সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

  ২৯ জানুয়ারি, ২০২৪

চলনবিল

মাছ না পেলেও খুশি সবাই

সিরাজগঞ্জের চলনবিলে চলছে মাছ ধরার বাউত উৎসব। গত শনিবার এ বাউত উৎসব শুরু হয়।

জানা যায়, সিরাজগঞ্জের চলনবিল-অধ্যুষিত তাড়াশ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, রায়গঞ্জ উপজেলা গুমানি, বড়াল, গোহালা, ফুলজোড়, ইছামতি নদী সহ চলনবিলের সগুনায় কাটাবাড়ি বিল ও গুমানী নদীর মোহনাসহ পাবনার চাটমোহর ও নাটোরের সিংড়া গুরুদাসপুর উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদী, খাল-বিল থেকে বর্ষার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী বাউত উৎসব শুরু হয়েছে। এবারও ঢাকঢোল পিটিয়ে উপজেলার বিভিন্ন বিলের পানিতে নেমে ঠেলাজাল, তৈরাজাল, পলো (স্থানীয় ভাষায়) দিয়ে সৌখিন মাছ শিকারিরা মাছ শিকার করছেন। স্থানীয় ভাষায় এসব মাছ শিকারি দলকে বলা হয় বাউত।

প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার চলন বিলাঞ্চলের বিভিন্ন নদ-নদী ও বিলের পানিতে মাছ শিকারে সবাই দলবেঁধে নেমে পড়ছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার মাছের আনাগোনা কম হওয়ায় বেশির ভাগ বাউতে অংশগ্রহণকারীদের ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে।

সরেজমিনে দেখা যায়, চলনবিল অধ্যুষিত তাড়াশ, রায়গঞ্জ, গুরুদাসপুর, সিংড়া, চাটমহর, ভাঙ্গুরার বিভিন্ন বিলে, করতোয়া নদীতে শত শত সৌখিন মাছ শিকারি মাছ শিকারে নেমে পড়েছেন। কেউ মাছ পাচ্ছেন আবার কেউবা ফিরছেন খালি হাতে। বিলে নেমে মাছ ধরার উৎসবে মেতে উঠছেন শিশু-কিশোর, যুবক থেকে শুরু করে বৃদ্ধরা। পলো, চাক পলো, নেট পলো, ঠেলা জাল তৈরা জাল, বাদাই জাল, লাঠি জালসহ মাছ ধরার নানা সরঞ্জাম নিয়ে মাছ শিকার করছেন বাউতরা।

জালে ধরা পড়ছে শোল, বোয়াল, গজার, দেশি মাগুর, রুই, কাতলাসহ হরেক রকমের মাছ। তবে স্থানীয় মৎস্যজীবীরা কারেন্ট জাল এবং কীটনাশক দিয়ে মাছ ধরার ফলে মাছের সংখ্যা কমে গেছে বলে অভিযোগ করেন তারা। উল্লেখ্য, মাছ পাওয়া না পাওয়া বড় কথা নয়, ব্যতিক্রমী এ উৎসবে যোগ দিয়ে আনন্দ উপভোগ করাটাই যেন তাদের কাছে মুখ্য বিষয়।

তাড়াশের বারুহাস গ্রামের সোনা মিয়া রায়গঞ্জের নীমগাছি মোতালেব, নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চন্দ্রপুর এলাকার রাজ্জাক খান, সিংড়া উপজেলার কলম এলাকার আলাউদ্দিন, চাটমোহরের আগশৈয়াইল গ্রামের মাহমুদ আলী, ভাঙ্গগুড়ার ভবানীপুর গ্রামের আক্কেল সেখসহ বেশ কয়েকজন বাউতে আসা ব্যক্তিরা বলেন, (সৌখিন মৎস্য শিকারি) প্রতি বছর এই সময়টার অপেক্ষায় থাকেন তারা। মোবাইলের মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করে চলনবিল এলাকার বিভিন্ন বিলে পলো নিয়ে মাছ শিকারে নেমে পড়ছেন। দলবদ্ধ হয়ে মাছ ধরা এক ধরনের উৎসবে পরিণত হয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে। এছাড়া ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে প্রতি বছরই বাউত উৎসবে যোগ দেন বলেও জানান তারা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close