নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৬ জানুয়ারি, ২০২৪

ইউনাইটেড হাসপাতাল বন্ধ

খাতনার জন্য অজ্ঞান করার পর শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় বন্ধ হয়ে গেল রাজধানীর সাতারকুলের ইউনাইটেড হাসপাতাল। হাসপাতালে যেসব রোগী ভর্তি ছিল তাদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। গত রবিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসানের সই করা আদেশে বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল হাসপাতালটি। গতকাল সোমবার হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা আরিফুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, জরুরি ও বহির্বিভাগে কোনো রোগী চিকৎসা দেওয়া হয়নি।

আরিফুল হক বলেন, আমরা সাঁতারকুল শাখার সব কার্যক্রম বন্ধ রেখেছি। জরুরি ও বহির্বিভাগে কোনো রোগী চিকৎসা দেওয়া হচ্ছে না। হাসপাতালে যেসব রোগী ভর্তি ছিল তারা সবাই সুস্থ হওয়ার পথে ছিল, তাই তাদের রিলিজ দেওয়া হয়েছে। রোগীদের অন্য কোথাও স্থানান্তর করা হয়নি। তবে নিবন্ধনের বিষয়ে আরিফুল হক বলেন, নিবন্ধনের জন্য করা আবেদনটি যে ত্রুটিযুক্ত এ বিষয়ে কোনো চিঠি বা নোটিস আমাদের আগে থেকে দেয়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আমরা গণমাধ্যমে চিঠির একটা কপি দেখেছি। আমরা অফিশিয়ালি চিঠিটা এখনো রিসিভ করিনি। পেলে পরবর্তী যে নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আরিফুল হক আরো বলেন, আমরা আবেদন করেছিলাম ইউনাইটেড হেলথকেয়ার সার্ভিসেস লিমিটেড নামে। আমাদের প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল। কিন্তু নিবন্ধনের অ্যাপ্লিকেশন করেছিলাম ইউনাইটেড হেলথকেয়ার সার্ভিসেস লিমিটেড নামে। সেটি আমাদের মাদার কোম্পানি। সেক্ষেত্রে গণমাধ্যমে ডিজি হেলথ থেকে এখন বলছে এটি ত্রুটিপূর্ণ। আমরা যদি জানতাম এটা ত্রুটিপূর্ণ তাহলে অবশ্যই আমরা ত্রুটি ঠিক করার জন্য ব্যবস্থা নিতাম। যেহেতু স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আমাদের রেগুলেটরি বডি সেহেতু তাদের সব নির্দেশনা আমরা মেনে চলব। ত্রুটির বিষয়টা সবার প্রথম গণমাধ্যমে এসেছে, তারপর আমাদের কাছে চিঠি এসেছে। সংশোধনের জন্য অবশ্যই আমরা কাজ করব।

এমন অবস্থায় কী বন্ধ থাকবে স্বাস্থ্যসেবা বা শিক্ষা কার্যক্রম- এমন প্রশ্নের জবাবে আরিফুল হক বলেন, মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল যেহেতু সে কারণে মেডিকেল কলেজের স্টুডেন্টদের ব্যবহারিক ক্লাস হতো। পাশাপাশি এলাকার লোকজন ওপিডি, আইপিডি ও ইমার্জেন্সি সেবাটা গ্রহণ করত। অবশ্যই আমরা সব প্রস্তুতি নিয়ে অপারেশন রান করার জন্য যা যা করার তাই করব।

গত ৩১ ডিসেম্বর খতনার জন্য শিশু আয়ান আহমেদকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। অজ্ঞান করে খাতনা করার পর আর শিশুটির চেতনা না ফেরায় তাকে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে পিআইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। সেখানে গত ৭ জানুয়ারি মারা যায় আয়ান। ওই ঘটনায় দেশজুড়ে নানা সমালোচনা তৈরি হয়। শিশু সন্তানের এমন মৃত্যুর ঘটনায় আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ বাড্ডা থানায় মামলা করেন। মামলায় আসামি করা হয় হাসপাতালের অ্যানেস্থিওলজিস্ট সাইদ সাব্বির আহমেদ, সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক তাসনুভা মাহজাবিন অজ্ঞাতনামা পরিচালকসহ কয়েকজনকে।

এই ঘটনায় গত মঙ্গলবার হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ। এতে শিশু আয়ানের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশনা চেয়েছিলেন ওই আইনজীবী। এছাড়া ওই চিকিৎসকদের গ্রেপ্তারসহ ছয় দফা দাবিতে গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে মানববন্ধন করেন আয়ানের স্বজন ও এলাকার বাসিন্দারা। আর শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে কেন ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে গত সোমবার রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close