আশিকুর রহমান

  ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে লোকপ্রশাসন দিবস উদযাপন

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের এক যুগপূর্তি উপলক্ষে প্রথম লোকপ্রশাসন দিবস উদযাপন করা হয়েছে। আনন্দ শোভাযাত্রা, স্মরণিকা প্রকাশ ও আলোচনা সভার মধ্যদিয়ে দিবসটি উদযাপন করা হয়েছে।

দিবসের শুরুতে বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা করা হয়। শোভাযাত্রাটি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে গাহি সাম্যের গান মঞ্চে গিয়ে শেষ হয়। বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা শোভাযাত্রায় অংশ নেন।

এরপর সকাল সাড়ে ১১টায় ‘গাহি সাম্যের গান মঞ্চে’ ‘Enhancing Knowledge on Digital Governance and Innovation in the age of 4IR’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার উদ্বোধন করেন ময়মনসিংহ সিটি করপপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু। তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব হলো আধুনিক ও স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রচলিত উৎপাদন এবং শিল্প ব্যবস্থার স্বয়ংক্রিয়করণের একটি চলমান প্রক্রিয়া। একটি অন্তর্ভুূক্তিমূলক, মানবিক ভবিষ্যৎ তৈরির জন্য বাংলাদেশ সরকার সরকার, শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি নাগরিক সমাজের সবাইকে কাজ করতে হবে।

লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। সভায় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, টেকনোলজিক্যাল যে রেভ্যুলেশন ঘটেছে এটি আমরা আমাদের এই দেশ গঠনে কীভাবে কাজে লাগাতে পারি, কীভাবে সম্পৃক্ত করতে পারি সেটি আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে প্রশাসন ও পরিচালনা এই দুটোকে সম্পৃক্ত করে যদি দক্ষ জনবল যদি গঠন করা না যায় তাহলে আমরা প্ল্যাটফরমের সেই যাত্রীর মতো রয়ে যাব যেই যাত্রী ট্রেনের শেষ যাত্রী উঠতে পারে না। আমরা সেটা হতে চাই না।

প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, আমরা ওই সুপার হাইওয়েতে রিজার্ভেশন করা কামরাতে আমাদের সিটকে কনফার্ম করতে চাই। আমাদের দেশকে কনফার্ম করে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। এক্ষেত্রে এই বিভাগ গত ১২ বছর ধরে যে দক্ষ জনশক্তি আমাদের দেশকে তারা দিয়েছে আমি মনে করি তারা এরপরে আরো আরো যুগোপযোগী করে তাদের সিলেবাস ও কারিকুলামকে ডেভেলপ করবে।

মোটিভেশনাল স্পিকার হিসেবে বক্তব্য রাখেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের এসপায়ার টু ইনোভাইট প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর। তিনি বলেন, স্বনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, দেশীয় উদ্ভাবন ও সুশাসন হবে মূল চাবিকাঠি। যুগোপযোগি একটি প্রতিপাদ্যের উপর দিবসটি উদযাপিত হলো। আমি বিশ্বাস করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষকগণ তাদের মেধা, সৃজনশীলতা, কর্মদক্ষতা ও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উৎকর্ষতাকে কাজে লাগিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবেন।

সভায় প্রধা বক্তা হিসেবে সমসাময়িক ও প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. নাসিম বানু।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম, রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার মুখার্জী, ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সহযোগী অধ্যাপক শাহজাদা আহসান হাবীব। উপস্থাপনায় ছিলেন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. হারুনুর রশিদ।

দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে বিভাগের উদ্যোগে ‘পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডে-২০২২’ নামক স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গাহি সাম্যের গান মঞ্চে আয়োজিত লোকপ্রশাসন দিবস বিষয়ক আলোচনা সভার অতিথিবৃন্দ পুস্তিকাটির মোড়ক উন্মোচন করেন। বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক আজিজুর রহমানের সম্পাদনায় এবং শিক্ষার্থী মোঃ আশিকুর রহমান সৈকতের সহযোগী সম্পাদনায় পুস্তিকাটি প্রকাশ করা হয়। বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন লেখা ও স্মৃতিচারণা প্রকাশ করা হয়েছে স্মরণিকাটিতে।

সম্পাদক আজিজুর রহমান জানান, আমাদের প্রাণাধিক প্রিয় বিভাগের এক যুগ পূর্তিতে বিভাগের সকল শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সবাইকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। যারা বাণী ও লেখা দিয়ে আমাদের প্রকাশিত বইটিকে সমৃদ্ধ করেছেন, তাদের সবাইকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। অতি অল্প সময়ে স্মরণিকা প্রকাশে এবং লেখাগুলোর পরিমার্জন, পরিশোধন, ম্দ্রুণ-প্রমাদ দূরীকরণের কাজে সহযোগিতার জন্য সম্পাদনা সহযোগীকে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, আমি জেনে খুবই খুশি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগ সফলতার সঙ্গে এক যুগ পূর্ণ করেছে। আমি এক যুগ পূর্তি উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকার সম্পাদক, সম্পাদনা সহযোগীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে বিভাগের সর্বাঙ্গীন সমৃদ্ধি ও সাফল্য কামনা করছি।

স্মরণিকা প্রকাশে সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য বিভাগের পক্ষ থেকে বিভাগের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও স্মরণিকার সম্পাদনা সহযোগী মো. আশিকুর রহমান সৈকতকে বিভাগের পক্ষ থেকে বিশেষ সন্মাননা প্রদান করা হয়।

এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত বিভাগের তিন শিক্ষার্থী সাবিহা আক্তার, আফরোজা ইসলাম লিপি ও তানজিল আহমেদ এবং বিভাগের প্রথম শিক্ষার্থী হিসেবে বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করা সহকারী অধ্যাপক নাজমুল হাসানকে বিভাগের পক্ষ থেকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close