প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৪ আগস্ট, ২০২২

রাশিয়ার ৪৩২০০ সেনা হত্যার দাবি ইউক্রেনের

ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর দাবি, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া চলমান যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৪৩ হাজারেরও বেশি রুশ সৈন্যকে হত্যা করেছে তারা এবং আক্রমণকারী বাহিনীটি বৃহস্পতিবার যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশটির পূর্ব দোনেৎস্ক অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি হতাহতের শিকার হয়েছে।

শুক্রবার এক টেলিগ্রাম ও ফেসবুক বার্তায় এ দাবি করেছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। খবর আনাদোলু এজেন্সির।

দোনেৎস্কে হতাহতের সুনির্দিষ্ট বিবরণ না দিয়ে, ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফ ফেসবুকে বলেছেন, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়ার পর থেকে যুদ্ধ প্রায় ৪৩ হাজার ২০০ রুশ সেনা নিহত হয়েছে।

ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর দেয়া সর্বশেষ আপডেট অনুসারে, ইউক্রেনীয় বাহিনী রাশিয়ার ২৩৩টি বিমান, ১৯৩টি হেলিকপ্টার, ১ হাজার ৮৪৯টি ট্যাঙ্ক, ৪ হাজার ১০৮টি সাঁজোয়া যান, ৭৭৮টি মনুষ্যবিহীন আকাশযান, ৩ হাজার ২১টি যানবাহন এবং জ্বালানি ট্যাঙ্ক এবং ১৫টি যুদ্ধজাহাজ এবং বোট ধ্বংস করেছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, তারা রুশ বাহিনীর ৯৭৫টি আর্টিলারি সিস্টেম, ২৬১টি একাধিক রকেট লঞ্চার সিস্টেম, ১৩৬টি অ্যান্টি-এয়ারক্র্যাফট ওয়ারফেয়ার সিস্টেম এবং ৯০টি বিশেষ সরঞ্জাম ধ্বংস করেছে।

বড় ধরনের পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখোমুখি ইউক্রেন : বড় ধরনের পরিবেশ বিপর্যয়ের হুমকিতে যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেন। দেশটির বিশাল এলাকাজুড়ে পড়ে আছে হাজারো অবিস্ফোরিত মাইন এবং গোলা-বারুদ। রাসায়নিকের কারণে দূষিত হচ্ছে বাতাসও।

এরই মধ্যে মাইন অপসারণের কাজ শুরু করেছে ইউক্রেন। তবে দেশটির আশঙ্কা, পরিস্থিতি আগের মতো করতে অন্তত সাত বছর সময় লাগতে পারে।

পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে আগ্রাসন চালাচ্ছে রাশিয়া। কিছু স্থানে রুশ আগ্রাসনের তাণ্ডব থামলেও এখনো রয়ে গেছে যুদ্ধের ক্ষতচিহ্ন। জল কিংবা স্থল সর্বত্রই পড়ে আছে অবিস্ফোরিত মাইন, গোলা-বারুদ, দূষিত হয়েছে বাতাসও। এমন পরিস্থিতিতে পরিবেশ বিপর্যয়ের শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

ইউক্রেনের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ সোফিয়া সাদগুরস্কা বলেন, শুধু মাইনই নয়; বোমা আর রকেট হামলার কারণেও এলাকাগুলো দূষিত হয়েছে। অতীত যুদ্ধগুলোর ইতিহাস বলছে, যুদ্ধের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্তি পেতে দশকের পর দশক লেগে যায়। অনেক জায়গাই এখন বসবাসের অনুপযুক্ত।

জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সামি অঞ্চল। এ অঞ্চলের প্রায় অর্ধেকই দূষণের শিকার। এছাড়া রাজধানী কিয়েভের অনেক এলাকাই এখন বসবাসের অযোগ্য।

ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডেনিস মোনাস্টিরেস্কি বলেন, যুদ্ধে সামি শহর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই শহরের ৪৭ শতাংশ এলাকাই দূষিত। অর্থাৎ শহরটির অর্ধেকই দূষণের শিকার। অন্যদিকে, দূষিত হয়েছে কিয়েভের ২৫ শতাংশ এলাকা।

ইউক্রেনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে মাইন, গোলাবারুদ অপসারণে ৮৯ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্যাকেজ অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকেই, যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটিতে শুরু হয়েছে ডিমাইনিং কার্যক্রম। কর্তৃপক্ষ বলছে, এ কাজের জন্য প্রয়োজন অন্তত সাত বছর। মাইন অপসারণ করা একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এজন্য আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। ধারণা করছি, এ কাজে আমাদের কমপক্ষে ৭ বছর সময় লাগবে। অন্যান্য স্থানের তুলনায় পানি থেকে মাইন অপসারণ কঠিন।

তিনি আরো বলেন, ইউক্রেনের ২৭ শতাংশ এলাকা থেকে মাইন অপসারণ প্রয়োজন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে দেশটির ৬৭ হাজার হেক্টরের বেশি এলাকা থেকে ১ লাখ ৭৫ হাজার যুদ্ধ সরঞ্জাম অপসারণ করা হয়েছে।

ইউক্রেনের শস্যবাহী জাহাজ পৌঁছাল ইতালিতে : পাঁচ মাস পর ইউক্রেনের শস্যবাহী জাহাজ পৌঁছালো ইতালিতে। শুক্রবার (১২ আগস্ট) দেশটির রাভেনা বন্দরে নোঙর করে জাহাজটি।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জাহাজটিতে ১৩ হাজার টন খাদ্যশস্য রয়েছে। ইতালি বন্দরে জাহাজটিকে স্বাগত জানান দেশটিতে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত। তুরস্ক এবং জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় চুক্তি স্বাক্ষরের পর গেল দুই সপ্তাহে এখনো পর্যন্ত ১৪টি শস্যবাহী জাহাজ কিয়েভ বন্দর ছেড়ে গেছে।

রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাতের জেরে গেল ফেব্রুয়ারি থেকে রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় বিশ্বের অন্যতম শস্য জোগানদাতা দেশটির। ফলে আটকে পড়ে গত বছরের প্রায় ২ কোটি টন শস্য। চলতি বছরেও একই পরিমাণ খাদ্যশস্য উৎপাদন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close