প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৯ জানুয়ারি, ২০২৪

ঝলমলে রোদেও তীব্র শীতের অনুভূতি

মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা গতকাল রবিবার পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় রেকর্ড করা হয়েছে। রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও আরেক দফা কমেছে। দিনে কুয়াশা কমে গিয়ে আকাশে ঝলমলে রোদ উঠলেও বিকেলে তীব্র শীতের অনুভূতি ফিরে আসে। ঢাকার তুলনায় মধ্যাঞ্চল থেকে উত্তরাঞ্চলের দিকে শীতের তীব্রতা আরো বেশি ছিল। বিশেষ করে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। শীত নিবারণে খড়কুটা জ্বালিয়ে অনেককে উষ্ণতা নিতে দেখা গেছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, আগামী কয়েক দিন একই ধরনের শৈত্যপ্রবাহ ও শীত অব্যাহত থাকতে পারে। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে দেশের উপকূলীয় এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, জানুয়ারির শেষের দিকে শীতের ধরনটা সাধারণত এমনই হয়। দিনে খটখটে রোদের উষ্ণতার আরাম। আর বিকেল গড়াতে হিমশীতল বাতাসের দাপট। কয়েক দিন ধরে আবহাওয়ার এ ধরনের সঙ্গে ঘন কুয়াশার চাদরও যোগ হয়েছে। বিকেলের পর দৃষ্টিসীমাজুড়ে কুয়াশা বাড়তে থাকে। পরের সকাল গড়াতে তা পাতলা হওয়া শুরু করে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান বলেন, আগামী দু-এক দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে শৈত্যপ্রবাহ এবং সারা দেশে শীত অব্যাহত থাকতে পারে। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে দেশের উপকূলীয় এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। দেশের বেশির ভাগ এলাকায় আকাশ মেঘলা হয়ে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।

চার দিন আগে উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি এলাকা দিয়ে যে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছিল, তা এরই মধ্যে দেশের অর্ধেকের বেশি এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ ছাড়াও গোপালগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, মৌলভীবাজার, চুয়াডাঙ্গা, যশোর ও কুষ্টিয়ার ওপর দিয়ে ওই শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ঘন কুয়াশার কারণে সড়ক, নৌ ও আকাশপথে যানবাহন চলাচলে সমস্যা হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

পঞ্চগড় : জেলার তেঁতুলিয়ায় গতকাল রবিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেডর্ক করা হয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর ৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রের্কড হয়। তেঁতুলিয়া প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক রোকনুজ্জামান বলেন, রবিবার সকাল ৯টায় ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে। ২০১৯ সারের পর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায় রেডর্কভুক্ত করা হয়েছে।

দিনাজপুর : উত্তরের জেলা দিনাজপুর ও পঞ্চগড়ে শৈত্যপ্রবাহ তীব্র রূপ ধারণ করেছে। ভোর ৬টায় জেলাগুলোয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কনকনে হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। সকাল থেকে এখন পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা রয়েছে চারপাশ। খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। রাস্তায় যানবাহন চলাচল করছে ধীরগতিতে এবং হেডলাইট জ্বালিয়ে।

দিনাজপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের আবহাওয়া সহকারী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘বেশ কয়েক দিন ধরে জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তবে এবার তীব্র শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েছে এই অঞ্চল। চলমান শৈত্যপ্রবাহ আরো কয়েকদিন স্থায়ী হতে পারে। শীতের কারণে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ শীতজনিত নানা রোগ।

বগুড়া : জেলার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। কয়েকদিন ধরে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সূর্যের দেখা মিলছে না। ঘন কুয়াশার কারণে রাতে ও সকালে সড়ক-মহাসড়কে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। শীত বেশি হওয়ায় আলুর খেতে পচা রোগ ধরায় চাষিরা শঙ্কায় রয়েছেন। হাসপাতালগুলোতে ঠাণ্ডাজনিত রোগী বাড়ছে। প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন : পঞ্চগড়, দিনাজপুর ও বগুড়া প্রতিনিধি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close