মতিউর রহমান মুন্না, গ্রিস থেকে

  ০৩ আগস্ট, ২০২২

গ্রিক সংসদে অনুমোদন

বছরে ৪০০০ বাংলাদেশি কর্মী যাবেন গ্রিসে

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ও গ্রিস সরকারের সঙ্গে কর্মী নিয়োগ-সংক্রান্ত একটি চুক্তি হয়েছিল। নানা জল্পনা-কল্পনার পর সেই চুক্তিটি গ্রিক সংসদে অনুমোদন হয়েছে। এ চুক্তি অনুযায়ী দেশটিতে পাঁচ বছরের জন্য ১৫ হাজার বাংলাদেশি কর্মীকে ভিসা দেওয়া হবে। বছরে ৪ হাজার কর্মী নেওয়া হবে।

এ ছাড়াও গ্রিসে থাকা অবৈধ ১৫ হাজার অভিবাসীদের ৫ বছরের ভিসা প্রদান করে একই আইনে বৈধতার আওতায় আনা হবে। এ ক্ষেত্রে অবৈধ অভিবাসীরা বৈধ হয়ে কৃষিশ্রমিক হিসেবে বছরে ৯ মাস কাজ করার সুযোগ পাবেন এবং নিজ দেশে তিন মাস বাধ্যতামূলক যাতায়াতের জন্য সুযোগও থাকবে। তবে কোন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এবং কারা এই বৈধতার আওতায় আসবে সে ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যায়নি। এ ছাড়া সমঝোতা চুক্তি এখন বাংলাদেশের মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায়। এরপরই ইউরোপের দেশটিতে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হবে।

এদিকে, এ চুক্তি বাস্তবায়নকে বাংলাদেশ সরকারের আরেকটি অর্জন বলে মনে করছেন অভিবাসন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে গ্রিসে কর্মী পাঠানো ও অনিয়মিতদের বৈধ করার চুক্তি বাংলাদেশ সরকারের যোগ্য নেতৃত্ব ও দূতাবাসের পরিশ্রমের ফল।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন, এই প্রক্রিয়ায় কৃষিশ্রমিক নিয়োগ সরকারি ব্যবস্থাপনায় হবে নাকি বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে হবে তা এখনো চূড়ান্ত না হওয়ায় আগ্রহীদের নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। পাশাপাশি বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা এবং প্রতারক চক্রের প্ররোচনার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

উল্লেখ্য, গ্রিসে বসবাস করা অনিয়মিত বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া দ্রুত এগোতে এবং বৈধ অভিবাসনের দরজা খুলে দিতে চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় সমঝোতা স্মারক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন গ্রিসের অভিবাসন ও শরণার্থীবিষয়ক মন্ত্রী নোতিস মিতারাচি এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদ। নানা জল্পনা-কল্পনার পর দুদেশের মধ্য হওয়া এই সমঝোতা স্মারক বিলটি অবশেষে বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) গ্রিক সংসদে পাস হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে গ্রিসে বাংলাদেশিদের স্বার্থ সংরক্ষিত হবে, মানসম্মত জীবনযাপন ও ন্যায্য বেতন-ভাতা প্রাপ্যতা নিশ্চিত হবে এবং বাংলাদেশ থেকে নতুন কর্মীরা নিরাপদে গ্রিসে এসে বৈধভাবে কাজ করতে পারবেন, মানব পাচারকারী ও দালাল দৌরাত্ম্য বন্ধ হবে।

এ প্রসঙ্গে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গ্রিস অনুমোদন দিলেও বাংলাদেশে সমঝোতা চুক্তিটির অনুমোদন প্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি। বাংলাদেশে এর চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে মন্ত্রিসভা। প্রক্রিয়াটি এখন শেষপর্যায়ে রয়েছে।

সচিব বলেন, গ্রিস হচ্ছে প্রথম ইউরোপীয় দেশ, যাদের সঙ্গে আমাদের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান-সংক্রান্ত একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। এটা আমাদের মন্ত্রিপরিষদে পেশ করার জন্য উপস্থাপন করেছি। আমরা আশা করছি, দ্রুতই এর অনুমোদন পেয়ে যাব। দুদেশেই যখন অনুমোদন শেষ হবে, তখন আবার বসে দূতাবাসের সহযোগিতায় আমরা কাজটা শুরু করতে পারব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close