আকরামুল ইসলাম, সাতক্ষীরা

  ১৪ আগস্ট, ২০১৮

খোলপেটুয়া নদীর বাঁধে ভাঙন

প্লাবিত হচ্ছে নতুন এলাকা পানিবন্দি ১৪ গ্রাম

সাতক্ষীরা খোলপেটুয়া নদীতে জোয়ারের পানির চাপে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে ১৪টি গ্রাম। এতে পানিবন্দি হয়েছে ২০ হাজারেরও অধিক মানুষ। এ ছাড়া ভেঙে গেছে প্রায় ৭০০ মাটির তৈরি ঘরবাড়ি, ভেসে গেছে পাঁচ হাজার বিঘা মৎস্য ঘের। ইতোমধ্যেই মানবেতর জীবন শুরু করতে হয়েছে স্থানীয়দের।

এদিকে পানির চাপে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। তবে সরকারিভাবে এখনো বাঁধটি সংস্কারের কোনো উদ্যোগই গ্রহণ করা হয়নি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

আশাশুনি উপজেলার ইউপি জনপ্রতিনিধি সূত্রে জানা যায়, গতকাল সোমবার দুপুরে খোলপেটুয়া নদীর জোয়ারের পানির চাপে থানাঘাটা এলাকায় বাঁধটি আবারও নতুন করে ভেঙে যায়। এতে প্লাবিত হয়েছে মাড়িয়াড়া, হাজরাকটি, থানাঘাটা, বকচরা, বিল বকচর, মহিশকুড়, বুড়াগারাটি, পুইজালা, বালিরচক, লক্ষিখালি, বয়েরসিং, লাঙ্গলদাড়িয়া, রাজারাটি ও বানিয়াখালি গ্রাম। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ। গত রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাঁধটি ভেঙে গেলে স্থানীয়ভাবে লোকজন নিয়ে সংস্কার করা হয়। তবে সেটি আবারও ভেঙে গেছে। মানুষের ঘরবাড়ি, মাছের ঘের, ফসলি জমি সবকিছুই তলিয়ে গেছে।

প্রশাসনের উদাসীনতার কথা আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা শাকিল জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো) একাধিক বার জানানো হলেও তারা এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। চারিদিকে মানুষের মাঝে আহাকার নেমে এসেছে। এরপর দেখা দিচ্ছে খাবার পানির সংকট, থাকার জায়গার সংকট। ইতোমধ্যে ৭০০ পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। তিনি আরো বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান এ বি এম মোস্তাকিম হোসেন ও নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাশরুফা বেগম ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ প্লাবিত এলাকা ঘুরে দেখেছেন। জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন তারা।

প্লাবিত এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম সরোয়ার জানান, খোলপেটুয়া নদীর তীরবর্তী মানুষের দুঃখের শেষ নেই। কখনো রাতের আধারে আবারও কখনো দিনের আলোতে আমাদের গৃহহীন হতে হয়। বাঁধ ভেঙে এলাকায় পানি প্রবেশ করে মুহূর্তের মধ্যেই সবকিছু বদলে দেয়। তবে পাউবোর্ড সব ঘটনা জেনেও কখনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয় না।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মো. ইফতেকার হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সচিবকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। তাদের আট লাখ টাকার জরুরি মুহূর্তের একটা ফান্ড থাকে। তা ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আরো আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যার কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। তা ছাড়া মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close