আব্দুল আলীম, নারায়ণগঞ্জ

  ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস

জনবল সংকটে সেবা নিশ্চিত করতে হিমশিম

ফায়ার সার্ভিস বিভাগ দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। এই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব শুধু আগুন নেভানো নয়, তার চেয়ে আরো ব্যাপক। যেকোনো দুর্ঘটনা, নৌকাডুবি, জনসাধারণের বড় বিপদ সৃষ্টি হলেই অনেক ক্ষেত্রেই ফায়ার সার্ভিসকে এগিয়ে আসতে হয়। দমকল কর্মীরা জীবনের ঝুঁকি কাজ করেন, তারা দরকারি ছুটিছাঁটাও পান না। নারায়ণগঞ্জ শিল্পনগরী হওয়ায় এখানে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা অনেক বেশি। নারায়ণগঞ্জের ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলোকে সব সময় সক্রিয় থাকতে হয়। তবে জনবল কম থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই আগুন নেভাতে তাদের হিমশিম খেতে হয় ফায়ার সার্ভিস ইউনিটগুলোকে। কাম্য মাত্রার সেবাও নিশ্চিত করা যায় না। এই মহানগরীতে ফায়ার সার্ভিসের সেবা সম্পর্কে অনুসন্ধানে নেমে জানা গেছে এসব তথ্য।

নারায়ণগঞ্জ জেলায় চারটি প্রথম শ্রেণির স্টেশন ও চারটি দ্বিতীয় শ্রেণির স্টেশন রয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলায় প্রায় ২২৮ সদস্যের জনবল থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ১২৪ জন সদস্য। এই স্বল্পসংখ্যকদের দিয়ে পুরো জেলা সামলানো অনেক সময়ই সম্ভব নয়।

দেখা যায়, বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে অন্য জায়গা থেকে জনবলের জোগান দিতে হয়। ততক্ষণে নানা ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কারণ এ অল্পসংখ্যক জনবল দিয়ে বড় ঘটনা সামাল দেওয়া সম্ভব হয় না। মন্ডলপাড়া ফায়ার স্টেশন শহরের একটি ফার্স্ট ক্লাস ফায়ার স্টেশন হওয়ায় এখানে জনবল থাকার কথা ছিল ৩৫ জন। অথচ এই স্টেশনের জনবল মাত্র ২২ জন। দ্বিতীয় শ্রেণির স্টেশনগুলোতে দেখা যায় ২২ জন করে সদস্য থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ৮ থেকে ১৬ জন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ডলপাড়া স্টেশনের এক ফায়ারম্যান বলেন, ‘আমরা নিজেদের ছুটি বাদ দিয়ে ডিউটি করি। বছরে একটা বিশেষ দিন ঈদে বাড়িতে যাব, সেই ছুটিটাও পাই নাই। এই জনবল সংকটের কারণে আমাদের অনেকেই বাৎসরিক ছুটিটাও পাই না। আবার আমাদের কোনো কাজে যেতে হলে আশপাশের স্টেশন থেকেও জনবল আনতে হয়।’

মন্ডলপাড়া ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার সানাউল হক বলেন, ‘আমাদের ছয়টা গাড়ি দেওয়া হয়েছে। একেকটা গাড়ি সামলাতে ছয়জন করে লোকের প্রয়োজন। সবকটি গাড়ি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে আমাদের কমপক্ষে ৩৫ জন সদস্য থাকা প্রয়োজন। অথচ আমাদের লোকই আছে মাত্র ২২ জন। দেখা যায়, জনবল সংকটের ফলে অনেক সময় ফায়ারম্যানরা ছুটিও পায় না ঠিকমতো। এমনকি আমি নিজেও অনেক বছর ধরে ঈদে ছুটি পাইনি। প্রয়োজনীয় বিশ্রাম না পাওয়ায় দায়িত্ব পালনে অসুবিধায় পড়তে হয়।’

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল আরেফীন বলেন, নারায়ণগঞ্জের মতো বড় শিল্পনগরী হিসেবে জনবলের আরো প্রয়োজন, তবে সারা বাংলাদেশেই মাত্র আট হাজার ফায়ারম্যান রয়েছেন এবং তার মধ্যে মাত্র ২৫ জন ডুবুরি। আসলে নদীপথে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায়িত্ব নৌবাহিনীর। কত দিনের মধ্যে এই জনবল সংকট সমাধান হতে পারে তা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, সারা দেশে ফায়ারম্যান নিয়োগ চলছে। আশা করি, শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close