চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ০৭ জুন, ২০২০

চট্টগ্রামে করোনা এখন গ্রামমুখী

শহরের চেয়ে উপজেলাগুলোয় শনাক্তের হার বেশি

চট্টগ্রামে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকেই আক্রান্তদের বেশির ভাগই ছিল নগরের মানুষ। আশপাশের উপজেলার চেয়ে এই সংখ্যা অন্তত তিন-চার গুণ বেশি ছিল। গত দুই দিন থেকে বদলে যাচ্ছে এই চিত্র। গত দুই দিনই নগর ছাড়িয়ে তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছে গ্রামাঞ্চলের শনাক্তরা। চট্টগ্রামের তিন ল্যাবে করোনা নমুনা শনাক্ত হওয়া তালিকায় এমন চিত্রই দেখা গেছে।

এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য বিভাগ মনে করছে, শহর ছাড়িয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। তবে স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট অনেকের ধারণা, ঈদুল ফিতরের পর থেকে লকডাউন শিথিল করায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে; যা আগামীতেও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি জানান, ঈদের মধ্যে অনেকেই নিজ বাড়িতে গেছেন। আবার লকডাউন শিথিল হওয়ার পর অনেকেই শহর থেকে গ্রামের পাড়ি দিয়েছেন, অনেকেই ঘুরতেও গেছেন। এ কারণেও গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে করোনার প্রাদুর্ভাব। এ মুহূর্তে বাসায় থাকতে হবে। বাইরে বের হওয়া যাবে না। ঘোরাঘুরি করা মোটেও উচিত নয়।

তিনি আরো বলেন, এত দিন গ্রামে আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ২০-২৫ শতাংশ। এই হার ধীরে ধীরে বাড়ছে। এমন পরিস্থিতি বজায় থাকলে সামনে আরো বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা এ চিকিৎসকের।

গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে নতুন করে আরো ১৪০ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। যাদের মধ্যে রয়েছে পুলিশ, র‌্যাব, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীও। তবে আক্রান্তের তালিকায় যোগ দিয়েছেন চন্দনাইশ পৌরসভার চার কর্মকর্তা-কর্মচারী। নতুন শনাক্ত হওয়া ১৪০ জনসহ এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৮০৯ জনে। গতকাল শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।

চট্টগ্রামের তিন ল্যাবে মোট ৫৯৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে ১৪৩ জনের ফলাফল পজিটিভ আসে। তার মধ্যে একজন রাঙামাটি জেলার। বাকি ১৪২ জনই চট্টগ্রামের। তবে তাদের মধ্যে দুজন দ্বিতীয়বার নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ রয়েছে; যা বাদ দিয়ে ১৪০ জনই চট্টগ্রামের নতুন শনাক্ত হয়। তাদের মধ্যে ৭১ জনই ৮ উপজেলার। বাকি ৬৯ জন মহানগরের। শনাক্তদের মধ্যে শুধু চন্দনাইশ উপজেলায়ই রয়েছে ২০ জন। আগের দিনও একই উপজেলায় শনাক্ত হয়েছে ২২ জন। এ ছাড়া নতুন শনাক্তের মধ্যে বোয়ালখালী ও আনোয়ারা উপজেলায় ১৬ জন করে রয়েছে।

তথ্যমতে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) ল্যাবে বৃহস্পতিবার মোট ১৫৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তার মধ্যে ৫০ জনের ফলাফল পজিটিভ আসে। যাদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর ৪৫ জন এবং উপজেলার পটিয়ায় দুই এবং কর্ণফুলীতে তিনজন রয়েছে। শনাক্তদের মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক-নাস ও স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ^বিদ্যালয়ের (সিভাসু) ল্যাবে ১৬২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে ৫৩ জনের ফলাফল পজিটিভ আসে। তার মধ্যে একজন রাঙামাটির জেলার। বাকি ৫২ জনই চট্টগ্রামের। যাদের মধ্যে দুজনের ফলাফল দ্বিতীয়বার পজিটিভ শনাক্ত হয়। বাকি ৫০ জনই নতুন শনাক্ত। তাদের মধ্যে মহানগরের ছজন বিভিন্ন উপজেলার ৪৪ জন রয়েছে। এদের মধ্যে র‌্যাব-৭-এর এক সদস্যও রয়েছেন। রয়েছেন উপজেলার চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী।

আর ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডি ল্যাবে ২৭৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তার মধ্যে ৪০ জনের ফলাফল পজিটিভ আসে। যাদের সবাই চট্টগ্রাম জেলার বাসিন্দা। এদের মধ্যে মহানগরের ১৮ জন এবং উপজেলার ২২ জন রয়েছে। তার মধ্যে শুধু চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদের চারজনসহ ১৯ জন রয়েছে। এ ছাড়া রাঙ্গুনিয়া উপজেলার স্বাস্থ্যকর্মীসহ রয়েছেন আরো তিনজন।

করোনা কর্নার

মোট আক্রান্ত : ৩ হাজার ৮০৯ সুস্থ : ২৬৭ জন

মৃত্যু : ৯০ জনের

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close