মাদারীপুর প্রতিনিধি

  ২২ নভেম্বর, ২০২১

বাঁধে নির্মিত ৮ কোটি টাকার প্রকল্প ধ্বংসের মুখে

মাদারীপুর শহররক্ষা বাঁধের দৃষ্টিনন্দন হাঁটার পথ

মাদারীপুর শহরের পুরাতন ট্রলারঘাট থেকে কাজীরটেক ফেরিঘাট পর্যন্ত আড়িয়াল খাঁ নদের তীরঘেঁষে নির্মাণ করা হয় শহররক্ষা বাঁধ। বিআইডব্লিউটির অর্থায়নে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধের ওপর নির্মাণ করা হয় ৪ কিলোমিটারের দৃষ্টিনন্দন হাঁটার পথ। ২০১৮ সালে এটি উদ্বোধন করা হয়। বাঁধের ওপর নদের তীরে প্রকল্পটিতে বৃক্ষরোপণ, ফুলের বাগান, বসার জায়গা, দর্শনার্থীদের জন্য প্রমোদতরীর ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু আজও দেওয়া হয়নি সড়ক বাতির বিদ্যুৎ সংযোগ।

জানা গেছে, প্রকল্পটি শহরকে রক্ষা করার পাশাপাশি নদের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করার উদ্দেশ্যে বাস্তবায়ন হয়। উদ্বোধনের ৪ বছর পরও তদারকির অভাবে ও বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় নষ্ট হচ্ছে হাঁটার পথ ও সৌন্দর্য। প্রতিনিয়ত বাড়ছে মাদকসেবীর আড্ডা, ছিনতাই ও ইভটিজিংয়ের মতো ঘটনা। এটিকে দর্শনীয় স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে বেঞ্চসহ নানা স্থাপনা বানানো হয় কিন্তু ভেঙে ফেলা হয়েছে বিভিন্ন জায়গার রেলিং (বেড়া)। দর্শনার্থীদের আনাগোনা ছিল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। কিন্তু আগের সৌন্দর্য না থাকায় বর্তমানে দর্শনার্থীশূন্য হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, হাঁটার পথে বিভিন্নস্থানে খসে পড়ায় হাঁটাচলাও যেন দায়। বসার যায়গায় ঝোপঝাড়ে ছেঁয়ে গেছে, আস্তানা হয়েছে বিষধর পোকামাকড়ের, বিদ্যুতের খুঁটি থাকলেও নেই সংযোগ, সন্ধ্যা নামলেই তৈরি হয় ভুতুড়ে পরিবেশ। সন্ধ্যায় চলে মাদকসেবীদের আড্ডা। ঘুরতে যাওয়া অনেকেই ইভটিজিং ও ছিনতাইয়ের মুখোমুখি হয় প্রায়ই। দীর্ঘদিন অযত্নে থাকায় অনেক লাইটপোস্টের বাল্ব চুরি হয়ে গেছে। প্রভাবশালী মহল রাস্তার সঙ্গে এ পথ দখল করে ব্যবসা করছে। এমনকি হাঁটার পথের সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয়ালে ইট সিমেন্ট দিয়ে স্থায়ীভাবে দেয়াল তুলে বালুর ব্যবসা করছেন।

স্থানীয়রা জানান, এ পথে বাতিগুলো লাগানো হয়েছিল। দীর্ঘদিন বিদ্যুৎ না দেওয়ায় অনেকে বেশিরভাগ বাতি খুলে নিয়ে গেছে। বেশকিছু বাতি গায়েবও হয়ে গেছে। অবহেলায় অনেক খুঁটি ভেঙে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রায়ই অপরাধমূলক কর্মকা- ঘটছে। ফলে নদের পাড়ে দর্শনার্থীর সংখ্যা কমছে। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ, বাতি স্থাপন ও হাঁটার এই পথে রক্ষণাবেক্ষণ করে জেলার মানুষকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ এবং বন্যার হাত থেকে শহরকে সুরক্ষা করতে পদক্ষেপ নেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ- এমনটাই প্রত্যাশা মাদারীপুরবাসীর।

বিআইডিব্লিউটিএ বরিশাল ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন-উর-রশীদ বলেন, নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর বারবার জেলা প্রশাসক ও মাদারীপুর পৌর মেয়রকে জানিয়েছি। তারা কেন এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে পারেনি তা বুঝতে পারছি না। তবে আবারো তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।

মাদারীপুর পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ বলেন, বিআইডব্লিউটির কাছে আবেদন করেছি আমাদের কাছে কার্যক্রমটি হস্তান্তর করলে পৌরসভা দ্রুত চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, বিআইডব্লিউটিএ ও মাদারীপুর পৌর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close