আন্তর্জাতিক ডেস্ক
‘নওয়াজের বিরুদ্ধে রায় প্রমাণবিহীন’
আদালতে না নিয়ে সাবেক পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে আদিয়ালা জেলে বিচার কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সভাপতি শাহবাজ শরিফ। অন্য দুই অভিযোগে কারাগারেই নওয়াজের বিচার কার্যক্রম চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। নওয়াজের ভাই শাহবাজ সেই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছেন, কারা অভ্যন্তরে বিচার হয় সন্ত্রাসীদের। তার দাবি, নওয়াজ ও মরিয়মের ক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রমাণবিহীন অনুমানভিত্তিক রায় দেওয়া হয়েছে।
১৩ জুলাই লন্ডন থেকে আবুধাবি হয়ে দেশে ফিরেই গ্রেফতার হন দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত নওয়াজ ও তার কন্যা মরিয়ম। গ্রেফতারের পর নওয়াজকে রাখা হয় রাওয়ালপিন্ডির কেন্দ্রীয় আদিয়ালা কারাগারে। এরই মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের এক নোটিশে বলা হয়েছে, নওয়াজ শরিফকে আদিয়ালা জেলে পাঠানোর পর পরই তার বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম শুরু হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়েছে নওয়াজের ভাই ও পিএমএল-এন নেতা শাহবাজ শরিফ বলেছেন, ‘জেলে সন্ত্রাসীদের বিচার হয়।’
লন্ডনে কেনা বিলাসবহুল চারটি ফ্ল্যাটের মূল্য পরিশোধে দেওয়া অর্থের উৎস দেখাতে ব্যর্থ হওয়ার দায়ে ৬ জুলাই নওয়াজ শরিফকে ১০ বছরের কারাদন্ড দেন আদালত। মেয়ে মরিয়মকে দেওয়া হয় ৭ বছরের কারাদন্ড। আদালতের রায় ঘোষণার সময় পিতা ও কন্যা লন্ডনে অবস্থান করছিলেন।
শনিবার (১৪ জুলাই) লাহোরে এক সংবাদ সম্মেলনে শাহবাজ বলেন, ‘রায় নিজেই বলছে, নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ নেই।’ তার দাবি, নিছক অনুমানের ভিত্তিতে নওয়াজ ও মরিয়মকে কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।
লাহোরে নওয়াজ শরিফকে স্বাগত জানাতে সমবেত হওয়ার জন্য দলীয় সমর্থকদের ধন্যবাদ জানান শাহবাজ। তার অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের নিশ্চয়তা দেওয়ার পরও দলীয় নেতা ও সমর্থকদের লাহোরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। শাহবাজ দাবি করেন, ‘অঙ্গীকার অনুযায়ী, আমরা একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেছি। কিন্তু প্রশাসন সহিংসতার আশ্রয় নিয়েছে। পুলিশ আমাদের দলীয় কর্মীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে।’
উল্লেখ্য, নব্বইয়ের দশকে লন্ডনে পার্ক লেনের অ্যাভেনফিল্ড হাউসে চারটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কেনে নওয়াজের পরিবার। এ নিয়ে নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়। নওয়াজ শরিফ বরাবরই দুর্নীতির এই অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে আসছেন। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, ফ্ল্যাট কেনার অর্থের বৈধ উৎস দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন নওয়াজ। আদালত পিতা-কন্যার পাশাপাশি মরিয়মের স্বামী ক্যাপ্টেন সফদারকে এক বছরের কারাদন্ড দেন। কারাদন্ডের পাশাপাশি নওয়াজকে ৮০ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড ও মরিয়মকে ২০ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড জরিমানা করা হয়।
"