন। তা না হলে গ্রামের শিক্ষা সংস্কৃতি, পরিবেশ ও প্রতিবেশ, জীব-বৈচিত্র্য এবং জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াসহ মোংলা পোর্ট পৌরসভায় সরকারি মিঠা পানি সরবরাহের একমাত্র প্রকল্পটিও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।

স্থানীয় বিধবা শোভা হালদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন কোনো খালি জায়গা পড়ে থাকবে না। কিন্তু আমরা মাইকেল ঘোষের কারণে ধান চাষ করতে পারছি না। তিনি সরকারি কালভার্টটি বন্ধ করে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাইকেল ঘোষের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।