মো.সবুজ হোসেন, নওগাঁ

  ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

হাটের জায়গা দখলের অভিযোগেও মিলছে না প্রতিকার 

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

নওগাঁ সদর উপজেলার দুবলহাটি ইউনিয়নের গোয়ালী হাটের জায়গা অবৈধ দখলে চলে গেছে। এতে হাটে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করতে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অন্যদিকে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।

স্থানীয় তিন শতাধিক এলাকাবাসী গত ৫ সেপ্টেম্বর হাট থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা এবং সহকারী ভূমি কমিশনার সদর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো প্রদক্ষেপ নেয়া হয়নি এখন পর্যন্ত।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, হাটে অবৈধভাবে ১৩ জন ব্যক্তি ১৩টি দোকান ঘর নির্মাণ করেছেন। তারা হলেন- স্থানীয় গোয়ালী গ্রামের জাহিদুল ইসলাম, মাসুদ রানা, আমজাদ হোসেন, মেছের মন্ডল, মো. আজাদ, মো. হামিদুল, মো. আমিনুল, মো. বেলাল, মো. জাহিদ, মো. কুদ্দুস, মো. শিলু, মো. রহিম, মো. এবাদুল এবং চককালী দাস গ্রামের আনিছুর রহমান মুন্সি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গোয়ালী হাটের উন্মুক্ত জায়গা দখল করে সেখানে পাকা, আধাপাকা স্থাপনা নির্মাণ করায় হাটের জায়গা ব্যাপক সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এতে হাটে কৃষিপণ্য বিক্রি করতে আসা কৃষকরা তাদের পণ্য কেনাবেচা করতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন। প্রতিদিন ছাড়াও সপ্তাহের শনিবার ও মঙ্গলবার এখানে হাট বসে থাকে। আশপাশের প্রায় ১৫ থেকে ২০টি গ্রামের মানুষ কৃষিপণ্য ক্রয়-বিক্রয় করতে আসে এই হাটে।

হাটে সবজি বিক্রি করতে আসা হাসান আলী বলেন, হাটের উন্মুক্ত জায়গা দখল করে ১৩টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। আমাদের পানি চলাচলের ড্রেনের লাইনের ওপর বাঁশের চটা দিয়ে বসে বেচাকেনা করতে হচ্ছে অনেক কষ্ট করে। যেন দেখার কেউ নেই। মুক্তিযোদ্ধা কায়ছার আলম, আমজাদ হোসেন, লিয়াকত আলী চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, হাটে সরকারি জায়গায় কীভাবে ঘর নির্মাণ করা হয়? এটা সম্পূর্ণ অবৈধভাবে করা হয়েছে। একজনের দেখাদেখি গত কয়েক বছরে প্রায় ১৩টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এতে হাটের উনুক্ত জায়গা দখলে চলে গেছে।

গাড়িতে করে ক্রেতা- ও বিক্রেতারা হাটে ধান আনা-নেয়া করতে পারে না পারে না। এছাড়া সবজি চাষিরাও ঠিকমত বেচাকেনা করতে পারছেন না জায়গা সংকুলানের কারণে। অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। অচিরেই এগুলো অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার জন্য যথাযথ কর্কৃপক্ষের কাছে জোড় দাবি জানাচ্ছি আমরা।

অভিযুক্ত দোকানি মাসুদ রানা ও মেছের মন্ডল বলেন, ৩-৪ বছর ধরে হাটে দোকান দিয়েছি। হাট ইজারাদারকে প্রতি হাটবারে নির্দিষ্ট খাজনা দিয়ে থাকি। যদি আমাদের কারণে হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সমস্যা হয় তবে প্রশাসন থেকে নিষেধ করা হলে আমরা দোকান ঘর তুলে নেবো। তবে এ বিষয়ে অন্য দোকানিরা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

হাট ইজারাদার রইছ উদ্দিন বলেন, হাটে ১৩টি অবৈধ দোকান ঘর আছে। সব দোকান মালিক হাটবারে ঠিকমত খাজনাও দেয় না। তাদের নিষেধ করা সত্ত্বেও ঘর নির্মাণ করে যাচ্ছে। যদি এসব ঘর না থাকতো তবে আরো প্রায় ২০০ জন ক্রেতা হাটে কৃষিপণ্য বিক্রি করতে পারতেন।

বিষয়টি নিয়ে কথা হলে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রফিকুল ইসলাম বলেন, গোয়ালী হাটে বেশকিছু অবৈধ স্থাপনা (দোকানঘর) নির্মান করা হয়েছে বলে আমাদের কাছে স্থানীয়রা অভিযোগ দিয়েছেন। সার্ভেয়ার দিয়ে আমরা মাপযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। যদি অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ করা হয়ে থাকে অবশ্যই সেগুলো উচ্ছেদ করা হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নওগাঁ,সদর উপজেলা,গোয়ালী হাট,জায়গা দখল
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close