রাজীবুল হাসান, শ্রীপুর(গাজীপুর)

  ১৮ আগস্ট, ২০১৮

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেখে দিনমজুরের ‘ঘর বানিয়ে’ দিচ্ছেন প্রবাসী যুবলীগ নেতা

ষাটোর্ধ দিনমজুর মুজিবর রহমান। এলাকার লোকজন তাকে ভাণ্ডারি কাকা বলে ডাকেন। সহায়-সম্বল বলতে তিন গন্ডা জমি আর মাথা গুজার দো-চালা একটি টিনশেড ঘর। স্ত্রী আর দুই সন্তান নিয়ে অতি কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। বহুবছর আগের করা ওই ঘরটির অবস্থাও নাজেহাল।

গত বুধবার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন-গ্রীণ বাংলা স্টুডেন্ট ক্লাব নামে একটি সংগঠন তাদের ফেসবুক আইডি থেকে ‘ভাণ্ডারি কাকার ঘরটিও যদি করে দিতে পারতাম’ শিরোনামে একটি স্ট্যাটাস দেওয়া হয়। সেই স্ট্যাটাসে বলা হয়- শ্রীপুর উপজেলার আজুগীচালা গ্রামের বাসিন্দা মুজিবর ভাণ্ডারি। বসবাসের একমাত্র ঘরটির অবস্থা খুবই নাজুক। ছোট্ট এই ঘরের চারপাশে না আছে বেড়া, না আছে ভালো একটা দরজা। একটু বৃষ্টিতেই পানি আসে ঘরে। স্ত্রী, সন্তান নিয়ে দিনমজুর ভাণ্ডারি প্রতিনিয়িত জীবন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। একটা কাজে আজ ভাণ্ডারি চাচার বাড়ির পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। তাদের এমন অবস্থা দেখে বড্ড মায়া লাগছে। মনে হলো ইস যদি নছিমনের মতো ভাণ্ডারি কাকার ঘরটা করে দিতে পারতাম। আমাদের সমাজে তো অনেক সম্পদশালী মানুষ আছে,যারা ইচ্ছে করলেই ভাণ্ডারি কাকার মুখে হাসি ফোটাতে পারেন। এখন অনেক রাত, কিন্তু চোখে ঘুম আসছে না। বাহিরে আকাশ চমকাচ্ছে- হয়তো বৃষ্টি আসতে পারে। আচ্ছা বৃষ্টি আসলে ভাণ্ডারি কাকা এই রাতে কোথায় আশ্রয় নিবে, কোথায় যাবে তার সন্তানেরা। আমার সকল ফেসবুক বন্ধুদের বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করছি দয়া করে ভাণ্ডারি কাকার ঘর করতে এগিয়ে আসুন। হাত রাখুন আমাদের হাতে। আমরা ওই ঘরটি করে দিতে চাই। প্লিজ পাশে দাঁড়ান।

এমন একটি স্ট্যাটাস দেখে আবেগাপ্লূত হয়ে পড়েন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট যুবলীগের সভাপতি কামরুল হাসান কাজল। তিনি ওই সংগঠনের কর্মীদের সঙ্গে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করে ঘরটি নিজ অর্থে বানিয়ে দেওয়ার ইচ্ছে পোষণ করেন। কামরুল হাসান কাজল তার ফেসবুকে বলেন, ‘মানুষ মানুষের জন্য, আমার দেশের মানুষ এখনও বাসস্থান, খাবারের অভাবে কষ্ট করে জীবন-যাপন করবে। এটা আমি মানতে পারবো না। আপনারা যদি আমাকে সুযোগ দেন তাহলে ঘরটি আমিই করে দিতে চাই।’

গ্রীণ বাংলা স্টুডেন্ট ক্লাবের সভাপতি গোলাম রাব্বী প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, ‘মানুষের কল্যাণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সমাজের বিত্তবান মানুষজন যদি কামরুল ভাইয়ের মতো এইভাবে এগিয়ে আসতেন তাহলে আমাদের সমাজটা আরো সুন্দর হতো। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেখে এমন একটি মহৎ কাজে সহযোগিতা করার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। এরই মধ্যে আমাদের হাতে ঘর করার জন্য টাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন কামরুল সাহেব। আশা করি ঈদের আগেই ঘরের কাজে হাত দিতে পারবো।’

পিডিএসও/রিহাব

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ফেসবুক স্ট্যাটাস,দিনমজুর,ঘর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close