reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

কর্মস্থলে ফেরা হোক স্বস্তিদায়ক

ঈদের ছুটিতে কর্মব্যস্ত মানুষ মাটির টানে গ্রামে ছুটে যায়, স্বজনদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়। শিল্পায়ন ও প্রযুক্তির বিকাশেও গ্রামের সঙ্গে তাদের আত্মিক সম্পর্কটি এখনো অটুট ও অম্লান রয়ে গেছে। এটি আমাদের সামাজিক সংহতিকেও সুদৃঢ় করে। বছরের অন্যান্য সময়ে ছুটিছাঁটা তেমন পাওয়া যায় না বলেই ঈদের সময় অনেক বেশি মানুষ শহর থেকে গ্রামে যায়। তবে মাত্র কয়েক দিনের ছুটিতে বাড়ি যেতে বিরম্বনাও কম হয় না। ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরতেও থাকে সেই একই ঝক্কি।

ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। এবার ঈদের ছুটির সঙ্গে ছিল পহেলা বৈশাখের ছুটিও। তাই ছুটি এক দিন বেড়েছে। গতকাল থেকে অফিস-আদালতসহ অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান খুলে গেছে। তাই অনেকেই ইতিমধ্যে ঢাকায় এসেছেন। বিভিন্ন গণপরিবহনে দেখা গেছে রাজধানীমুখো মানুষের ভিড়। ধারণা করা যায়, সপ্তাহ জুড়ে এই ধারা অব্যাহত থাকবে। কারণ ঈদ ও বৈশাখের ছুটির সঙ্গে অতিরিক্ত ছুটিও নিয়েছেন অনেকে। তারাও ক্রমান্বয়ে ঢাকায় ফিরবেন। অন্যবারের তুলনায় এবার যেভাবে স্বস্তি নিয়ে মানুষ ঘরে ফিরেছেন, ঠিক তেমনি কর্মস্থলে ফিরতেও ততটা বেগ পেতে হবে না বলে আমাদের বিশ্বাস। আজ থেকে ট্রেন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে ফিরতি মানুষের ভিড় বাড়বে। এ সময়টা বিশেষ নজরদারি দরকার। বছরে দুটি ঈদ মুসলমানদের জীবনে সবচেয়ে বড় উৎসব। কর্মসংস্থানের প্রয়োজনে যে যেখানেই থাকুক না কেন, দুটি ঈদে অন্তত তারা নিজ নিজ পরিবার ও স্বজনদের কাছে ফিরে যান। এবার ঈদযাত্রায় বাড়তি মানুষের চাপ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যার ফলে স্বস্তিদায়ক ছিল এবারের ঈদযাত্রা।

বলা সংগত, ঈদের ছুটিতে ঢাকা ছেড়ে মানুষ গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার সুযোগে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির ঘটনা ঘটে থাকে। তা ছাড়া তৎপর থাকে মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টিও। এবার সেই অপরাধী চক্রের তৎপরতা বেশ কমই ছিল বলা যায়। এ ধরনের ঘটনা রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেশ তৎপর ছিল। সেদিক থেকেও এবার ঈদ উদযাপনে স্বস্তি ছিল বলা যায়। আমরা আশা করব, উৎসব উদযাপন শেষে কর্মস্থলে ফেরা যেন বিষাদে পরিণত হবে না। এ সময়টাতে যানবাহন চালকরা বাড়তি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবেন। একই সঙ্গে যাত্রীসাধারণকেও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে অযথা ঝুঁকি নিয়ে যানবাহনে না ওঠাই ভালো। সড়ক-মহাসড়কে অনেক যানবাহনকে প্রতিযোগিতা করে চলাচল করতে দেখা গেছে। কিন্তু একে অন্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে গিয়ে অনেক সময় দুর্ঘটনার মুখে পড়তে হয়। এ ধরনের হটকারিতা যাতে কেউ না করেন সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। কেননা সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। একটি দুর্ঘটনা মানেই সারা জীবনের কান্না। সুতরাং চালক ও যাত্রী সবাইকেই এ ক্ষেত্রে ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে। আর এ ব্যাপারে ট্রাফিক পুলিশ বা হাইওয়ে পুলিশকেও সক্রিয় হতে হবে।

ঈদে ঘরে ফেরার পালায় সড়ক ও নৌপথে ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে সরকার যে সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে তা কর্মস্থলে ফেরার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখতে হবে। ঈদে ঘরে ফেরার মতো কর্মস্থলেও যেন সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে-নিরাপদে ফিরতে পারেন, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাই সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন- এমনটিই প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close