বাণিজ্য ডেস্ক
‘বাংলাদেশিদের অর্থের ৭% প্রকাশ করে সুইসব্যাংক’
সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের যে ডিপোজিট রয়েছে তার মাত্র ৭ শতাংশ প্রকাশ করা হয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান।
গতকাল এনবিআর সম্মেলন কক্ষে এনবিআর-বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
অর্থপাচার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রাজী হাসান বলেন, গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রেটি (জিএফআই) পাচারের যে তথ্য দেয় তা যে পুরোপুরি সত্য আমরা তা স্বীকার করি না। সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের একটি প্রতিবেদন প্রতিবছর প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদন নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়। এ প্রতিবেদন নিয়ে আমরা যাচাই করে দেখেছি যে, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের ডিপোজিট রয়েছে। ব্যাংকটির ব্যক্তিগত ডিপোজিটের ফিগারের মধ্যে মাত্র ৭ শতাংশ প্রকাশ করা হয়। আর বাকি ৯৩ ভাগই ব্যাংকিং চ্যানেলে কিংবা প্রপার চ্যানেলে যে লেনদেন হয় সেখানে তার প্রতিফলন হয়।
তিনি বলেন, সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক শুধু সুইজারল্যান্ডে নয় বাইরেও তারা কাজ করে। বাংলাদেশ থেকে যে শুধু অর্থ নিয়ে সে ব্যাংকে জমা রাখে তাও নয়। সারাবিশ্বে যে স্কিল ম্যানপাওয়ার রয়েছে তারাও কিন্তু সেসব ব্যাংকে স্বাভাবিকভাবে ডিপোজিট রাখতে পারে। আমরা হিসাব করে দেখেছি, সেখানে ব্যক্তিগত ডিপোজিট দিনে দিনে কমে আসছে।
রাজী হাসান বলেন, বিদেশে যেসব অর্থপাচার হয়েছে সেসব নিয়ে আমরাসহ বেশ কয়েকটি সংস্থা কাজ করছে। যেসব অর্থ পাচার হয়েছে তা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ৩২টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। ইতোমধ্যে একটি মামলা সফলভাবে শেষ এবং পাচারের অর্থ ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
পাচার যাতে না হয় সেদিকে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অব মানিলন্ডারিং বিষয়ে সুপারিশ করে আমাদের যে রিপোর্ট দিয়েছে বাংলাদেশে অর্থপাচার রোধে যে যে মেকানিজম থাকা দরকার সেসব বাংলাদেশের রয়েছে। আমরা আন্তর্জাতিকভাবে একটি কমপ্লায়েন্ট কান্ট্রি। আমাদের সব সংস্থাই এ নিয়ে কাজ করছে এবং তৎপর রয়েছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে অর্থপাচার বিষয়ে কিছু কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নাম আসায় তাদের বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট সাবধানতার অংশ হিসেবে ফ্রিজ করে দিয়েছি। এ বিষয়ে আমরা তৎপর রয়েছি।
এনবিআর-বিএফআইইউর সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরকে একটি মাইলফলক উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানিলন্ডারিং এবং সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে যে আন্তর্জাতিক সংস্থা কাজ করে-তাদের সুপারিশ অনুযায়ী তথ্য বিনিময়ের জন্য একটি কাঠামোগত সংস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অব মানিলন্ডারিং কয়েক বছর পরপর প্রত্যেকটি দেশের অর্থপাচার রোধের ঘাটতি বা করণীয় নির্দেশ করে থাকেন। ইভ্যালুয়েশন রিপোর্টে সংস্থাটি আমাদের এ বিষয়টিকে আরো জোরদার করার জন্য সুপারিশ করেছে।
"