কাইয়ুম আহমেদ

  ২৮ জানুয়ারি, ২০২৪

রাজপথে সতর্ক থাকবে আ.লীগ

রাজপথের বিএনপিকে রাজপথেই মোকাবিলা করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সরকারবিরোধী আন্দোলন যাতে জোরালো এবং কর্মসূচি ঘিরে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে না পারে সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকবেন দলটির নেতাকর্মীরা। সন্ত্রাস নাশকতার মতো যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজনীতির মাঠ দখলে রাখতে নেতাকর্মীরা আগের মতোই রাজপথে অবস্থান অব্যাহত রাখবেন।

আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে না পারলেও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে সরকারকে সমস্যায় ফেলতে বিভিন্ন অপতৎপরতা ও অপকৌশলের আশ্রয় নিতে পারে বিএনপি। রাজপথে কর্মসূচি দিয়ে দলটি আবারও সন্ত্রাস, নাশকতার মতো কর্মকাণ্ড চালানোর চেষ্টা করতে পারে। ফাঁকা মাঠ পেলে বা কোনো ধরনের সুযোগ পেলে বিএনপি নেতাকর্মীরা আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে এমন আশঙ্কাও রয়েছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং যেকোনো অপতৎপরতা ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির অপচেষ্টা প্রতিহত করতে সরকার প্রস্তুত আছে। যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেবে। তবে সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও আগের মতো রাজপথে সতর্ক অবস্থানে থাকবে।

এরই অংশ হিসেবে গতকাল শনিবার রাজধানীতে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে টানা চতুর্থ দফায় সরকার গঠনের পর ঢাকায় আওয়ামী লীগের প্রথম সমাবেশ হলো। বিকেলা ৩টা ২০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে এই সমাবেশ শুরু হয়। বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগে ‘শান্তি ও গণতন্ত্রের’ এই সমাবেশের আয়োজন করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময় ওবায়দুল কাদের আগামী মঙ্গলবারও মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ৩০ জানুয়ারি বিএনপি নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করতে পারে। সেজন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সেদিন সারা দেশে সতর্ক অবস্থানে থাকবেন। দেশের সব মহানগর, জেলা ও উপজেলায় শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশ হবে।

ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, আমাদের বেশি টাকা দিয়ে আমদানি করতে হয়, বিক্রি করতে হয় তার চেয়ে কম দামে। ধৈর্যহারা হবেন না। শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখুন। দ্রব্যমূল্য কমে যাবে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় বসে পুরো টিম নিয়ে নেমে গেছেন জনগণের সংকট লাঘব করতে।

বর্তমান সরকারকে কোনো বিদেশি শক্তি ক্ষমতায় বসায়নি উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার সরকার জনগণ দ্বারা নির্বাচিত সরকার। দেখতে দেখতে ১৫ বছর। সামনে আছে আরো পাঁচ বছর। কবে হবে বিএনপির আন্দোলন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির নেতারা বিদেশিদের ভয় দেখান। ৪১.৮ পার্সেন্ট ভোটারের ভোটে শেখ হাসিনা সরকার নির্বাচিত করেছে। এটা জনগণের সরকার। কোনো বিশিদের সরকার না। বাংলাদেশের মানুষের ভোটে নির্বাচিত সরকার। তারা কালো পতাকা মিছিল করে। কালো পতাকা মানে কী, শোকের মিছিল। কালো পতাকা ভুয়া। বিএনপির নেতাকর্মীরা হতাশ, তারা আর তারেকের ফরমায়েশি কথায় কান দেয় না। খেলা একটা হয়ে গেছে। নির্বাচনের খেলা শেষ। এখন খেলা হবে রাজনীতির। এখন খেলা হবে আগুনসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে।

সমাবেশে মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, আওয়ামী লীগের দুর্ভাগ্য, সারা জীবন সংগ্রাম করতে হচ্ছে গণতন্ত্রের জন্য। বিএনপির গণতন্ত্র পছন্দ নয়। শেখ হাসিনার সঙ্গে আমরা সবাই আছি। নারীরা প্রমাণ করেছেন, তারা শেখ হাসিনার সঙ্গে আছেন।

মৎস্যজীবী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মদ সাইদুর রহমান বলেন, ভোট দিয়ে জনগণ শেখ হাসিনাকে দেশ পরিচালনার সুযোগ দিয়েছেন। তাই জনগণকে ধন্যবাদ। যারা কালো পতাকা মিছিল করছেন, একদিন তারা হাতে হারিকেন নিয়ে ফিরে যাবেন।

মহিলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী রহিমা আক্তার বলেন, আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি। ভবিষ্যতে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা বলেন, সবাইকে বিজয়ের শুভেচ্ছা। দলীয় স্বার্থে আমাদের এক থাকতে হবে।

যুব মহিলা লীগের সভাপতি ডেইজী সারোয়ার বলেন, বিএনপি-জামায়াত এই নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে।

গত বছর ২৮ অক্টোবরের পর এটাই বিএনপির প্রথম জমায়েত কর্মসূচি। এর আগে ২৮ অক্টোবরের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে সন্ত্রাস, নাশকতা তৈরি হয় এবং হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটে। এ বিষয়টিকে মাথায় রেখে সতর্ক অবস্থান নিতে আওয়ামী লীগও কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close