অধ্যাপক ডা. এস এম এ এরফান
কোলন ক্যানসারে সচেতন হোন
কোলন অর্থাৎ বৃহদান্ত্রে ক্যানসার একটি সাধারণ ক্যানসার। বাংলাদেশে যদিও এর সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের পরিসংখ্যান মতে, এটি নারী-পুরুষের ক্যানসার, যা মৃত্যুর দ্বিতীয় কারণ। এর কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও দ্রুতই তা বাংলাদেশে অন্যতম মৃত্যুঝুঁকিতে পরিণত হচ্ছে। তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে এখনই।
কোলন ক্যানসারের লক্ষণ : কোলন ক্যানসার সাধারণত ৪০ ঊর্ধ্ব ব্যক্তিদেরই হয়। রোগীর সাধারণত পেটব্যথা,ক্ষুধামান্দ্য, পেট ফাঁপা ফাঁপা লাগা, ওজন কমে যাওয়া, রক্তশূন্যতা ইত্যাদি হয়। কালো পায়খানা হতে পারে, মলের সঙ্গে রক্ত বা রক্ত ও আম
মিশ্রিত পায়খানা হতে পারে। মলত্যাগের পরও মনে হতে পারে ভালোভাবে মলত্যাগ হয়নি, আবার টয়লেটে যেতে হবে। এ ছাড়া রোগ ছড়িয়ে পড়লে আরো অনেক সমস্যা হতে পারে। যেমন ক্যানসার রোগ নির্ণয়ের সর্বোত্তম পরীক্ষা হচ্ছে কোলনস্কোপি। বর্তমানে আমরা অতি সহজেই কোলনস্কোপি করতে পারি। রেকটাম অর্থাৎ কোলনের নিচের অংশে টিউমার হলে কোলনস্কোপির প্রয়োজন হয় না। এ ব্যাপারে সিগময়ডোস্কোপি নামক অপেক্ষাকৃত সহজ পরীক্ষা করা যায়। কোলনস্কোপি/সিগময়ডোস্কোপির মাধ্যমে সরাসরি টিউমার দেখা যায়। সেখান থেকে টিস্যু নিয়ে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যায় ক্যানসার কিনা। তারপর অন্যান্য পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করা হয় চিকিৎসার ধরন।
কোলন ক্যানসার ভালো হওয়ার একমাত্র চিকিৎসা হচ্ছে অপারেশন। অপারেশনের মাধ্যমে ক্যানসার আক্রান্ত অংশ এবং এর আশপাশে কেটে ফেলে দেওয়া হয়। এর সঙ্গে ক্যানসারের অবস্থাভেদে যুক্ত করা হয় কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি।
আমাদের দেশে ডাক্তার কোনো রোগীকে ক্যানসারে আক্রান্ত বললে সবাই মনে করেন সব শেষ হয়ে গেল। বাস্তবে তা নয়। বর্তমানে কোলন ক্যানসারের খুব ভালো চিকিৎসা আছে। শর্ত একটি তা হলো প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয়।
ওপরে উল্লিখিত লক্ষণগুলো দেখা দিলেই একজন কোলোরেক্টাল সার্জনের শরণাপন্ন হতে হবে।
লেখক :
জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হসপিটাল
জিগাতলা, ঢাকা
"