বগুড়া প্রতিনিধি

  ১০ মে, ২০২৪

বগুড়ায় অর্ধলাখ খামারে প্রস্তুত ৭ লাখ পশু 

ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ব্যস্ত সময় পার করছেন বগুড়ার প্রায় অর্ধলাখ খামারি। হাট-বাজারে পশু বিক্রি করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিগত বছরগুলোতে ভালো দাম পাওয়ায় পশু পালনে আগ্রহ বেড়েছে খামারিদের। খামারি যেমন বেড়েছে তেমনি বেড়েছে কোরবানির পশু। গ্রামের পাশাপাশি শহরেও গরু লালন পালন হচ্ছে সমানতালে। এবার গো-খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে পশুপালনে খরচ বেড়েছে, এতে করে কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ার শঙ্কা খামারিদের। এদিকে, বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সহায়তা প্রদান করায় খামারিসহ গবাদি পশুর উৎপাদন বেড়েছে, উৎপাদন মূল্য সহনীয় রাখতে বেশি করে ঘাস চাষের পরামর্শ দিচ্ছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

জানা গেছে, কোরবানিকে ঘিরেই প্রতি বছরের মতো এবারো বগুড়ার খামারিরা বিদেশি জাতসহ দেশি জাতের গরু লালন পালন করেছে। প্রাকৃতিক খাদ্য দিয়েই আমেরিকার ব্রাহমা ক্রস, ভারতীয় শাহীওয়াল, নেপালের গিরসহ দেশীয় জাতের গরু ছাগল পালন করে এখন ভালো দামের প্রত্যাশা করছেন খামারিরা। প্রতিবছরই ঈদ এলে গরু বিক্রি করে বাড়তি আয় করেন তারা। ছোট-বড় খামারের পাশাপাশি ঈদকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজা করে থাকেন প্রান্তিক খামারিরা। গ্রামের পাশাপাশি শহরের বসতবাড়িতেও ১ থেকে ১০টি পর্যন্ত গরু পালন হচ্ছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, কোরবানির জন্য জেলায় ৪৮ হাজার ৪৫৩ জন খামারি ৭ লাখ ৩৪ হাজার ৪৫১টি পশু প্রস্তুত করেছেন। গত বছর ছিল ৭ লাখ ২৬ হাজার ৪৯৫টি। প্রস্তুতকৃত পশুর সাথে এবার বেড়েছে কুরবানির পশুর চাহিদা। জেলায় এবার কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে ৭ লাখ ৩৪ হাজার ৪১৫টি। যা গত বছরের তুলনায় ৮ হাজার বেশি। কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে গরু ২ লাখ ৭০ হাজার ৪১ টি, ছাগল ৪ লাখ ২২ হাজার ৬৫৭টি, ভেড়া ও গারল ৩৯ হাজার ৮৫১টি এবং মহিষ ২ হাজার ২৬৬টি। এসব পশু এবার বগুড়া জেলায় চাহিদা পূরণ করেও ২৯ হাজার ১৫৫টি উদ্বৃত্ত থাকবে।


  • বগুড়ায় অর্ধলাখ খামারির মধ্যে ৯৫ ভাগ প্রান্তিক
  • বগুড়ায় চাহিদা পূরণের পর উদ্বৃত্ত থাকবে ২৯ হাজার ১৫৫ পশু
  • শহরের বসতবাড়িতেও পালিত হচ্ছে ১ থেকে ১০টি পর্যন্ত গরু

তবে গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় খরচ বেড়েছে, হাট-বাজারে দাম পাওয়া নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া খামারিদের মধ্যে। বগুড়া শহরের ফুলবাড়ি এলাকার আরাফাত ইসলাম জানান, এক বছর বয়সী বাছুর কিনে লালন পালন করে ওজন প্রায় ২০ মণ। এখন গরুর বয়স সাড়ে তিন বছর। গরু লালন পালনে অনেক খরচ হয়েছে, ভালো দাম পাবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।

একই এলাকার স্বপন প্রামানিক বলেন, প্রতি বছর আমি ঈদ উপলক্ষে গরু পালন করে থাকি। গত বছর ভালই দাম পেয়েছিলাম। এবারও প্রত্যাশা করছি ভালো দাম পাবো। যদি দাম সেভাবে না পাই তাহলে গরু পালনের সংখ্যা কমিয়ে দিতে হবে। কাহালুর খামারি তৌহিদ পারভেজ বিপ্লব বলেন, গত তিন বছর খামারে লাভবান হলেও এবছর খাবারসহ বৈদুতিক বিল বেড়ে যাওয়ায় খরচ বেড়েছে। গত বছর প্রতিটি গরুতে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা প্রতি মাসে খরচ হলেও এবছর গরু প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা খরচ বেড়েছে বলে লোকসানের শঙ্কায় রয়েছে এই খামারি।

অতিরিক্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নাছরীন পারভীন বলেন, জেলায় অর্ধলাখ খামারির মধ্যে ৯৫ ভাগ প্রান্তিক। গ্রামে ও শহরের খামারিদের পাশাপাশি বড় খামারগুলোতে কোরবানির পশু লালন পালন হচ্ছে। খামারিদের বিভিন্নভাবে সহায়তা প্রদান করায় খামারি ও পশুর সংখ্যা বেড়েছে। এছাড়া খামারে উৎপাদন মূল্য সহনীয় রাখতে ঘাস চাষ ও গরুর খাবার হিসেবে ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।

পিডিএস/জেডকে

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বগুড়া,পশু,খামার,কোরবানি
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close