খুলনা ব্যুরো

  ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

বাবা-ছেলে হত্যায় খুলনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৭ জনের যাবজ্জীবন

ফাইল ছবি

খুলনার তেরখাদায় আলোচিত বাবা-ছেলে হত্যা মামলায় এক ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৭ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় খুলনার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নজরুল ইসলাম হাওলাদার এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আসামিরা কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন তেরখাদা ছাগলাদাহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম দ্বীন ইসলাম, মো. আবদুর রহমান, জমির শেখ, শেখ সাইফুল ইসলাম, খালিদ শেখ, এস্কেন্দার শেখ, জসিম শেখ, হোসেন শেখ, জিয়ারুল শেখ, বাহারুল শেখ, আব্বাস শেখ, অহিদুল গাজী, খাইরুল শেখ, কেরামত মল্লিক, মাহবুর শেখ, বাবু শেখ ও নুর ইসলাম শেখ। অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন আবু সাঈদ বিশ্বাস ও আয়েব শেখ।

রায় ঘোষণার আগে দুপুর সাড়ে ১১টায় প্রিজন ভ্যানে করে আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়। এ সময় তেরখাদার ছাগলাদাহ ইউনিয়ন থেকে কয়েক হাজার মানুষ আদালত চত্বরে ভিড় করেন। আদালতের নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

২০১৯ সালের ৬ আগস্ট তেরখাদা উপজেলার পহরডাঙ্গা গ্রামের পিরু শেখ ও তার ছেলে নাইমকে ঘরে ঢুকে খুন করে আসামিরা।

দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত আসামিরা সেদিন রাত ২টার সময় ঘরে সিঁদ কেটে প্রবেশ করে। এ সময় আবদুর রহমানের হুকুমে আসামি সাইফুল চাপাতি দিয়ে পিরুর মাথায় কোপ দেয়। এতে তার মাথা কেটে ঘিলু বের হয়ে যায়। অন্য আসামিরাও পিরুকে এলোপাতাড়িভাবে কোপাতে থাকে। পিরু ও তার স্ত্রীর চিৎকারে পাশের ঘর থেকে ছেলে নাইম বাবাকে রক্ষার জন্য এগিয়ে এলে তাকেও আসামিরা টেনে হ্যাঁচড়ে উঠানে নিয়ে যায়। এলোপাতাড়ি কোপায়। আসামি খালিদ শেখ ফুলকুচি দিয়ে নাইমের বুকে কোপ দেয়। আসামি হাবিবুর ও জিয়ারুল চাপাতি দিয়ে নাইমের মাথা ও ঘাড়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। ঘটনাস্থলেই নাইমের মৃত্যু হয়। এরপর আসামিরা চলে গেলে পিরু শেখকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পিরু শেখ মারা যান।

এ ঘটনায় পিরু শেখের স্ত্রী দুই দিন পর বাদী হয়ে তেরখাদা থানায় স্বামী ও সন্তান হত্যার অভিযোগে ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আহাদুুজ্জামান বলেন, আমরা চেয়েছিলাম আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা দেবে আদালত। এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব আমরা।

নিহত পিরু শেখের স্ত্রী মাহফুজা বেগম এ রায়ে খুশি নন। তিনি হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন। তিনি বলেন, ওইদিন রাতে আমার স্বামী ও সন্তান বাঁচার জন্য আসামিদের কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়ে আকুতি জানিয়েছিল। কিন্তু তারা নির্মমভাবে আমার স্বামী-সন্তানকে হত্যা করেছে। আমি হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
খুলনা,হত্যা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close