তপন কুমার সরকার, আত্রাই (নওগাঁ)

  ১৮ আগস্ট, ২০২২

প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বিলুপ্তির পথে গরুর হাল

উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে শুরু হওয়ায় অন্যান্য জিনিসের সঙ্গে সঙ্গে কৃষিতে যুক্ত হচ্ছে উন্নত প্রযুক্তি। ফলে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে মানব সভ্যতার সোনালি অতীত গ্রাম-বাংলার সেই চিরচেনা গরু-লাঙল দিয়ে জমি চাষের দৃশ্য।

দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে লাঙল দিয়ে জমি চাষ শুধুই স্মৃতি হয়ে থাকছে। এক সময় দেখা যেত ভোরবেলা কৃষক কাঁধে লাঙল- জোয়াল নিয়ে বেরিয়ে যেত জমিতে হালচাষ করার জন্য। বর্তমানে আধুনিকতার স্পর্শে ও বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কারের ফলে কৃষকদের জীবনে এসেছে নানা পরিবর্তন।

আধুনিকতার ছোঁয়ায় হাল চাষের পরিবর্তে এখন ট্রাক্টর অথবা পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করা হয়। এক সময় দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে কৃষক গরু, মহিষ পালন করতেন। অনেকে হাল চাষকে পেশার পাশাপাশি ধান গম, ভুট্টা, তিল, সরিষা, আলু প্রভৃতি চাষের জন্য গরু-মহিষ পালতেন। তারা নিজের সামান্য জমির পাশাপাশি অন্যের জমিতে হাল চাষ করে তাদের সংসারের ব্যয়ভার বহন করতেন। হালের গরু দিয়ে দরিদ্র মানুষ জমি চাষ করে ফিরে পেতেন তাদের পরিবারে সচ্ছলতা।

উপজেলার সাহাগোলা গ্রামের কৃষক সুমন আলী প্রামাণিক বলেন, ছোটবেলায় হাল চাষের কাজ করতাম। বাড়িতে বলদ গরু ছিল ৩ জোড়া। চাষের জন্য তৈরি করতে হতো কাঠের লাঙল, বাঁশের তৈরি জোয়াল, মই, গরুর মুখে টোনা ইত্যাদি।

কৃষক কামরুল হাসান জানান, গরু দিয়ে হাল চাষ করলে জমিতে ঘাস কম হতো। অনেক সময় গরু দিয়ে হালচাষ করতে জমিতে গোবর পড়ায় জৈবসার হতো। এর ফলে খেতে ফলন ভালো হতো। এখন আধুনিক বিভিন্ন মেশিন দিয়ে কৃষক তাদের জমিতে চাষাবাদ করছেন।

উপজেলা চেয়ারম্যান এবাদুর রহমান প্রামাণিক বলেন, গরু লাঙল দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৬৬ শতাংশ জমি চাষ করা সম্ভব। আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে অল্প সময়ে ও অল্প লোকবল দিয়ে সহজেই কয়েক বিঘা জমি চাষাবাদ করা যায়। আর এ কারণেই ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য হালচাষ। তবে পহেলা বৈশাখ এলে গরুর গাড়ির কদর বাড়ে বলে জানান তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close