নুরুন্নবী নুরু, বদরগঞ্জ (রংপুর)

  ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

কৃষকদের জিম্মি করে সেচের পানি নিয়ে ব্যবসা

পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি রংপুর-২ বদরগঞ্জ যোনাল অফিস বিধিবর্হিভুতভাবে সেচ সংযোগ প্রদান করায় বিপাকে পড়েছে বিএডিসির গভীর নলকুপ। এতে করে গভীর নলকুপটি লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে যে কোন মুহুর্তে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

বিএডিসি গভীর নলকূপের বিধি অনুযায়ি, নলকুপের কমান্ডিং এরিয়ার (১৭০০ ফুট) মধ্যে সেচ পাম্প স্থাপন করা যাবে এবং এই সেচ বিদ্যুৎও পাবে না। ২৫ বছর যাবৎ উপজেলার রাধানগর ইউপির পলিপাড়া গ্রামে গভীর নলকুপটি পরিচালনা করেন রাধানগর পাঠানপাড়া গ্রামের রুহুল আমিন সরকার। প্রায় ৮০ একর ইরি-বোরো জমি রয়েছে তার সেচের আওতায়। সেচের লক্ষ্যমাত্রা পূর্বের মত থাকলেও এবার সেচর জন্য জমি পেয়েছেন মাত্র ২০ বিঘা।

সরেজমিনে গত শনিবার সকালে নলকূপ এলাকায় গিয়ে জানা যায়, গভীর নলকুপটির কমান্ডিং এরিয়ার মধ্যে ২টি সেচ স্থাপন করা হয়েছে। তার একটির দূরত্ব ৮০০ ফুট, অন্যটি ১ হাজার ১০০ ফুট। স্থানীয় সাইদুল ইসলাম মেম্বার ও আজিজুল ইসলাম এ সেচ পাম্প পরিচালনা করছেন।

গভীর নলকুপ পরিচালনাকারি রুহুল আমিন সরকার বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন ফল পাননি। প্রতিদিনের সংবাদকে তিনি বলেন, ‘পাম্প মালিকরা এলাকার প্রভাবশালি। পল্লীবিদ্যুতের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজসে বিধিবহির্ভূতভাবে পাম্পে বিদ্যুৎ নিয়েছেন। তারা আমাকে জিম্মি করে কৃষকদের বাধ্য করছেন তাদের সেচ পাম্প হতে পানি নিতে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এলাকার কৃষকরা। আমিও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হতে দিশেহারা অবস্থায় রয়েছি।’

রাধানগর পাঠানপাড়ার কৃষক আনিছুল হক জানান, গভীর নলকুপের কমান্ডিং এরিয়ার মধ্যে থেকেও আমরা জমিতে সঠিকভাবে পানি সেচ দিতে পারছি না। কারণ সেচ পাম্প মালিকরা গভীর নলকুপের ড্রেন নষ্ট করে দিচ্ছে। যাতে আমরা সেচের জন্য জমিতে পানি না পাই।

এ ব্যাপারে আজিজুল ও সাইদুল মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, ‘পল্লীবিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করলে আমরা কি করবো? আমরা সংযোগ নিয়ে জমিতে পানি সেচ দিচ্ছি।’ তবে গভীর নলকুপের কমান্ডিং এরিয়ার মধ্যে সেচ পাম্প স্থাপন বিষয়ে তারা কোন কথা বলতে রাজি হননি।

পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি রংপুর-২ বদরগঞ্জ যোনাল অফিসের ডিজিএম হামিদুল হক জানান, ‘অভিযোগ পেয়েছি। একটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।’ অসহাত্ব প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘একটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাতেই আমাকে অনেক জবাবদিহি করতে হচ্ছে। বাকিটা করতে পারবো কিনা জানি না।’

বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহি অফিসার ও উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি রাশেদুল হক জানান, ‘অভিযোগ পেয়েছি। ডিজিএমকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close