সোলায়মান জয়

  ২৬ নভেম্বর, ২০২২

তালহার নতুন বই

তালহা এবার প্রথম শ্রেণিতে উঠল। সারা দেশের সরকারি স্কুলে এক দিনে বই দেওয়া হবে। এজন্য প্রতি স্কুলেই বই প্রদান অনুষ্ঠান হবে।

তালহার খুশিতে চোখে ঘুম নেই। রাতে দাদুর কাছে শুয়ে হাজারটা প্রশ্ন করছে দাদুকে...

- আচ্ছা দাদু, তুমিও কি আমাদের স্কুলে পড়েছো?

- না দাদুভাই। আমি পড়েছিলাম আমাদের গ্রাম থেকে আরো তিন গ্রাম দূরে। আমাদের হেঁটে স্কুলে যেতে হতো। তখন এখনকার মতো গ্রামে গ্রামে স্কুল ছিল না। সঙ্গে ছিল না চলাফেরা করার কোনো গাড়ি। অনেক দূরের পথও হেঁটে যেতে হতো।

দাদুর এসব কথা শুনতে শুনতে তালহা ঘুমিয়ে পড়েছে। সকালবেলা বাবার সঙ্গে বই আনতে স্কুলে যাবে। ঘুম ভাঙল মিষ্টি পাখির কিচিরমিচির ডাকে। মা এসে বলল- স্কুলে যাবে না তালহা? ওই শুনো তোমাদের স্কুলের মাইকের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। তোমার বাবাও তৈরি হচ্ছে। তাড়াতাড়ি তুমিও তৈরি হয়ে নাও।

তালহা এক লাফে বিছানা ছেড়ে উঠে পড়ল। দ্রুত হাত-মুখ ধুয়ে তৈরি হয়ে খাবার টেবিলে বসে পড়ল। বাবা-দাদা-দাদু-তালহা একসঙ্গে খেতে বসল। পাশে বসে তালহা বাবাকে প্রশ্ন করতে লাগল...

- আচ্ছা বাবা-আমাদের নতুন বই কেন দেবে?

- তোমাদের নতুন বই দেবে যেন তোমরা নতুন বই পাওয়ার আনন্দে মন দিয়ে বেশি বেশি পড়তে পারো।

খাওয়া শেষ করে বাবার সঙ্গে স্কুলে পৌঁছে গেল তালহা। সব বন্ধুও এসেছে। সঙ্গে কারো বাবা, কারো মা। আমরা সামনে সারি পাতা চেয়ারে বসলাম। স্যাররা অনেক কথা বললেন। অবশেষে বই বিতরণ শুরু হলো। প্রথমেই আমাদের বই দিচ্ছে। সবার রোল নম্বর অনুযায়ী ডাকা হচ্ছে। আমার রোল নম্বর ৯। একে একে ৫ ৬ ৭ ৮ রোলের সবার বই নেওয়া হলে মাইকে আমার ডাক এলো। তালহা বিন যুবায়ের। রোল নম্বর ৯। প্রথম শ্রেণি।

মাইকে নাম বলতেই বাবা আমাকে নিয়ে স্টেজে উঠলেন। হেডস্যার আমার হাতে বই দিয়ে বললেন- মন দিয়ে লেখাপড়া করবে। অনেক বড় হবে। আমাদের স্কুলের নাম সারা দেশে ছড়িয়ে দেবে কেমন?

- জি স্যার বলে বই নিলাম।

এই প্রথম তালহা নতুন বইয়ের ছোঁয়া পেল। খুশিতে আত্মহারা হয়ে লাফাতে শুরু করল সে। নতুন বইয়ের ভেতর একটা সুবাস থাকে তালহা আজ প্রথম তা বুঝতে পারল। সেই সুবাস নিতে নিতে বাবার হাত ধরে বাড়ি ফিরে এলো।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close