মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

  ২৬ জানুয়ারি, ২০২২

মির্জাগঞ্জে ভিজিএফের চাল পায়নি দুইশাতধিক জেলে

প্রতীকী ছবি

প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় জেলেদের জন্য ভিজিএফের চাল তিনমাস অতিবিাহিত হলেও একমাসের চাল পায়নি দুই শতাধিক জেলে।

পটুয়াখালী মির্জাগঞ্জের কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। গত বছর ২০ অক্টোবর জেলেদের মধ্যে চাল বিতরণের কথা থাকলেও চালগুলো ইউনিয়ন পরিষদের গুদাম ঘরে পড়ে আছে। চাল বিতরণ নিয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলমের সাথে স্থানীয় জেলেরা একাধিকবার বৈঠক হলেও চাল বিতরণ করেনি।

সরকার ঘোষিত ইলিশ আহরনে বিরত থাকা জেলেদেরজন্য বরাদ্ধকৃত এক মাসের ভিজিএফের ৫টন ৩৬০ কেজি চাল এখনও পাননি ওই ইউনিয়নের ২৬৮জন জেলে। এমনকি ২০জন সামুদ্রিক জেলেদের নামের বরাদ্ধকৃত চাল পড়ে আছে উপজেলা গুদামঘরে। এই মহামারি পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা।

কয়েক জেলে জানান, তালিকাভুক্ত জেলেদের ভিজিএফের চাল দেওয়ার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের খামখেয়ালিপনার কারণে আমরা এখনও চাল পায়নি।

সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিস সুত্রে জানা যায়, প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় জেলেদের গত বছর ৪ অক্টাবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২দিন উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদীতে ইলিশ মাছ আহরণ নিষিদ্ধ ছিল। এ সময় ইলিশ ধরা থেকে বিরত থাকা প্রতিটি পরিবারকে মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ভিজিএফের মাধ্যমে প্রতিমাসে জেলেদের ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করার কথা। এজন্য উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে ১ হাজার ৬২৮ জেলে পরিবারের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়। উপজেলার সকল ইউনিয়নের চাল বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নে একমাসের চাল বিতরণ না করায় গুদামে পড়ে আছে।

জানা যায়, উপজেলায় মোট জেলের সংখ্যা ১ হাজার ৯১৪ জন। ভিজিএফের তালিকাভুক্ত রয়েছে ১ হাজার ৬২৮ জন।

মির্জাগঞ্জ উপজেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির সাধারন সম্পাদক মোঃ আলী আকাব্বর মিয়া বলেন, সরকারের নিষেধাজ্ঞা মেনে জেলেরা নদীতে ইলিশ প্রজনন মৌসুমে মাছ আহরণ করেনি। অথচ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলমের সাথে একাধিকবার আলাপ করা সত্ত্বেও তিনি চাল বিতরণ করেনি। চাল না পাওয়া তারা পরিবার নিয়ে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। করোনাভাইরাসের কারণে ঘর থেকে বের হইতে পারিনা, এখন ঘরে চাল নেই, অথচ আমাদের বরাদ্ধের একমাসের চাল গোডাউনে পরে আছে।

কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ইলিশ আহরণে বন্ধ থাকা ২৬৮জন জেলের জেলেদের চাল ইউনিয়ন পরিষদের গুমাদে ও সামুদ্রিক জেলেদের চাল উপজেলা খাদ্য গুমাদে মজুদ আছে।

কাককড়াবুনিয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মাহাবুব আলম স্বপন জানান, আমি জেলেদের তালিকা এখনও হাতে পাইনি। আমি প্রকৃৃতি জেলেদের নাম বাছাই করে চাল বিতরন করা হবে।

সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. তানজিমুল ইসলাম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানকে বারবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও তিনি চাল বিতরণ করেনি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাঃ তানিয়া ফেরদৌস বলেন, ইলিশ প্রজনন মৌসুমে জেলেদের চাল এখনও বিতরণ করা হয়নি, এটা দুঃখজনক। বর্তমান চেয়ারম্যান বলেছেন-জেলেদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। দুই একদিনে মধ্যে চাল বিতরন করা হবে। আর সামুদ্রিক জেলেদের মধ্যে বরাদ্ধকৃত চাল প্রকৃত জেলে না থাকায় চালগুলো ফেরৎ দেয়া হয়েছে। আগামী বছর চাল বরাদ্ধ এলে সম্বনয়নের মাধ্যমে জেলেদের মাঝে চাল বিতরণ করা হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মির্জাগঞ্জ,পটুয়াখালী
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close