আব্দুস শুকুর, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার)

  ২৬ জানুয়ারি, ২০২২

অনুকূল আবহাওয়ায় চা উৎপাদনে রেকর্ড

অনুকূল আবহাওয়া এবং সরকারের চা শিল্পে উল্লেখযোগ্য পরিকল্পিত উন্নয়নের সুবাদে দেশে চায়ের উৎপাদন বেড়েই চলেছে। ফলে এবার দেশে রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদন সম্ভব হয়েছে।

বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্র (বিটিআরআই) ও বাংলাদেশ চা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে দেশের ১৬৭টি চা বাগান এবং ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান থেকে রেকর্ড ৯৬ দশমিক ৫০৬ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ উৎপাদন।

সরকারি সহায়তা ও সঠিক ব্যবস্থাপনার কারণে চা শিল্পের এই অর্জন সম্ভব হয়েছে বলে চা শিল্প সংশ্লিরা জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ চা বোর্ড সূত্র জানায়, ২০২০ সালে দেশে ৮৬ দশমিক ৩৯৪ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়। যা গত ২০২০ সালের চেয়ে ১০ দশমিক ১১১ মিলিয়ন কেজি বেশি। এই হিসেব কেবল ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। অন্যদিকে শুধু উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়ের চা বাগান থেকেও ২০২১ সালে রেকর্ড পরিমাণ ১৪ দশমিক ৫৪ মিলিয়ন কেজি চা জাতীয় উৎপাদন সম্ভব হয়েছে। ২০২০ সালে উৎপাদন হয়েছিল ১০ দশমিক ৩০ মিলিয়ন কেজি। এর পাশাপাশি ২০১৯ সালে দেশে রেকর্ড পরিমাণ ৯৬ দশমিক ৬৯ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছিল।

বাংলাদেশ টি ট্রেডার্স এন্ড প্লান্টার্স এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক জহর তরফদার জানান, চা শিল্পে সরকারি নানা প্রনোদনা সহায়তা ও সঠিক ব্যবস্থাপনার কারণে চা শিল্পের অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের পর চায়ের নিলাম হাউজ শ্রীমঙ্গলে প্রতিষ্ঠা হওয়ায় অল্প সময়ের ব্যবধানে চা বাজারজাত হচ্ছে, এতে চায়ের গুনগত মানও অক্ষুণ্ন রাখা সম্ভব হচ্ছে। আর গুণগত মান ঠিক রেখে উন্নয়নে ধারা অব্যাহত রাখা গেলে অদূর ভবিষ্যতে চা শিল্প আরো এগিয়ে যাবে-এমনটা মনে করেন তিনি। ইস্পাহানি চা কোম্পানির মালিকানাধীন জেরিন চা বাগানের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সেলিম রেজা চৌধুরী বলেন, এসব চায়ের দুই-তৃতীয়াংশ উৎপাদন হয় মৌলভীবাজারের ৯২টি চা বাগানে। সংশ্লিষ্ট চা বাগান কর্তৃপক্ষ ও চা বোর্ডের নানামুখি উদ্যোগে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।

শ্রীগবিন্দপুর চা বাগানের স্বত্বাধিকারী মহসিন মিয়া মধু জানান, মৌসুমের শুরু অনুকূল আবহাওয়া থাকায় চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। এবছরও উৎপাদনে নতুন রেকর্ড সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, কোভিড পরিস্থিতি সামনে রেখে চা উৎপাদনের এ ধারাবাহিকতা থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, চা শিল্পের সক্ষমতা অনেকাংশে বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দেশের সব চা বাগানের কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। সরকারের আর্থিক প্রণোদনা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ চা বোর্ডের নিয়মিত মনিটরিং ও পরামর্শ প্রদান, বাগান মালিক ও শ্রমিকদের নিরলস প্রচেষ্টা, স্বল্প মূল্যে সার বিতরণ, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চা নিলাম কেন্দ্র চালু, চা শ্রমিকদের মজুরি, রেশন এবং স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণের ফলে ২০২১ সালে দেশের চা উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মৌলভীবাজার,শ্রীমঙ্গল,অনুকূল আবহাওয়া,চা উৎপাদন,রেকর্ড
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close