জহিরুল ইসলাম, কুয়াকাটা

  ২২ জুন, ২০২২

পদ্মা সেতু খুলে দেবে পর্যটনের নতুন দ্বার

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

আঠারো কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র সৈকতসমৃদ্ধ সাগরকন্যা কুয়াকাটায় রয়েছে নৈসর্গীক সৌন্দর্য। সারি সারি নারিকেল গাছ, ঝাউবন আর হাজার হাজার লাল কাকড়া এই সৈকতকে পর্যটকদের কাছে মোহনীয় করে তোলে। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে সৈকতের সাদা বালুর তীর থেকে বঙ্গোপসাগরে সূর্যদোয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়, যা পৃথিবীতে বিরল।

শীত মৌসুমে অসীম সৌন্দর্য ভরা সমুদ্র জলরাশি আর বর্ষা মৌসুমের উত্তাল হাওয়ায় সমুদ্রস্নান করতে ভীর করে দেশি বিদেশি হাজারো পর্যটক। এতোদিন কুয়াকাটায় যেতে পর্যটকদের প্রধান যে প্রতিবন্ধকতা ছিল তা ছিলো যোগাযোগ ব্যবস্থা। তার অবসান হতে যাচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালুর মাধ্যমে। সেতু উন্মুক্ত হলে কুয়াকাটায় পর্যটকের সংখ্যা কয়েকগুন বাড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন। কুয়াকাটাকে ঘিরে তৈরি হচ্ছে পর্যটন বিকাশের নতুন সম্ভাবনা।

স্থানীয় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, এক সময় সাগরকন্যা কুয়াকাটায় আসতে পর্যটকদের সড়ক পথে ১২টি ফেরি পার হতে হতো। পদ্মা সেতু চালুর মাধ্যমে সড়কপথের এই ভোগান্তির অবসান ঘটতে যাচ্ছে। তারা আশা করছেন ২৫ জুনের পর থেকে কুয়াকাটায় পর্যটকের ঢল নামবে। যার মধ্য দিয়ে কুয়াকাটাসহ পটুয়াখালী জেলার অর্থনীতিতে বিপ্লব ঘটবে।

পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকা থেকে কুয়াকাটা আসতে সময় কমবে তিন থেকে চার ঘণ্টা। থাকবে না ফেরিঘাটে যানজটের ভোগান্তি। পর্যটকদের আগমন বেড়ে গেলে আয় রোজগার বাড়বে সাগরপাড়ের ব্যবসায়ীদের।

কুয়াকাটা ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কে এম বাচ্চু প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, আমরা ইতোমধ্যে পর্যটকদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। আশা করি আগের চেয়ে পর্যটকের সংখ্যা অনেক বাড়বে। সেবার মান বাড়ানোর জন্য আমরা ব্যপক প্রস্তুতি নিয়েছি। ট্যুরগাইডদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।

কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, পদ্মা সেতু চালুর মাধ্যমে পর্যটন খাতে নতুন দিগন্ত সূচনা হবে। পিছিয়ে পড়া উপকূলীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক অবস্থা ঘুরে দাঁড়াবে- এটা আমাদের প্রত্যাশা। পর্যটন ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে।

মেয়র আরো বলেন, পর্যটকরা যাতে নির্বিঘ্নে ভ্রমণ করতে পারেন সে জন্য পৌরসভা থেকে সাগরপাড় পর্যন্ত লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ চলছে।

এদিকে, আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মো: শাহ আলম জানান, পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষ্যে ২৫ জুন থেকে ১৫ দিনের জন্য সকল আবাসিক হোটেলে ৫০ শতাংশ ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। খাবার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির পক্ষ থেকেও ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম এ খায়ের প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, কুয়াকাটা পর্যটন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনুকূলে রয়েছে। তারপরও মহিপুর থানা ও কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যটকদের যে কোন আইনি সেবাদানে আমরা সবসমই প্রস্তুত।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সাগরকন্যা,কুয়াকাটা,সমুদ্র সৈকত,নারিকেল গাছ,ঝাউবন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close