reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

ভোজ্য তেল নিয়ে ‘ভোজভাজি’ বন্ধ করতে হবে

রোজার আগে ১ মার্চ যখন বোতলজাত ১ লিটার সয়াবিনের দাম ১০ টাকা কমিয়ে ১৬৩ টাকা করা হয়, তখন ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ৮০০ টাকা। ভ্যাটছাড়ের এই মেয়াদ শেষ হয়েছে ১৫ এপ্রিল। ওই সময় আন্তর্জাতিক বাজারে পাম তেলের দাম ওঠানামার মধ্যে থাকায় দাম নির্ধারণ করা হয়নি।

রোজা সামনে রেখে মিলমালিকদের এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছিলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। তবে শুল্ক প্রত্যাহারের মেয়াদ শেষের দিন গত সোমবার ফের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। শুল্ক অব্যাহতির মেয়াদ শেষে একদিকে মিলমালিকরা ভোজ্য তেলের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে, অন্যদিকে এতে আপত্তি জানালেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী। গত মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, মিলমালিকদের এভাবে দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই। ‘ভোজ্য তেলের মূল্য ভ্যাট অব্যাহতি পূর্ববর্তী মূল্যে ফিরে যাওয়া প্রসঙ্গে’ শিরোনামে অ্যাসোসিয়েশনের ওই চিঠিতে বলা হয়, শুল্ক অব্যাহতির বিষয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারি জারি করা এসআরওর মেয়াদ ১৫ এপ্রিল শেষ হচ্ছে বিধায় ১৬ এপ্রিল থেকে পাম তেল ও সয়াবিন তেল ভ্যাট অব্যাহতির আগের মূল্যে সরবরাহ করা হবে। ফলে এক লিটার বোতলের সয়াবিন তেল ১৭৩, ৫ লিটারের বোতল ৮৪৫ এবং ১ লিটার খোলা পাম তেল ১৩২ টাকায় বিক্রি হবে। তবে বাজারে নতুন মোড়কের বোতলজাত সয়াবিন আসেনি, এমন অজুহাত দেখিয়ে অনেক বিক্রেতাই সাধারণ ক্রেতাদের কাছ থেকে আগের দামই নিয়েছে।

বিভিন্ন অজুহাতে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর বিষয়টি বহুল আলোচিত এবং বাজার সংস্কৃতিরই অংশ। যে পণ্যের দাম একবার বাড়ে, তা আর কখনোই আগের দামে ফিরে যায় না। মনে রাখতে হবে, এর চাপ পড়ছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষের ওপরই। দেশের সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বর্তমানে স্বল্প আয়ের মানুষ এমনিতেই পরিবারের সব ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। দরিদ্র পরিবারের অনেকে ঋণ করে ব্যয় মেটাতে বাধ্য হচ্ছে। যদি তেল, চালসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়, তাহলে সীমিত ও দরিদ্র পরিবারে কী দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়, তা সহজেই অনুমান করা যায়। এই দুর্ভোগ দীর্ঘ সময় চললে এর অনিবার্য পরিণতি হিসেবে দরিদ্র পরিবারের সদস্যরা পুষ্টিহীনতায় ভোগে, অনেক পরিবারের শিশুদের শিক্ষাজীবনের অবসান ঘটে। ভোক্তারা নিত্যপণ্য কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। অনেকেই খরচ কমাতে অনেক পণ্য কাটছাঁট করছেন। কাজেই তেল-চালসহ নিত্যপণ্যের বাজারে যেন অস্থিরতা সৃষ্টি না হয়, সে জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রতি বছর ভোজ্য তেল আমদানিবাবদ বিপুল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়। এ ক্ষেত্রে সয়াবিন তেলের অন্যতম বিকল্প হিসেবে সরিষার চাষাবাদ জনপ্রিয় করার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। কৃষকপর্যায়ে স্বল্পসুদে ঋণ বিতরণ করলে একদিকে কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন, অন্যদিকে সরিষা চাষেও তারা উৎসাহিত হবেন। এতে ভোজ্য তেলে আমদানিনির্ভরতা কমবে। আমরা মনে করি, এসব বিষয় নিয়ে এখনই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ভাবা উচিত।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close