ক্রীড়া ডেস্ক
রোনালদোর ৯০০ গোলের মাইলফলক
ফুটবল মাঠে এখন যেন শুধু রেকর্ড গড়তেই নামেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। সেই ধারাবাহিকতায় আরো একটি অনন্য কীর্তিতে নাম লেখালেন পর্তুগিজ এ তারকা। পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ারে ৯০০তম গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন ৩৯ বছর বয়সি এ তারকা। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে উয়েফা নেশন্স লিগের ম্যাচে গোল করে এ কীর্তিতে নাম লেখান রোনালদো। বৃহস্পতিবার উয়েফা নেশন্স লিগের চতুর্থ আসরের প্রথম দিনে ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হয় পর্তুগাল। ম্যাচ শুরুর সপ্তম মিনিটেই দিয়োগো ডালোটের গোলের এগিয়ে যায় পর্তুগিজরা। ম্যাচের ৩৪তম মিনিটে নুনো মেন্দেসের পাস থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন রোনালদো। আর তাতেই বিশ্বের প্রথম ফুটবলার হিসেবে তিনি পেশাদার ক্যারিয়ারে ৯০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেন।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের এটি রোনালদোর ১৩১তম গোল। পর্তুগালের হয়ে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে তিনি খেলছেন ২১৩তম আন্তর্জাতিক ম্যাচ। পর্তুগিজ তারকার বাকি গোলগুলো ক্লাবের হয়ে। স্পোর্টিং সিপি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, রিয়াল মাদ্রিদ, জুভেন্টাস ও সর্বশেষ আল নাসরের হয়ে ১০২৫ ম্যাচ খেলে ৭৬৯ গোল করেছেন রোনালদো। এর মধ্যে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ৯ বছরের ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বেশি গোল করেছেন। লস ব্ল্যাঙ্কোসদের জার্সিতে রোনালদোর গোল সংখ্যা ৪৫০। এছাড়া ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ১৪৫, জুভেন্টাসের হয়ে ১০১ ও আল নাসরের হয়ে করেছেন ৬৮ গোল। বাকি ৫ গোল করেছেন পেশাদার ক্যারিয়ার শুরুর বয়সে পর্তুগিজ ক্লাব স্পোর্টিং সিপির হয়ে। পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত আর কোনো ফুটবলার ৯০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করতে পারেননি। ৮৩৮ গোল করে তালিকার দুয়ে আছেন তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি। ৭৬২ গোল করে তিনে ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলে।
এদিকে পর্তুগালের ইউরো জেতা বিশ্বকাপ জেতার সমান। পর্তুগালের হয়ে আমি এর মধ্যে দুটা ট্রফি (ইউরো ও নেশন্স লিগ) জিতেছি, যা আমি জিততে চেয়েছিলাম। আমি এর দ্বারা অনুপ্রাণিত নই, এটি ভিন্ন...।
বিশ্বকাপ ও ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবল বিশ্বের সেরা দুটি প্রতিযোগিতা। তবে নিঃসন্দেহে মহাদেশীয় আসরের চেয়ে বিশ্বকাপ অনেক এগিয়ে। তবে মাঝেমধ্যেই ইউরোপিয়ান কিছু খেলোয়াড় ইউরোকে এগিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। এবার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো পর্তুগালের ইউরো জয়কে বিশ্বকাপের সমান বলেই দাবি করেছেন। ইতিহাসের প্রথম ফুটবলার হিসেবে করেছেন ৯০০ গোল।
ম্যাচ শেষে রোনালদো বলেছেন, ‘পর্তুগালের ইউরো জয় বিশ্বকাপ জয়ের সমান।’ পর্তুগালের ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাফল্য ২০১৬ সালের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জয়। যে সাফল্যের অন্যতম কারিগর রোনালদো। যদিও ফাইনালে চোট পাওয়ায় প্রথমার্ধের মাঝেই মাঠ ছাড়তে হয়েছিল তাকে। তবে সতীর্থরা ঠিকই শিরোপা উপহার দিয়েছিলেন তাকে।
১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপে তৃতীয় হলেও পর্তুগালের উত্থান মূলত ২০০০ সালের ইউরো থেকে। লুইস ফিগোর দলটি সেবার গ্রুপ পর্বে তিনটি ম্যাচ জিতেই বিশ্বকে চমকে দেয়। সেবার সেমিফাইনাল খেলে তারা। ফিগোর দলটি পরের ইউরোতে খেলে ফাইনালও। কিন্তু ফাইনালে অবিশ্বাস্যভাবে গ্রীসের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয় তাদের। সেই অধরা স্বপ্ন পূরণ হয় ২০১৬ সালে। সেই শিরোপাকে বিশ্বকাপ সমতুল্য বলছেন পর্তুগাল অধিনায়ক রোনালদো, পর্তুগালের ইউরো জয় বিশ্বকাপ জয়ের সমান। পর্তুগালের হয়ে আমি এর মধ্যে দুটা ট্রফি (ইউরো ও নেশন্স লিগ) জিতেছি, যা আমি জিততে চেয়েছিলাম। আমি এর দ্বারা অনুপ্রাণিত নই, এটি ভিন্ন...।
৯০০ গোলের মাইলফলক নিয়ে বলেছেন, আমি ফুটবল উপভোগ করে অনুপ্রাণিত হই এবং রেকর্ড স্বাভাবিকভাবেই আসে। আমি রেকর্ড ভাঙি না... তারা শুধু আমাকে শিকার করে। ৯০০ গোল অন্য যেকোনো মাইলফলকের মতো মনে হয়, কিন্তু শুধু আমি জানি এটাকে ৯০০ করতে প্রতিদিন পরিশ্রম করা কতটা কঠিন। এটি আমার ক্যারিয়ারে অনন্য এটি মাইলফলক, আমি খুবই গর্বিত। আমি সাড়ে ৩৯ বছর বয়সি, সবকিছু ঠিকঠাক করার জন্য আমাকে অনেক মনোযোগী হতে হবে। অনেক ডেডিকেশন লাগে। এ কারণেই, যখন এ রেকর্ডগুলো হয়, আমি বেশ আবেগপ্রবণ হয়ে যাই, যোগ করেন রোনালদো।
"