বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম আবার বাড়ল। লিটারপ্রতি ৪ টাকা বাড়িয়ে ১৬৭ টাকা করা হয়েছে। খোলা সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি ২ টাকা কমিয়ে ১৪৭ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। নতুন সিদ্ধান্ত অনুসারে ৫ লিটার বোতলজাত তেলের দাম ৮০০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়াল ৮১৮ এবং প্রতি লিটার বোতলজাত পাম অয়েলের দাম ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে মন্ত্রণালয়ে ব্রিফিংয়ে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল হক টিটু। আজ শুক্রবার থেকেই তেলের নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। বলেন, দাম বাড়ার নতুন এ সিদ্ধান্ত মিলগেট (পাইকারি বিক্রেতারা যে দামে কিনবেন) থেকে এখন থেকে কার্যকর হবে। এর আগে সকালে ট্যারিফ কমিশন, বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বৈঠক করে। এর আগে ব্যবসায়ীরা ভোজ্যতেলের দাম লিটারপ্রতি ১০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ভোজ্যতেল আগের দামে ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই। এছাড়া ব্যবসায়ীদের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব ট্যারিফ কমিশন নাকচ করে দেয়। তবে ভোজ্যতেলের মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে কমিশন তার নিজস্ব পর্যালোচনা অব্যাহত রাখে। ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রণালয়।

গত সোমবার বাণিজ্য সচিবকে সয়াবিনের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়ে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। এছাড়া ওই অ্যাসোসিয়েশন এক বিজ্ঞপ্তিতে লিটারপ্রতি ১০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করে ১৭৩ টাকা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে লেখা চিঠিতে বলা হয়, ‘আপনার সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি, ভোজ্যতেলের কাঁচামাল আমদানি, উৎপাদন পর্যায়ে ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে জারি করা এসআরওদ্বয়ের মেয়াদ ১৫ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে শেষ হচ্ছে। বিধায় ১৬ এপ্রিল ২০২৪ তারিখ থেকে বাজারে ভোজ্যতেল (পরিশোধিত পাম তেল ও পরিশোধিত সয়াবিন তেল) সরবরাহে ভ্যাট অব্যাহতি পূর্ববর্তী মূল্যে পণ্য সরবরাহ হবে।’

চিঠিতে ১৬ এপ্রিল থেকে বোতলজাত ১ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৭৩ টাকা, ৫ লিটার ৮৪৫ এবং খোলা ১ লিটার পাম তেলের দাম ১৩২ টাকা প্রস্তাব করা হয়। ট্যারিফ কমিশন প্রস্তাব নাকচ করায় এ দাম কার্যকর হয়নি। এরপর ১৬ এপ্রিল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্সে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, তেলে ৫ শতাংশ ডিউটি কমিয়েছিলাম, এতে ভোক্তা পর্যায়ে ১০ টাকা কমেছিল তেলের দাম। সেই ভ্যাট ছাড়ের এ মেয়াদ নির্ধারণ করা হয় ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত। আমাদের ট্যারিফ কমিশন এটা নিয়ে কাজ করছে। দেখা হচ্ছে মিলাররা কী দামে তেলের কাঁচামাল আনছেন তার দাম কেমন পড়ছে ইত্যাদি বিষয়ে। তবে তেলের দাম পূর্বের দামে ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই এটা বলতে পারি।

বর্তমান বাজারে বোতলজাত সয়াবিন ১৬৩ টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে। আর খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৪৯ টাকা লিটার। রোজার আগে গত ১ মার্চ যখন বোতলজাত ১ লিটার সয়াবিনের দাম ১০ টাকা কমিয়ে ১৬৩ টাকা করা হয়, তখন ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ৮০০ টাকা। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আলাদা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ভোজ্যতেল আমদানিতে শুল্ককর কমানোর ঘোষণা দেয়। এতে স্থানীয় পর্যায়ে পরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের উৎপাদন এবং ব্যবসা পর্যায়ে ভ্যাট পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হয়। ৫৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়ার পর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১০ টাকা কমিয়ে ১৬৩ টাকা নির্ধারণ করেছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

"