reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৬ মে, ২০২২

যেকোনো বয়সে হতে পারে আইবিডি রোগ

আইবিডি বা ‘ইনফ্লেমেটরি বাওয়েল ডিজিজ’ এমন এক ধরনের ব্যাধি, যা আমাদের পরিপাকতন্ত্রে মারাত্মক প্রদাহ সৃষ্টি করে থাকে। বিশ্বে প্রায় এক কোটি আইবিডি রোগী আছে। এই রোগ সম্পর্কে লিখেছেন শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান ও সহকারী অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ সায়েদুল আরেফিন

আইবিডি কী?

‘আইবিডি’ বা ‘ইনফ্লেমেটরি বাওয়েল ডিজিজ’ এমন এক ধরনের ব্যাধি, যা আমাদের পরিপাকতন্ত্রে মারাত্মক প্রদাহ সৃষ্টি করে থাকে। ‘আইবিডি’ বা ‘ইনফ্লেমেটরি বাওয়েল ডিজিজ’ দুই ধরনের।

আলসারেটিভ কোলাইটিস : এটি প্রধানত বৃহদন্ত্রে প্রদাহ বা আলসার তৈরি করে থাকে।

ক্রন্স ডিজিজ : এই রোগে পরিপাকতন্ত্রের যেকোনো অংশ (মুখ থেকে পায়ুপথ) আক্রান্ত হতে পারে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শুধু ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদন্ত্র অথবা উভয় অংশই আক্রান্ত হতে পারে।

লক্ষণ

* ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা

* পেটে ব্যথা

* মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়া

* মৃদু জ্বর অনুভূত হওয়া

* ক্লান্তি ভাব

* শরীরের ওজন কমে যাওয়া

* খাবারে অরুচি।

জটিলতা

* অন্ত্রনালি সরু হয়ে যাওয়া

* ফিস্টুলা

* চোখ, ত্বক ও অস্থিসন্ধির প্রদাহজনিত অসুখ

* কোলন ক্যানসার ইত্যাদি।

চিকিৎসা

‘আইবিডি’ সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য রোগ না হলেও নিয়মিত বিভিন্ন ওষুধ সেবনের মাধ্যমে এ রোগ সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণযোগ্য। ক্ষেত্রবিশেষে ‘আইবিডি’তে আক্রান্ত রোগীদের সার্জারিও প্রয়োজন হতে পারে।

কোথায় পাওয়া যাবে চিকিৎসা?

প্রতি সপ্তাহের সোমবার শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের বহির্বিভাগে আইবিডি ক্লিনিকে স্বল্পমূল্যে নিয়মিত এ রোগের চিকিৎসা করা হয়। এ ছাড়া এ রোগে কেউ আক্রান্ত হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগে এ রোগের চিকিৎসা করা হয়।

রোগীর জীবনধারায় কী কী পরিবর্তন আনতে হবে?

* যেসব খাবার ও পানীয় রোগের উপসর্গগুলো বাড়িয়ে দেয়; যেমন- দুধ ও দুধের তৈরি খাবার, খোলা খাবার বা স্ট্রিট ফুড পরিহার করবেন।

* ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকবেন।

* মানসিক চাপ হ্রাস করার চেষ্টা করবেন, যদিও মানসিক চাপের কারণে ‘আইবিডি’ রোগ হয় না। তবে এটি রোগের লক্ষণ ও উপসর্গকে বাড়িয়ে দিতে পারে। ব্যায়াম, যোগব্যায়াম এ ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।

লক্ষণীয়

* চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনোই ওষুধ বন্ধ করা বা ডোজ পরিবর্তন করা উচিত নয়। ওষুধের সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে চিকিৎসককে জিজ্ঞেস করবেন। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

* মনে রাখবেন, আপনি যত বেশি আপনার রোগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন, আপনার রোগ আপনাকে তত কম নিয়ন্ত্রণ করবে এবং আপনার জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।

* রোগের কোনো লক্ষণ না থাকলেও নিয়মিত চিকিৎসকের ফলোআপে থাকবেন। জটিলতা দেখা দিলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।

* রোগের তীব্রতা এবং লক্ষণগুলোর ওপর নজর রাখবেন। চিকিৎসায় নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় রোগের লক্ষণ বা উপসর্গ আবার দেখা দিলে চিকিৎসককে অবহিত করবেন। কারণ এই লক্ষণগুলো সব সময় ‘আইবিডি’র কারণে না-ও হতে পারে। এগুলো খাদ্যসংক্রান্ত জটিলতা অথবা অন্ত্রনালিতে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস আক্রমণের কারণেও হতে পারে।

* আপনার রোগ এবং সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে চিকিৎসকের কাছ থেকে অবহিত হবেন।

* আপনার রোগ কতটা ব্যাপক, এরই মধ্যে চিকিৎসার জন্য যে পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করা হয়েছে এবং বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি কী কী আছে, তা চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close