তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক

  ২৩ মে, ২০২২

কপিরাইট এলার্ট দিয়েও হ্যাক হতে পারে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট!

কপিরাইট লঙ্ঘন একটি বড় ইস্যু এবং বেশির ভাগ সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলো এটিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখে। আপনি যদি কোনো কপিরাইটযুক্ত ভিডিও বা গান ইউটিউবে টিউন করেন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আসল মালিকের কাছে নোটিফিকেশন চলে যাবে এবং আপনাকে আইনি ব্যবস্থা এড়াতে এটি মুছে ফেলতে হবে অথবা কখনো কখনো স্বয়ংক্রিয়ভাবেই এটি মুছে দেওয়া হয়। তবে সব কোম্পানি বা কপিরাইট হোল্ডার বিষয়গুলো সমানভাবে বিবেচনা করে না বা সব সময় আইনি ব্যবস্থাও নেয় না।

ফেক কপিরাইট এলার্ট এবং হ্যাকিং

যাই হোক আইন জড়িত থাকার কারণে লোকেরা কপিরাইট লঙ্ঘনকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে থাকে। আর এটিকেই ব্যবহার করে স্ক্যামাররা। তারা ইউজারদের ডেটা চুরি করতে কখনো কখনো ব্যবহার করে ফেক কপিরাইট এলার্ট। আপনি যদি ফেসবুকে এই ধরনের কপিরাইট এলার্ট পেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই সতর্ক হয়ে যান, হতে পারে আপনার পাসওয়ার্ড বা টু ফ্যাক্টর লগইন কোড হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে হ্যাকাররা। সোফোস ল্যাবের মতে ফেসবুকে নতুন ধরনের স্ক্যাম ছড়িয়ে পড়েছে যার মাধ্যমে স্ক্যামাররা ফেক কপিরাইট লঙ্ঘনের এলার্ট পাঠাচ্ছে এবং ইউজারদের প্রতারিত করে পাসওয়ার্ড, ফোন নাম্বার ও টু ফ্যাক্টর লগইন কোড হাতিয়ে নিচ্ছে।

এ ধরনের ট্রিকস কীভাবে কাজ করে

নতুন এই মেথডকে আপনি ফিশিংও বলতে পারেন, ফিশিং হচ্ছে মূলত একধরনের সহজ ধোঁকা। ধরুন আপনি প্রতিদিন ফেসবুকে লগইন করছেন, জিমেইলে সাইন ইন করছেন, পণ্য কেনাকাটা করতে গিয়ে আপনার বিভিন্ন তথ্য যেমন নাম, ঠিকানা, ফোন নাম্বার, ক্রেডিট কার্ড নাম্বার দিচ্ছেন। আপনি কি নিশ্চিত যে সাইটগুলোতে আপনি আপনার একান্ত ব্যক্তিগত তথ্যগুলো দিচ্ছেন সেগুলো আসল সাইট! আপনার ই-মেইলে স্ক্যামাররা একটি মেইল পাঠাবে যেখানে বলা হবে আপনি কোন কন্টেন্ট কপিরাইট লঙ্ঘন করছেন। ভয় দেখাবে যদি আপনি ব্যবস্থা না নেন তাহলে অ্যাকাউন্ট অফ করে দেওয়া হবে।

নির্দিষ্ট লিংকে ক্লিক কারার পর আপনাকে ফেসবুকের একটি পেজে নিয়ে যাবে এবং সেখানে আরেকটি পেজ পাবেন। এবার যে পেজ ওপেন হবে এটা কোনো ফেসবুকের পেজ নয়, এটা হবে ফিশিং সাইট যা দেখতে ফেসবুকের মতোই দেখাতে পারে। সেই পেজে আপনার ই-মেইল, ফোন নম্বর চেয়ে পারে। কখনো কখনো ইনফরমেশনগুলো দুবারও চাইতে পারে তারা। পরের স্টেপে তারা আপনার টু ফ্যাক্টর লগইন কোডও চাইতে পারে। যাই হোক আশা করছি তাদের ট্রিকসটি ধরতে পেরেছেন।

কীভাবে নিরাপদ থাকবেন

চলুন দেখে নেওয়া যাক কীভাবে নতুন এই ফাঁদ থেকে বাঁচতে পারবেন-

ই-মেইল এড্রেস চেক : প্রথমেই চেক করুন আপনার ই-মেইলটি কে পাঠিয়েছে এবং এর এড্রেস কি।

এড্রেস বার খেয়াল রাখা : ই-মেইল থেকে যে লিংককে প্রবেশ করেছেন সেটা চেক করুন, এড্রেসবারের দিকে নজর রাখুন। যেমন ফেসবুকের কোনো পেজে থাকাকালীন খেয়াল করে দেখুন এড্রেস-বারে

http://www.facebook.com আছে কি না।

ফেসবুককে অবগত করুন : যেকোনো ফিশিং ই-মেইল পেলে সেটা [email protected] ই-মেইলে অবশ্যই জানান, এতে করে ফেসবুক সেসব লিংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে।

স্প্যাম লিংক ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন : কখনো ই-মেইলে আসা কোনো এড্রেসে ক্লিক করা যাবে না বা যেসব মেইল কোনো লগইন পেজে নিয়ে যায় সেটা সম্পূর্ণরূপে পরিহার করুন। যেহেতু এই মেথডে টু ফ্যাক্টর লগইন কোড ও বাইপাস হয়ে যায় সুতরাং কখনো কখনো আপনার পাসওয়ার্ড লিক হয়েই যেতে পারে। সেক্ষেত্রে নিচের ধাপগুলো ফলো করুন, ডেক্সটপ থেকে ফেসবুকে যান, ডান পাশ থেকে অ্যাকাউন্ট বাটনে ক্লিক করে সেটিংস থেকে সেটিংস অ্যান্ড প্রাইভেসি এ ক্লিক করুন। তারপর সিকিউরিটি অ্যান্ড লগইন এ যান। চেঞ্জ পাসওয়ার্ড এ ক্লিক করুন

আপনার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে ফেলুন। প্রযুক্তি যত আধুনিক হচ্ছে একই সঙ্গে হ্যাকাররাও তত চালাক হচ্ছে আর তাই হ্যাকারদের সব ধরনের ফাঁদ থেকে বেঁচে থাকতে আপনাকে আগে সচেতন হতে হবে। ফিশিং মেইল নতুন কিছু নয় তারপরও প্রতিনিয়ত হাজার হাজার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হচ্ছে। হয়তো পদ্ধতিতে পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু প্রক্রিয়া একই, আপনাকে বোকা বানানো।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close