নোয়াখালী প্রতিনিধি

  ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

এ কথা বলেছি কি না, ভুলে গেছি

- একরামুল করিম

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিজের ছেলেকে ভোট না দিলে উন্নয়ন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী। গত মঙ্গলবার সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে একটি পথসভায় তিনি এলাকাবাসীকে এ হুমকি দেন। ছেলেকে ভোট না দিলে উন্নয়ন বন্ধ করে দেওয়ার যে বক্তব্য দিয়েছেন একরামুল করিম চৌধুরী, সে সম্পর্কে তার ভাষ্য- কোথায় কী কারণে তিনি এ কথা বলেছেন, সেটা তার স্মরণে নেই।

গতকাল বৃহস্পতিবার একটি জাতীয় দৈনিকের অনলাইন পোর্টালের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এমপি একরামুলের ওই বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে এ কথা বলেন তিনি। একরামুল করিমের ছেলে আতাহার ইশরাক ওরফে সাবাব চৌধুরী এবার সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। এ নির্বাচনে সাবাবের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হলেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও টানা তিনবারের উপজেলা চেয়ারম্যান এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী (সেলিম)। আগামী ৮ মে এখানে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

মঙ্গলবার সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে একটি পথসভায় এমপি একরামুলকে বলতে শোনা যায়, ‘যে এলাকা থেকে ভোট কম দেবেন, সেই এলাকায় আমি কোনো উন্নয়নে হাত দেব না। সরাসরি কথা। গিভ অ্যান্ড টেক। আমাকে দেবেন, আমি আপনাদের দেব।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমারে এমপি বানাইছেন। আমি তো বলছি, ৫ বছরের ক্ষমতায় আছি। এখন আমার মনমতো যদি উপজেলা চেয়ারম্যান বানান, আমার মিডলম্যান আমি আপনাদের উপহার দিয়ে গেলাম। আমি আজ এখানে এসে দাঁড়িয়ে কথা বলছি। পরে এখানের যেকোনো একটি দোকানে বসে আপনাদের সঙ্গে সুখ-দুঃখের কথা বলব।’

সুবর্ণচরে মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শিউলী একরাম বাজারে অনুষ্ঠিত পথসভায় একরামুল করিমের এ বক্তব্য স্থানীয়দের অনেকে মোবাইলে রেকর্ড করেন। কোন প্রেক্ষাপটে, কী কারণে তিনি এমন বক্তব্য দিলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে একরামুল বলেন, ‘এটা যারা লিখেছে, তারা বলতে পারে। যেদিনের ঘটনা বলছে, সেদিন তো আমি ১৪টা প্রোগ্রাম করেছি। কোথায়, কী কারণে, কী অ্যাঙ্গেলে এ কথা বলছি, সেটা আমার নিজেরও স্মরণ নেই। ওনারা (সাংবাদিকরা) লিখেছেন। সুবর্ণচর তো অনেক বড়। ম্যাক্সিমাম চরাঞ্চল। এখানকার বেশিরভাগ জায়গা-জমি জোতদাররা দখল করে রেখেছে সেই বিএনপি আমল থেকে।’ তিনি আরো বলেন, ‘এ জায়গাগুলোয় অনেক বড় বড় প্রকল্প আছে। এ প্রজেক্টের মাধ্যমে রাস্তাগুলো গেছে। তবে আমার যতটুকু মনে হয় এটার পেছনে ব্যাখ্যা আছে। এখন ব্যাখ্যা ছাড়া ওনারা (সাংবাদিকরা) একটা লাইন লম্বা অনেক কথার মধ্যে কোনো বক্তব্য নিয়ে যদি করে থাকে- এখন এইটা নিয়ে কোনো কথা তো আমার স্মরণেও পড়ছে না।’

এ পর্যায়ে আবারও বক্তব্যটি ব্যাখ্যা করতে বললে একরামুল বলেন, ‘ব্যাখ্যার তো কোনো কারণ দেখি না। আমি ওখানকার এমপি। আমি তো মানুষের উন্নয়নের কথা বলেই বলতেছি। আর আজকে আমি যদি একবারের এমপি হতাম এককথা। দিস ইজ মাই ফোর্থ টাইম। আমি চারবারের এমপি। আমার তো এ ধরনের কথা কোনো ইয়ে ছাড়া বলার কথা না।’ এছাড়া তিনি প্রশ্ন রাখেন, তারা (সাংবাদিক) সব কি এমপির পক্ষে? সব কি সরকারের পক্ষে? চারবারের নির্বাচিত এ সংসদ সদস্যের ভাষ্য, ‘আমি উইদাউট ইয়েতে কোনো কথা বলতে পারব না। আর এ ধরনের কথা আমার স্মরণেও পড়ছে না। ওনারা (সাংবাদিকরা) লিখেছে, এটার আমি প্রতিবাদও করিনি। কোনো কথাও বলিনি।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close