মো. খাদেমুল ইসলাম

  ০৫ ডিসেম্বর, ২০২২

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়

স্বাধীন বাংলাদেশে স্থাপিত প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। ২২ নভেম্বর ১৯৭৯ সালে দেশের ষষ্ঠ বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৭৫ একরের ক্যাম্পাসটি কুষ্টিয়া শহর থেকে ২৪ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং ঝিনাইদহ শহর থেকে ২২ কিলোমিটার উত্তরে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশে শান্তিডাঙ্গা-দুলালপুর নামক স্থানে অবস্থিত।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আটটি অনুষদ রয়েছে। এর অধীনে ৩৬টি বিভাগে ১৬ হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি, ব্যবসা প্রশাসন, সামাজিক বিজ্ঞান এবং মানবিক ও কলা অনুষদীয় বিভিন্ন বিষয়ে পাঠদান করা হয়। পাশাপাশি দেশে শুধু এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতেই ধর্মতত্ত্ব ও ইসলামী আইনের ওপর স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়। শুরুর দিকে বিশ্ববিদ্যালয়টি আর্থিকভাবে ইসলামী সম্মেলন সংস্থার সাহায্যে পরিচালিত হয়ে আসলেও বর্তমানে এটি বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে।

দেশের ৫৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠার দিক দিয়ে পঞ্চম বিশ্ববিদ্যালয় এটি। স্বাধীনতার আগে ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৫৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৬৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্বিবদ্যালয় ও ১৯৭০ সালে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনেই রয়েছে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরাল’, যেটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও ক্যাম্পাসগুলোর মধ্যে সর্ববৃহৎ ম্যুরাল। তার পাশেই রয়েছে মুক্তবাংলা। যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নতুন প্রজন্মের মনে চির জাগরুক রাখতে নির্মিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম স্মারক ভাস্কর্য ‘মুক্তবাংলা’। এখানে রয়েছে আয়তনের দিক থেকে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহীদ মিনার ও ক্যাম্পাসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বৃহত্তম শহীদ মিনার। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের সম্মান ও স্মৃতি স্মরণার্থে নির্মিত করা হয়েছে শহীদ স্মৃতিসৌধ। দেশের তৃতীয় বৃহত্তম ও ক্যাম্পাসগুলোর মধ্যে সর্ববৃহৎ মসজিদ এখানেই অবস্থিত। এছাড়াও এখানে রয়েছে বিভিন্ন স্থাপত্য-স্থাপনা।

সবুজ ক্যাম্পাস হিসেবে খ্যাত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে যেকোনো দর্শনার্থীই বিমোহিত হয়ে যাবে। চারদিকের সবুজের সমারোহ, সাজানো-গোছানো এবং শহরের কোলাহলমুক্ত পরিবেশ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার প্রতি মনোযোগী করে তোলে। এখানে রয়েছে মফিজ লেক, ওয়াচ টাওয়ার, সুরভি উদ্যান, বটতলা, ডায়না চত্বর, পাখি চত্বর এবং প্যারাডাইস রোড। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের শরীরচর্চার জন্য জিমনেসিয়াম, চিকিৎসার জন্য চিকিৎসা কেন্দ্র, খেলাধুলার জন্য ক্রিকেট ও ফুটবল মাঠ।

এখানে ছয়টি একাডেমিক ভবনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়। ছেলে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে পাঁচটি আবাসিক হল এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে তিনটি আবাসিক হল। এছাড়াও ছেলে শিক্ষার্থীদের জন্য দুটি এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য দুটি হলের নির্মাণকাজ চলছে। শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এক দিন দেশের সীমানা পেরিয়ে সুনাম কুড়াবে বিশ্বে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close