ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের দ্বিতীয় দিনেই গতকাল সোমবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেয়ারবাজার। বেড়েছে বেশির ভাগ শেয়ারের দর। দরপতনের আতঙ্ক কাটিয়ে বিনিয়োগে ফিরছেন বিনিয়োগকারীরা। লেনদেনের গতিও আগের দিনের দ্বিগুণ।

গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর মুহূর্তেও বিক্রির চাপে প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৪৭ পয়েন্ট হারিয়ে ৬১৯২ পয়েন্টে নেমেছিল। পরের মিনিটে তা আরো কিছুটা কমে ৬১৮৯ পয়েন্টে নামে।

এমন পতনের হার ছিল আশঙ্কার তুলনায় অনেক কম। ফলে আশাবাদী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে ভর করে বাড়তে থাকে বহু শেয়ারের দর। লেনদেন শুরুর মাত্র ১৭ মিনিট পরই সূচকটি গত রবিবারের তুলনায় ৬ পয়েন্ট বেড়ে ৬২৪৬ পয়েন্টে ওঠে। অর্থাৎ ইতিবাচক ধারায় ফেরে সূচক। বেলা পৌনে ১১টায় সূচকটি ১৬ বেড়ে ৬২৫৬ পয়েন্টে উঠেছিল। এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকতে দেখা গেছে।

দিনের লেনদেন শুরুর ২ ঘণ্টা পর লেনদেন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, তালিকাভুক্ত ৩৯২ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৮৩টির লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে এ সময় ২০৮টি দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছিল। দর হারিয়ে কেনাবেচা হচ্ছিল ১৪০টি। বাকি ৩৫টির দর অপরিবর্তিত থাকতে দেখা গেছে। এ সময় ডিএসইএক্স সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়ে ৬২৪৮ পয়েন্টে অবস্থান করছিল।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শুরুতে ১৪৪ কোম্পানির শেয়ার দিনের সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বনিম্ন দরে কেনাবেচা হয়েছিল। তবে মাঝে এ সংখ্যা ৬৭টিতে নেমে আসে। দুপুর ১২টায় এ সংখ্যা ছিল ৭৮টি। অর্থাৎ দিনের শুরুতে যেসব শেয়ারদর হারিয়েছিল, সেগুলোর অধিকাংশ দর ফিরে পেয়েছে।

বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা জানান, বিনিয়োগকারীদের সিংহভাগ দরপতনের আতঙ্ক কাটিয়ে উঠেছেন। ডিএসইর ব্রোকারদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকারর্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ফ্লোর প্রাইস তোলার পর বিনিয়োগে আস্থা ফিরে পেতে যতটা সময় লাগবে বলে ধারণা ছিল, তার কিছুই লাগেনি।

ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের প্রথম দিনে গত রবিবার দিনের শেষে সূচকের ৯৬ পয়েন্ট পতন হলেও লেনদেনের শুরুতে সূচকের পতন হয়েছিল ২১৫ পয়েন্ট। অর্থাৎ ররিবারই সূচক ফিরে পায় ১২১ পয়েন্ট।

সূচকের এমন ঘুরে দাঁড়ানোর উদাহরণ টেনে ব্রোকার সংগঠনের এ নেতা বলেন, আজও (সোমবার) একই ঘটনা ঘটেছে। শুরুতে সূচক ৫০ পয়েন্ট হারালেও ১৫-১৬ মিনিটের মধ্যে বাজার ঘুরে দাঁড়ায়।

বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা আস্থা ফেরায় গতকাল লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার শেয়ারবাজারে ৩৫২ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল। দ্বিতীয় ঘণ্টায় তা আরো বেড়ে ৫৫২ কোটি টাকা ছাড়ায়।

রবিবার লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ২০৬ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল। দুপুর ১২টার পর তা উন্নীত হয়েছিল ২৯৫ কোটি টাকায়। আর পুরো দিনে কেনাবেচা হয়েছিল ৫৮৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকার শেয়ার।

"