ফরিদপুরে রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলা ও তদারকির গাফিলতিতে প্রায় সাত হাজার পোলিও ভ্যাকসিন নষ্ট হয়ে গেছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত ও তদারকিতে জড়িত তিন স্বাস্থ্যকর্মীকে শোকজ করা হয়েছে। ভ্যাকসিন নষ্টের এ ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুর শহরের শেখ জামাল স্টেডিয়াম সংলগ্ন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তার কার্যালয়ের স্টোরে।

জানা গেছে, ওই কার্যালয়ের একটি ডিপ ফ্রিজে ৬ হাজার ৮৫০টি পোলিও ভ্যাকসিন অ্যাম্পুল ছিল। ওই অ্যাম্পুল দিয়ে মোট ২০ হাজার ৫৫০ জন শিশুকে ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হতো। এ স্টোর কিপারের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন আজিজুর রহমান সোহেল নামের একজন। তিনি স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

আজিজুর রহমান গত ২৪ সেপ্টেম্বর ফরিদপুরের সিভিল সার্জনের কাছে লিখিতভাবে জানান, স্টোরে থাকা ৬ হাজার ৮৫০টি পোলিও ভ্যাকসিন অ্যাম্পুল তৃতীয় পর্যায় থেকে চতুর্থ পর্যায়ে যাওয়ার কারণে ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে গেছে।

সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ভ্যাকসিন নষ্টের বিষয়টি জানার পর ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ কনসালট্যান্ট (নাক, কান ও গলা) ঊষা রঞ্জন চক্রবর্তীকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন সদর হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ কনসালট্যান্ট (শিশু) এ এইচ এ সায়াদ ও সারভাইরেন্স মেডিকেল কর্মকর্তা মোরশেদ জামান।

ওই কমিটি গত মঙ্গলবার তদন্তকাজ শেষ করে সিভিল সার্জনের কাছে প্রতিবেদন প্রদান করেন। ওই প্রতিবেদনে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত স্বাস্থ্য সহকারী আজিজুর রহমান এবং তত্ত্বাবধানের কাজে নিয়োজিত আইপিআই সুপার ইখতেখার আলম খান ও কোল্ড চেন টেকনিশিয়ান সমীর কুমার মজুমদারের দায়িত্বে ও কর্তব্যকাজে অবহেলার অভিযোগ আনা হয়।

তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে গত ১০ বছর ধরে আজিজুর রহমান কর্মরত থাকলেও স্টোর কিপার হিসেবে তার কোন প্রশিক্ষণ ছিল না।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে আজিজুর রহমান এবং দুই পরিদর্শক ইখতেখার আলম খান ও সমীর কুমার মজুমদারকে ‘কর্তব্যকাজে অবহেলায় কেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না’ মর্মে গত মঙ্গলবার বিকালে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আগামী তিন দিনের মধ্যে এ শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। জবাব সন্তোষজনক না হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"