প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

তোশাখানা মামলায় স্ত্রী বুশরাসহ ইমরানের ১৪ বছরের জেল

আলোচিত তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে ১৪ বছর কারাবাসের সাজা এবং ৭৮ কোটি ৭০ লাখ রুপি জরিমানা করেছেন পাকিস্তানের একটি আদালত। গতকাল বুধবার এই রায় ঘোষণা করেন ইসলামাবাদের জবাবদিহি আদালত (অ্যাকাউন্টিবিলিটি কোর্ট)। রায়ে জেল-জরিমানা ঘোষণার পাশাপাশি ইমরান খানকে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ১০ বছরের নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বেলা ১০টার দিকে জবাবদিহি আদালতের বিচারক মোহাম্মদ বশির এই রায় দেন।

আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পার্লামেন্ট নির্বাচন হবে পাকিস্তানে। পুলিশি অভিযান ও মামলায় দিশেহারা ইমরানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচার চালাতে গিয়ে পদে পদে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) ও আদালতের নিষেদ্ধাজ্ঞার কারণে নির্বাচনে দলের প্রতীক ক্রিকেট ব্যাটও ব্যবহার করতে পারছেন না তারা। এই পরিস্থিতির মধ্যেই এ রায় এলো। এর মধ্যে আগের দিন মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্যফাঁসের (সাইফার) মামলায় ইমরান খান এবং তার দল পিটিআইয়ের সহসভাপতি শাহ মেহমুদ কুরেশিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন পাকিস্তানের একটি বিশেষ আদালত।

দুর্নীতি, রাজনৈতিক দাঙ্গায় উসকানি, সামরিক বাহিনীর স্থাপনায় হামলাসহ কয়েক ডজন মামলার আসামি ইমরান খান বর্তমানে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের আদিয়ালা কারাগারে বন্দি আছেন। দেশটির জাতীয় দৈনিক ডন জানিয়েছে, মঙ্গলবার সেই কারাগার চত্বরেই বসেছিল জবাবদিহি আদালতের এজলাস।

তোশাখানা মামলা : গত শতকের সত্তরের দশকে পাকিস্তানের সরকারি একটি বিভাগ হিসেবে তোশাখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই বিভাগটি প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, আইনপ্রণেতা, সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান ও অন্য বিশিষ্টজনদের দেওয়া উপহার জমা রাখে।

আইন অনুযায়ী পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী, আইনপ্রণেতা বা সরকারের পদস্থ কর্মকর্তাদের পাওয়া সব উপহার অবশ্যই এই বিভাগে জমা দিতে হবে। যারা এসব উপহার পেয়েছেন, পরে তারা সেগুলো সরকার নির্ধারিত মূল্যে কিনে নিতে পারবেন। সেই মূল্যের পরিমাণ খুব বেশি নয়। তোশাখানা থেকে উপহার কেনার পর তা বাইরে বিক্রি করে দেওয়া অবৈধ নয়, তবে পাকিস্তানে একে অনেকেই অনৈতিক বা নীতিগতভাবে ভুল মনে করেন।

ইমরান খানের বিরুদ্ধে তোশাখানা দুর্নীতি-সংক্রান্ত বিতর্ক শুরু হয় ২০২১ সালে। পরে ২০২২ সালের আগস্টে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনে এ ইস্যুতে লিখিত অভিযোগ জমা দেন পাকিস্তান মুসলিম লীগ নওয়াজের (পিএমএলএন) সদস্য মোহসিন নওয়াজ রানঝা। অভিযোগে বলা হয়, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকার সময় বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধান এবং সরকারি কর্মকর্তা-ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ৫৮টি দামি উপহার পেয়েছিলেন ইমরান খান, কিন্তু সবগুলো তিনি তোশাখানায় জমা দেননি এবং যেসব উপহার জমা দিয়েছেন, সেগুলো সরকারের বেঁধে দেওয়া মূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে কিনেছেন এবং বাইরে বিক্রি করে দিয়েছেন। বাইরে বিক্রি করা উপহারগুলোর মধ্যে কিছু দামি হাতঘড়িও রয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close