প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০৬ ডিসেম্বর, ২০২২

জেগে উঠেছে মাউন্ট সেমেরু জ্বালামুখে উত্তপ্ত ছাই

* ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বিস্তীর্ণ এলাকা * জাভা দ্বীপে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি * লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে

ইন্দোনেশিয়ার সক্রিয় আগ্নেয়গিরি মাউন্ট সেমেরুর জ্বালামুখ দিয়ে উত্তপ্ত ছাই বেরিয়ে আকাশ ছেয়ে যাচ্ছে। দেশটির প্রধান দ্বীপ জাভায় আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

যার অর্থ পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে। যেকোনো সময় উত্তপ্ত লাভা উদগীরণ শুরু হতে পারে আশঙ্কায় মাউন্ট সেমেরুর আশপাশের গ্রাম থেকে প্রায় দুই হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এছাড়া জনগণকে পর্বতটি থেকে অন্তত আট কিলোমিটার দূরত্ব বজায় রাখার অনুরোধ করা হয়েছে। সতর্কতার মাত্রা তিন থেকে চারে উন্নীত করার অর্থ অগ্ন্যুৎপাতে বিস্তীর্ণ এলাকা ও লোকজনের বাড়িঘরও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

মাউন্ট সেমেরুতে আগেরবার উদগীরণের কারণে একটি সেতু মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেই সেতু পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে বলে জানায় স্থানীয় প্রশাসন।

জ্বালামুখ থেকে বেরিয়ে আসা ছাই বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে আশপাশের গ্রাম কাদায় ঢেকে দিচ্ছে। অন্তত ছয়টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান কর্মকর্তারা। সেখানকার ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, আকাশ কালো হয়ে গেছে। বিপুল পরিমাণ ছাইয়ের মেঘ সূর্য ঢেকে দিয়েছে। ইস্ট জাভা প্রদেশে অবস্থিত মাউন্ট সেমেরু থেকে স্থানীয় সময় শনিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুর ২টা ৪৬ মিনিট থেকে উদগীরণ শুরু হয়।

প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের ‘রিং অব ফায়ার’ এ ইন্দোনেশিয়ার অবস্থান। যেখানে টেকটোনিক প্লেটগুলো ক্রমাগত ঘঁষা খাচ্ছে। ফলে দেশটিতে নিয়মিত আগ্নেয়গিরি থেকে উদগীরণ হতে দেখা যায়। ভূমিকম্পও খুব নিয়মিত ঘটে।

সেমেরু পর্বতটি ‘দ্য গ্রেট মাউন্টেন’ নামেও পরিচিত। এটা জাভার সবচেয়ে উঁচু এবং সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরির একটি। এটি ঠিক এক বছর আগে সর্বশেষ সক্রিয় হয়ে উঠেছিল। যাতে অন্তত ৫০ জন নিহত হন। এবার আগ্নেয়গিরিটি সক্রিয় হওয়ার আগে জাভায় কয়েক দফা ভূমিকম্প হয়েছে। সর্বশেষ গত মাসে ভূমিকম্পে ৩০০-এর বেশি মানুষ নিহত হন।

আগ্নেয়গিরি এবং ভূতাত্ত্বিক দুর্যোগ প্রশমন কেন্দ্র (পিভিএমকেজি)-এর মুখপাত্র হেন্দ্রা গুনওয়ান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মাউন্ট সেমেরু জেগে ওঠায় এবং অগ্ন্যুৎপাত শুরু হওয়ার ফলে আবার বিপদের মুখোমুখি হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ভয়ের আবহ তৈরি হচ্ছে। অন্য

দিকে, জাপানের আবহাওয়া দপ্তরের আশঙ্কা মিয়াকো এবং ইয়েইমা দ্বীপে সুনামি হতে পারে। স্থানীয় সময়ও দেওয়া হয়। যদিও সেই সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরে বিপর্যয়ের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

মাউন্ট সুমেরুর উচ্চতা ৩ হাজার ৬৭৬ মিটার। ইন্দোনেশিয়ায় সক্রিয় ১৩০টি আগ্নেয়গিরির মধ্যে এটি একটি। এখানে বারবার অগ্ন্যুৎপাতের ইতিহাস রয়েছে। সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত ঘটে ১৯০৯ সালের ২৯ অগস্ট। সে বার প্রায় ৮০০ হেক্টর কৃষিজমি ধ্বংস হয়ে যায়। অগ্ন্যুৎপাতের ফলে মৃত্যু হয় অন্তত ২০০ জনের। তারপরও অগ্ন্যুৎপাত ঘটেছে। তবে তা সহনীয় পর্যায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close