নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৮ মে, ২০২১

টিকা উৎপাদন হবে দেশেই!

সম্ভাব্যতা দেখছে যুক্তরাষ্ট্র

প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধী যেসব টিকা এ পর্যন্ত বাজারে এসেছে সেগুলোর তিনটিই যুক্তরাষ্ট্রের উদ্ভাবিত। তবে এই টিকা বাংলাদেশেও উৎপাদন করা যায় কি না; সেই সম্ভাব্যতা যাচাই করে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে দেখা করে এ কথা জানান ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার।

বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী ও মার্কিন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের তাৎক্ষণিক চাহিদা পূরণের জন্য টিকা সরবরাহের বিষয়সহ করোনা মহামারি মোকাবিলায় দুই দেশের মধ্যে চলমান সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা করেন।

মিলার জানান, তার সরকার টিকার বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। ইতোমধ্যে দেশটির ওষুধ উৎপাদন প্রতিষ্ঠান মডার্না, ফাইজার ও জনসন অ্যান্ড জনসন তিনটি টিকা তৈরি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে টিকা সরবরাহে দক্ষিণ এশিয়ায় একটি আঞ্চলিক পদ্ধতি থাকা উচিত বলে মনে করে সে দেশের সরকার। মার্কিন সরকার বাংলাদেশে টিকা তৈরির সম্ভাবনাগুলো খতিয়ে দেখছে।

এদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মানবিক অভিযানের বার্ষিক যৌথ প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনা (জেআরপি) চালু করা, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি, ভ্যাকসিন ইস্যু ইত্যাদিসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক ও দ্বিপক্ষীয় ইস্যুতে বৈঠকে আলোচনা হয়। এ সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত জানান, রোহিঙ্গাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র আবার জেআরপিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখবে, যা আগামীকাল কার্যত চালু হবে। মিলার বলেন, ‘মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত জনগণের বোঝা বহন করতে আমেরিকা সব সময় বাংলাদেশকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে। এ সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসন বাংলাদেশের অগ্রাধিকার বলে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে সাফ জানিয়ে দেন। ভাসানচরে স্থানান্তরিত বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন পাওয়ার ওপরও জোর দেন শাহরিয়ার আলম।

বৈঠকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী চলমান ফিলিস্তিনি-ইসরায়েল সংকট নিয়ে বাংলাদেশের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে এ বিষয়ে ভূমিকা রাখা বাংলাদেশের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। যেমনটি সম্প্রতি ওআইসির কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন। গাজা উপত্যকায় রক্তপাত বন্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। দ্বিরাষ্ট্রীয় তত্ত্বে বিষয়টি সমাধানে বাংলাদেশের অবস্থা পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।

বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করতে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সময়মতো ভিসা ইন্টারভিউ সøট দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। বলেন, ভিসা সøট বন্ধ থাকায় বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। জবাবে মিলার বলেন, ‘লকডাউন পরিস্থিতি দ্বারা সৃষ্ট ব্যাকলগ সমাধানে দূতাবাস কাজ করছে। প্রতিমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা সম্পর্কিত মার্কিন সরকার কর্তৃক সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাংলাদেশের পুরো চিত্র ভালোভাবে প্রতিফলিত হয়নি। কারণ সরকার দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও বৈষম্য নিশ্চিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, ‘দেশে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের যেসব উদাহরণ প্রতিবেদনে দেওয়া হয়েছে, তা বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং সরকার দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close