রাজবাড়ী প্রতিনিধি

  ১৪ মে, ২০২২

বৃষ্টি ও পোকার আক্রমণে দিশাহারা পাটচাষি

ঘূর্ণিঝড় অশণির কারণে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে রাজবাড়ীর বিভিন্ন নিচু এলাকার পাট খেতে পানি জমে গেছে। এরইমধ্যে পাট খেতে বেড়েছে পোকার আক্রমণ। ফলে এ বছর দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এ জেলার পাট চাষিরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ৪৭ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। তবে এ বছর সেই আবাদ বেড়ে দাড়িয়েছে ৪৮ হাজার হেক্টর। মূলত পেঁয়াজ, মশুর ও গম উত্তোলন করেই ওই সকল জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে। এ জেলায় সব থেকে বেশী পাটের আবাদ হয় বালিয়াকান্দি, পাংশা ও কালুখালি উপজেলায়। সেচের মাধ্যমে এপ্রিল এর শুরু থেকে মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত পাটের বীজ রোপণ করে কৃষক। তবে এ বছর পাট চাষে সমস্যা তৈরি করেছে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও পাট খেতে পোকার আক্রমন। ঘূর্ণিঝড় অশণির প্রভাবে গত কয়েকদিন ধরেই বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ফলে অধিকাংশ পাট খেতে পানি জমেছে। নিচু এলাকার সকল খেত তলিয়ে গেছে। তার উপর আবার এসব খেতে পোকার সংক্রমণ বেড়েছে। এ অবস্থায় পাটের আবাদ নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা।

কৃষকরা জানান, পাট আবাদের জন্য বৃষ্টির পাশাপাশি নিয়মিত প্রচুর রোদের প্রয়োজন হয়। কোন অবস্থাতেই পাট খেতে পানি জমে থাকা যাবে না। সব সময় জমির মাটি শুকনো থাকলে ফলন ভালো হয়। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতে অধিকাংশ খেতে পানি জমেছে। পানি জমায় ছোট ছোট পাটের মাটির উপরের অংশে শিকর গজিয়েছে। এ সকল গাছ আর বড় হবে না। আবার পানি জমি থেকে সরে গেলে তখন এই পাট রোদে মারা যাবে। এছাড়া বাড়তি উপদ্রব হিসেবে খেতে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে।

পাংশা উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের কৃষক কার্তিক শীল বলেন, পাটের জমিতে সেচ দেওয়ার পরপরই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তিনদিন বাদ দিয়ে আবার টানা বৃষ্টি হয়েছে। পাটের বয়স একমাসও হয়নি। পানি জমে থাকায় পাট বড় হবে কিনা সন্দেহ আছে। জেলা সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়রে কৃষক মোহন শেখ বলেন, পেঁয়াজ তুলে আমি পাঁচ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। তার তিন বিঘাতেই পানি বেধে আছে, আর বের হচ্ছে না। এই পাটও আর হবে না। কেটে ফেলে অন্য কিছুর আবাদ করা লাগবে।

বানিবহ ইউনিয়নের বারুগ্রামের কৃষক নজরুল হোসেন বলেন, লাগাতার বৃষ্টিতে পাটের জমিতে পানি উঠেছে। আবার উচু জমির পানি গড়িয়ে নিচে আসছে। ফলে নিচু জমির পাট আর হবে না। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এসএম শহীদ নূর আকবর বলেন, ‘বর্তমান বৃষ্টিপাতের ফলে পাটের ফলন ভালো হবে। পাটের জন্য এই বৃষ্টি দরকার ছিল। এই বৃষ্টি পাটের বেড়ে উঠায় সাহায্য করবে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close