ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত সাগরিকারা

গোল করা নিয়ে কোচ কী বলেছিলেন আপনাদের? জোড়া গোলদাতা সাগরিকাকে এ প্রশ্ন করতেই পাশ থেকে কোচ সাইফুল বারী টিটু কৌতুকপূর্ণ হাসিতে বলতে শুরু করলেন, ‘বলো, বলো, কোচ বলেছেন, হাতুড়ি রেডি আছে’। টিটু কথা শেষ করতে পারলেন না। সাগরিকা হাসিমাখা মুখে বলে উঠলেন, ‘যদি গোল না হয়, হাতুড়ি দিয়ে মারা হবে’। সংবাদ সম্মেলনে কোচণ্ড খেলোয়াড়ের কথা শুনে পড়ে গেল হাসির রোল। এমন হাসি প্রত্যাশিতই ছিল। যে নেপালকে হারিয়ে গত বছর সাফ অনূর্ধ্ব-২০ উইমেনস চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ; কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে শুক্রবার তাদেরকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ উইমেনস চ্যাম্পিয়নশিপে শুভ সূচনা করল বাংলাদেশ। আজ রবিবার রাউন্ড রবিন লিগে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিক বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে ভারত। খেলাটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় ৭টায়। দিনের আরেকটি খেলা মোকাবিলা করবে নেপাল-ভুটান। খেলাটি শুরু হবে বিকাল ৩টায়।

জয়ের ব্যবধান বড় হতে পারত আরো। কখনো পোস্টের বাধায়, কখনওবা তাড়াহুড়ো করে সাগরিকা, পূজা দাসদের নেওয়া শট খুঁজে পায়নি ঠিকানা। তবে শেষ পর্যন্ত জয়ে শুরু পাওয়ার স্বস্তি টিটুর কণ্ঠে। জেতাটা আসলেই জরুরি ছিল। প্রথম ম্যাচ জেতা মানে ফাইনালের পথে বড় একটা পদক্ষেপ। প্রত্যাশা অনুযায়ী কখনই খেলা হয় না। মেয়েরা অনেক চেষ্টা করেছে, আমার মনে হয় ওদের যা কিছু ছিল, তার সবটুকু দিয়েই চেষ্টা করেছে। শুরুতে যদি আমরা ওই গোলগুলো করতে পারতাম ওই গোলগুলো না হওয়া; বারে লাগা, সুযোগগুলো যদি আমরা কাজে লাগাতে পারতাম, তাহলে বিষয়গুলো অন্যরকম হতো।

উদ্বোধনী দিনে প্রথম ম্যাচে ভুটানকে ১০-০ গোলে উড়িয়ে যাত্রা শুরু করেছে ভারত। নেপাল ম্যাচের ব্যস্ততা থাকায় ওই ম্যাচ পুরোপুরি দেখা হয়নি টিটুর। তবে তারও মনে হচ্ছে, ভারতের শক্তিশালী আক্রমণভাগ নিয়ে কাজ করতে হবে তাকে। এখন গিয়ে আমি ওদের ম্যাচটি দেখব। তবে যতটুকু শুনেছি, ‘স্কোরলাইন ১০-০, এটা অবশ্যই অনেক বড় বিষয়। নিশ্চয় ওদের ফিনিশিং ভালো। ওদের নাম্বার ৭ (পূজা) এবং ১১ (নেহা) শুনেছি দুটা উইঙ্গার বেশ ভালো। নাম্বার ১০ (নিতু লিন্ড) ভালো। কাজ করতে হবে আমাদের।’

হারের পর নেপাল কোচ বাল গোপাল সাহু ঘুরেফিরে বাংলাদেশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। শারীরিক শক্তি, সামর্থ্যে ও কৌশলগত দিক থেকে স্বপ্না-সাগরিকাদের এগিয়ে রাখছেন তিনি। প্রতিপক্ষ কোচের প্রশংসা বাড়তি প্রাপ্তি হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ কোচ টিটু।

তিনি বলেন, ‘আমি যতদূর জানি, নেপালের খেলোয়াড়রা শারীরিকভাবে শক্তিশালী, কেননা ওরা পাহাড়ি। তো তারা যখন শারীরিকভাবে আমাদের শক্তিশালী বলে যে গতিতে আসলে আমাদের মেয়েরা খেলেছে, এফোর্টটা কখনো থামেনি, কখনো মনে হয়নি মেয়েরা দাঁড়িয়ে গেছে, দুই গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর কখনো এমন মনে হয় না যে, খেলাটা এখন একটু স্লো করি। ওদের কখনো এরকম মনে হয়নি। বরং ওরা জানে যে, আবারও ওদের আক্রমণে উঠতে হবে এবং এটাই মেয়েদের মানসিক শক্তির জায়গা।’ পোস্টের বাধায় শুরুতে হতাশ হওয়ার পর সাগরিকা ৪০তম মিনিটে খোলেন ম্যাচের ডেডলক। দুই মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মুনকি আক্তার। দ্বিতীয়ার্ধে সুকরিয়া মিয়া নেপালকে ম্যাচে ফেরালেও সাগরিকার দ্বিতীয় গোলে সহজ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশৈংকল থেকে উঠে আসা এ উঠতি ফরোয়ার্ড জানালেন শুরুর জড়তা কিভাবে কাটিয়ে উঠেছিলেন তারা। নানা বাধা পেরিয়ে নিজের উঠে আসার গল্পও শোনালেন এক ফাঁকে। প্রথমে ভয় লাগছিল, ওরা (নেপাল) কিভাবে খেলে, আমরা তো ওদের খেলা দেখিনি। পরে খেলতে খেলতে বুঝতে পেরেছি- আমরাও পারব। কেন পারব না? তারপর আমাদের খেলা ভালো হয়েছে। অনেক ভালো লেগেছে যে, আমি দুটা গোল করেছি। পরের ম্যাচে আরো বেশি গোল করার চেষ্টা করব।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close