কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

  ১৯ অক্টোবর, ২০২১

কমলগঞ্জে আওয়ামী লীগের ২৮ নেতার দৌড়ঝাঁপ

মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল এখনো ঘোষণা করা হয়নি। তবে ইতিমধ্যে উপজেলার ৯ ইউনিয়নে পুরোদমে নির্বাচনী তৎপরতা শুরু হয়েছে। এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি। এ জন্য আওয়ামী লীগের নৌকার কাণ্ডারি হতে দলের প্রবীণ নেতাদের সাথে সাথে নবীনদেরও ভোটের মাঠে কাজ করতে দেখা গেছে। নবীনদের মধ্যে ২/৩ জনের নৌকা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তৃণমূলের ভোটের ওপর দলীয় প্রার্থী হওয়ার প্রাথমিক মানদণ্ড নির্ধারণ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। তবে, নৌকার কান্ডারি হওয়া নির্ভর করবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের ওপর। তাই প্রার্থী হতে আগ্রহীরা ইতোমধ্যে মনোনয়ন পেতে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে উপজেলা, জেলা সদর ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে ঘোরাঘুরি ও দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছেন।

সূত্রমতে, বিগত ইউপি নির্বাচনে উপজেলার ৯ ইউনিয়নের মধ্যে ৭টিতে আওয়ামী লীগ ও ২টিতে বিএনপি প্রার্থী বিজয়ী হয়েছিল। উপজেলায় আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও সমাজসেবীরা ইউপি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছেন। বিএনপি থেকে যারা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে আগ্রহী তারা অনেকটাই নীরবে প্রচারণা করছেন। প্রার্থী হতে আগ্রহীরা উপজেলার প্রত্যন্তঞ্চলে নিজেদের ছবি সম্বলিত পোস্টার, ব্যানার টাঙিয়ে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে দলীয় মনোনয়ন বোর্ডের নেতা ও ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

শুধু তাই নয় হাট-বাজারের বিভিন্ন দোকানে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা একদিকে যেমন এখন থেকেই গ্রামে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, মসজিদে ও বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানে যোগদানের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন।

অন্যদিকে তেমনি দলীয় মনোনয়ন পেতে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে উপজেলা, জেলা সদর ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে ঘোরাঘুরি ও দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছেন।

আওয়ামী লীগ সমর্থীত প্রার্থীরা ভোটের আগেই দলীয় মনোনয়ন পাওয়াকেই বেশি প্রধান্য দিচ্ছেন। বিএনপির প্রার্থীদের দৌড়-ঝাঁপ অনেক কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মেম্বার ও মহিলা মেম্বার প্রার্থীরা ভোটারদের মন জয় করতে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। এই কার্যক্রমে প্রায় ৩ শতাধিক প্রার্থী নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।

এবার আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী গতবারের চেয়ে তুলনামূলক কম হবে। প্রায় ২৮ জন প্রার্থী শেষ পর্যন্ত তৃণমূল ভোটে অংশ নিতে পারেন। এদের মধ্যে থেকে নৌকার ৯জন প্রার্থী বের হয়ে আসবেন। নেতাকর্মীদের বিশ্বাস, এবার জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা ঐক্যবদ্ধ থাকলে ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী অপেক্ষাকৃত কম হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আছলম ইকবাল মিলন বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধ। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। তিনি যাকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করবেন তাকে নিয়েই আমরা ভোটযুদ্ধে মাঠে নামবো। এবার আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করবে। এ লক্ষ্যে আমরা দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছি।’

কমলগঞ্জে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে তৎপরতা চালাচ্ছেন প্রায় ২৮ জন নেতা-কর্মী। এদের মধ্যে কয়েকজন তরুণ প্রার্থীও রয়েছেন।

উল্লেখযোগ্য সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে ১নং রহিমপুর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইফতেখার আহমদ বদরুল, আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জুনেল আহমদ তরফদার।

২নং পতনউষার ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার তওফিক আহমদ বাবু, মইনুল ইসলাম রিপন।

৩নং মুন্সিবাজার ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতলিব তরফদার, আওয়ামী লীগ নেতা রামেন্দ্র ভট্রাচায্য, জাহিদুল ইসলাম ও শ্যামল সুন্দর দাস।

৪ নং শমসেরনগর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জুয়েল আহমদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল মালিক বাবুল, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর ও এবিএম আরিফুজ্জামান অপু।

৫ নং কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নে জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ছিদ্দেক আলী, বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান, উপজেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা সুলেমান হোসেন ভুট্রো।

৬ নং আলীনগর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফজলুল হক বাদশা, কমলগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক ও যুবলীগ নেতা তরুণ নিয়াজ মুর্শেদ রাজু ও সাবেক ছাত্র নেতা শাহীন আহমদ।

৭ নং আদমপুর ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক সাব্বির আহমদ ভুঁইয়া, আওয়ামী লীগ নেতা হাজীর বখত, হাজী জয়নাল আবেদিন, সাব্বির এলাহী, বিলেত প্রবাসী একেএম সালাম ও ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন।

৮ নং মাধবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আসিদ আলী ও কমলা কান্ত সিংহ।

৯ নং ইসলামপুর ইউনিয়নের উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ সুলেমান হোসেন, ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি বাবুল আহমদ।

এছাড়া অনেকেই নির্দিষ্ট সময়ে দলীয় প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করার আভাস পাওয়া গেছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কমলগঞ্জ,আওয়ামী লীগ,নির্বাচন,ইউপি নির্বাচন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close