সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামে ২০২০ সালে স্বামী-স্ত্রী ও তাদের দুই সন্তান খুন হয়েছিলেন। এ ঘটনায় নিহত শাহিনুরের আপন ভাই (৩৬) মামলার একমাত্র আসামি রায়হানুল ইসলামকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার পৌনে ১২টায় সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারক শেখ মফিজুর রহমান জনাকীর্ণ আদালতে আসামির উপস্থিতিতে এ আদেশ দেন। একই আদেশে আসামিকে সাত দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিলের জন্য সময় দেওয়া হয়েছে।

এর আগে, এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাতক্ষীরা সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম দীর্ঘ তদন্ত শেষে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি আসামি রায়হানুলের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। একই সাথে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসাদুল, রাজ্জাক ও আব্দুল মালেককে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ মামলার একজন সাফাই স্বাক্ষীসহ ১৮ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ আসামি রায়হানুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ্বণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন। এদিকে, এ মামলার রায় শোনার পর রায়হানুলের স্বজনরা আদালতের বারান্দায় কান্নায় ভেঙে পড়েন।

চাঞ্চল্যকর এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ বলেন, যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মাধ্যমে আদালত আসামি রায়হানুলকে দোষী সাব্যস্ত করতে সক্ষম হয়েছি বলে তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মুত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। এটি যুগান্তকারী রায় হয়েছে। এই রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেন তিনি।

তবে, আসামি পক্ষের আইনজীবী এস এম হায়দার ও অ্যাড ফরহাদ হোসেন এ রায়ে সন্তুষ্ট নন বলে জানান। তারা বলেন, আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো। আশা করি সেখানে আমরা ন্যায় বিচার পাবো।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ভোর রাতে কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামের প্রয়াত ডা. শাহাজান আলীর ছেলে মৎস্য হ্যাচারী মালিক শাহিনুর, তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন, ছেলে সিয়াম হোসেন মাহী ও মেয়ে তাসনিম সুলতানাকে পারিবারিক কলহের জেরে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে সবাইকে জবাই করে হত্যা করেন তার আপন ভাই রায়হানুল। পরদিন লোমহর্ষক এ ঘটনায় কলারোয়া থানায় মামলা করেন নিহত শাহিনুরের শাশুড়ি কলারোয়ার ওফাপুর গ্রামের রাশেদ গাজির স্ত্রী ময়না বেগম।

পিডিএসও/হেলাল